অ্যালোপ্যাথি ✿ হোমিওপ্যাথি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা :- প্রথমেই আমি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এবং এর খরচের কথা বলবো। অনেক গবেষণার পর ফেনাস্টেরাইড আর মিনোক্সিডিল নামের দুটো ওষুধ চুল গজানোর জন্য ব্যবহার করা হতো। দুটি ওষুধের-ই সাইড ইফেক্ট আছে (ফেনাস্টেরাইড ছেলেদের পুরুষত্বহীন করে তুলে, আবার মিনোক্সিডিল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাজ করছে না আর দীর্ঘ দিন ব্যবহারে রয়েছে অনেক ঝুঁকি)। এই কারণে আধুনিক ডাক্তাররা এই গুলির পরিবর্তে PRP থেরাপি দিয়ে থাকেন যদিও বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গেছে চুলের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই মাত্র ২০-৩০% লোকের ক্ষেত্রে কাজ করে। আপনাকে ২/৩ মাস বা ৪/৫ পর পর PRP থেরাপি নিয়ে যেতে হবে। তবে এই চিকিৎসা বলতে গেলে সব শ্রেণীর মানুষেরই হাতের নাগালের মধ্যে। আপনি যদি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিতে চান এক্ষেত্রে ডাক্তার আপনাকে রেফার করবেন - ✿ ঔষধ - যা আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খেতে হবে। ✿ দরকার হলে বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য কিছু ঔষধ ✿ পি আর পি থেরাপি (Platelet-Rich Plasma (PRP)) এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ✿ আপনার লাইফস্টাইল নিয়ে কিছু পরামর্শ। PRP ( Platelet Rich Plasma ): রক্তের Platelet বা অণুচক্রিকা আছে চুলের মধ্যে, আছে বিভিন্ন ধরনের growth Factor যা, নতুন চুল গজায় ও চুল মোটা করে। ডাক্তারের পরামর্শে আপনার শরীর থেকে সামান্য একটু রক্ত নিয়ে মেশিনের সাহায্যে রক্তের Platelet Rich Plasma(PRP) আলাদা করা হয় ও মাথার স্কিনে চিকন Insulin Syringe দিয়ে ইনজেকসন হিসাবে দেয়া হয়। ইনজেকসন দেয়ার আগে ঐ স্থানটি অবশ করে নেয়া হয় । এবার আসুন জেনে নিই এর উপকারীতা গুলি কি কি - ➤ চুল পড়া বন্ধ করে । ➤ নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। ➤ চুলের বৃদ্ধিতে ও চুল মোটা হতে সাহায্য করে । ➤ PRP চুল পড়া রোগীর নিজের রক্ত থেকে তৈরী করা হয় বলে এটিকে নিরাপদ বলে থাকেন ডাক্তাররা। পার্শপ্রতিক্রিয়া কি হতে পারে এখান থেকে দেখে নিন >>> Side Effect। ➤ PRP একটি দীর্ঘ মেয়াদি প্রক্রিয়া (৮-১২ মাস), পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ম মেনে শেষ না করলে রেজাল্ট পাওয়া কঠিন। চিকিৎসা শুরুর আগে মেশিন দিয়ে চুলের শিকড় বা Root intact আছে কি না তা পরীক্ষা করে নেয়া হয়। আগেই জেনে রাখুন - ডাক্তাররা আপনাকে যাই বলুক না কেন, বাস্তবতা হলো PRP মাত্র ২০-৩০% লোকের ক্ষেত্রে কাজ করে। প্রথমে ডাক্তাররা আপনাকে তেমন কিছুই বলবে না। এমনকি এর রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি সম্পর্কেও কিছু বলবে না। কিন্তু যখনই আপনি ৬ টি বা ৮টি PRP নিবেন অর্থাৎ শেষ করবেন তখন তারা আপনাকে সই করার জন্য একটি কাগজ ধরিয়ে দিবে। যাতে লেখা থাকবে এর যাবতীয় সাইড এফেক্টস, রিস্ক ফ্যাক্টরগুলি জেনেই আপনি PRP নিযেছেন। তাই বুঝেশুনে এই চিকিৎসা নিবে হবে আপনাকেও। আজকাল আপনি ভালো এবং উঁচু লেভেলের কোন ডার্মাটোলজিস্ট বা চুলের ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি আপনাকে PRP বাধ্যতামূলক ভাবে গ্রহণ করতে বলবেন। অর্থাৎ এটা ছাড়া আপনার চিকিৎসা পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে না। এবার আসুন এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরো কিছু জেনে নিই। আপনি যেমনটি ভাবছেন ৮-১২ মাসের মধ্যেই আপনার চুল আবার আগের মতো হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি মাত্র ২০-৩০% মানুষের ক্ষেত্রে ফল দেয়। তবে যাদের ক্ষেত্রে ফল দিচ্ছে তারাও যদি PRP নেয়া বন্ধ করে দেয় কয়েকমাস পর থেকেই আবার আপনার চুল পড়া শুরু হবে এবং মাথা টাক হওয়ার দিকে এগুবে। তাই আপনাকে ৪/৫ মাস অন্তর একবার করে PRP নিতে হবে সারা জীবন ধরেই। এবার আসুন অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসায় এক্ষেত্রে আপনার কেমন খরচ হতে পারে সেদিকে আলোকপাত করা যাক- ➤ একবার ডাক্তারের ফি দিচ্ছেন খরচ যাচ্ছে ৮০০/১০০০ টাকা ➤ ঔষধ এর জন্য আপনার প্রতি মাসে খরচ যাচ্ছে ২০০০/৩০০০ টাকা ➤ PRP এর জন্য আপনার প্রতি মাসে খরচ যাচ্ছে ৪০০০/৫০০০ টাকা ➤ আপনাকে টানা ৮ মাস চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে আর চিকিৎসা-কালীন সময়ে প্রতি মাসে আপনার আনুমানিক ৬০০০/৭০০০ টাকা খরচ হতে পারে। এখানে সমস্যার তীব্রতাভেদে খরচ ১/২ হাজার টাকা কম বা বেশি হতে পারে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা : অনেকে হয়তো হোমিওপ্যাথি নামটি শুনেই নাক ছিটকাচ্ছেন ! আমাদের দেশের বাস্তবতায় এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে আপনি জানেন কি এক্ষেত্রে অ্যালোপ্যাথির চেয়ে হোমিওপ্যাথি কয়েকটি দিকে এগিয়ে আছে। ➤ নির্দিষ্ট সময় পর আর ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। ➤ অর্থাৎ স্থায়ী। ➤ খরচ অনেকটাই কম তবে চুলের জন্য হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নেয়ার আগে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে হবে - এই যেমন ডাক্তার অভিজ্ঞ এবং রেজিস্টার্ড কিনা অর্থাৎ স্বীকৃত কোনো হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করা কিনা। ডাক্তার যে ঔষধ/মেডিসিন দিচ্ছেন সেটা অরিজিনাল জার্মানীর কিনা। কারণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডাক্তার ভালো হওয়া সত্ত্বেও ঔষধ ভেজাল হওয়ার কারণে অনেক রোগই ভালো হয় না। তাই আপনি যদি নিজের নির্বাচনে কোন হোমিও দোকান থেকে ঔষধ কিনতে যান সেক্ষেত্রে নির্ভেজাল ঔষধ পাওয়ার সম্ভবনা মাত্র ৩০% . তাই ডাক্তার যেভাবে দেন সেভাবে নেয়াটাই আপনার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। তবে একটি বিষয় জেনে রাখা ভালো বংশগত কারণে যদি আপনার চুল পড়ে এবং টাক রোগে আক্রান্ত হন সেক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি আপনার কোন উপকার করতে পারবে না। এবার আসুন আপনার চুলপড়া রোগে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে আলোকপাত করি। আগেই বলেছি এক্ষেত্রে অ্যালোপ্যাথির তুলনায় খরচ অনেক কম এবং এর ফলাফল দীর্ঘস্থায়ী। ➤ ডাক্তার আপনাকে কিছু ঔষধ দিবেন যা আপনাকে নিয়মিত খেয়ে যেতে হবে ➤ এ ক্ষেত্রে ঔষধের খরচ পড়তে পারে মাসে মাত্র ১৫০০/১৬০০ টাকা। ➤ তবে এর সাথে যদি আপনি অন্য কোনো চর্ম রোগে আক্রান্ত থাকেন তাহলে হয়তো খরচ কিছুটা বাড়তে পারে। তখন হয়তো সব মিলিয়ে মাসে ২০০০/২২০০ টাকা খরচ পড়বে। ➤ এক্ষেত্রেও আপনাকে চিকিৎসা নিতে হবে টানা ৬/৮ মাস তবে এটি একটি পার্মানেন্ট চিকিৎসা। একবার ভালো হলে গেলে আপনাকে বার বার ঔষধ খেতে হবে না। আপনারা যারা কম খরচের মধ্যে চুল পড়া রোগের চিকিৎসা নিতে চান তাদের জন্য আনন্দের বিষয় হলো এ ক্ষেত্রে ডাক্তার হাসানের (ফোন: +৮৮ ০১৭২৭-৩৮২৬৭১) সাকসেস রেট ৯০%. তিনি নিজেই বলেন ১০% রোগীর ক্ষেত্রে নানা কারণে ঔষধ কাজ করছে না। সতরাং আমরা যদি চুলের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অ্যালোপ্যাথি আর হোমিওপ্যাথির তুলনা করি তাহলে দেখবো হোমিওপ্যাথি এক্ষেত্রে অনেক কম খরচে অনেক বেশি এবং স্থায়ী ফলাফল দিচ্ছে আপনাকে। তবে হোমিওপ্যাথি বংশগত চুল পড়া রোগের ক্ষেত্রে আপনার কোন উপকার করতে না পারলেও অ্যালোপ্যাথির দ্বারা আপনি সব ক্ষেত্রেই উপকৃত হতে পারেন। এর জন্য আপনাকে অভিজ্ঞ একজন ডার্মাটোলজিস্টের তত্বাবধানে চিকিৎসা নিতে হবে। তবে আপনি অ্যালোপ্যাথি বা হোমিওপ্যাথি যে ট্রিটমেন্টই নিন না কেন আপনাকে অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে কারণ নতুন চুল গজাতে এবং বাড়তেও একটা সময়ের প্রয়োজন সেটা আপনি নিজেও বুঝতে পারছেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ