আমার রোগটি আমার মামার ছিলো। তার জন্ম ১৯৭০ সালে। 

 তিনি বর্তমানে বেচে নেই।

আমার মামার রোগটি ছিলো এরকম যে, শরীরের কোথাও একটু কেটে গেলে রক্ত পরা বন্ধ হতো না আর শরীরের কোথাও আঘাত পেলে তা সারাতে অনেক সময় লেগে যেত।

স্বাভাবিক ভাবে মানুষ খেলাধুলা বা কাজ করলে, একটু আধটু ব্যথা পেয়ে থাকে, ঔষধ খেলেও সারে বা না খেলেও সে ব্যথা সারে। কিন্তু আমার মামার ক্ষেত্রে ছিলো ব্যতিক্রম।

মামা একটু ব্যথা পেলেই সেই স্থানে অনেক ফুলে যেত,ব্যথা করতো। ঔষধ খেলেও, কোন উপশম হতো না। আবার রোগটা কিছুদিন পর এমনিতেই কমে যায়, ঔষধ না খেলেও।

মামাকে অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে, কোন ডাক্তার কিছু করতে পারে নি। 

তবে মামার বয়স যখন ১৫-১৬ বছর তখন, ঢাকা মেডিকেল এর এক ডাক্তার বলেছিলেন এই রোগের চিকিৎসা বের হয়নি।

 এই রোগের প্রভাব, তার উপর পড়বে  যে আমার মামার ভাগ্নে হবে। মানে মামার আপন বোনের ছেলে সন্তানের হবে এই অসুখ।

 কিন্তু ভাগ্নির হবে না।

এমনকি নিজের সন্তানেরও হবে না, এই অসুখ।


সত্তিই তাই, আমি আমার মামার বড় ভাগ্নে, জন্মের পর থেকে আমারো মামার মত অসুখ, আমার ছোট ভাইটিরও। তবে আমার ছোট বোনের এই অসুখ নেই, এমনকি আমার খালাতো বোনেরও নেই। মামা বিয়ে করছিলেন, তার সন্তানের এই অসুখ হয়নি।

আমার মামার ভাগ্নে আমি তাই আমার হয়েছে ।

আমার বোনের ছেলে সন্তান আমার ভাগ্নে হবে, তারও এই রোগ হবে।


এখন আমার বয়স ১৮ বছর।


আমারও মামার মতই অসুখ।

একটু ব্যথা পেলেই ফুলে যায়,আর বেশ কয়েকদিন ব্যথা থাকে।

ঔষধ খেলে কিছু হয়না।

ঔষধ খেলে বা না খেলেও কয়েকদিন পর ব্যথা কমে যায়, পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে যাই,ব্যথা থাকেনা। 


বর্তমানে প্রযুক্তির কারনে চিকিৎসা বিজ্ঞানের অনেক উন্নতি হয়েছে। তাই আমার এই জন্মগত রোগের চিকিৎসা নিশ্চয় আবিষ্কৃত হয়েছে। তাই জানতে চাচ্ছি কোথায় গেলে এই রোগ হতে আরগ্য পাবো।

দয়া করে বলবেন প্লিজ।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

এই রোগের নাম হিমোফিলিয়া । যাকে bleeding disorder বলা হয় । এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির রক্তে ১৩ টি ক্লোটিং ফ্যাক্টরের মধ্য ৮ অথবা ৯ নং ফ্যাক্টরের অভাব । এর কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই । নিয়মিত ফ্যাক্টর, প্লাজম, রক্তগ্রহন করতে হয় । আমার এই সাইটের যে পোফাইল পিকচার দেখছেন সেটা এই *হিমোফিলিয়ার* রোগের আর্ন্তজাতিক প্রতীক । আমার নাম দেখে বুঝতে পারছেন আমিও এই রোগে আক্রান্ত । আপনি আমার সাথে যোগাযোগ করলে আপনাকে অনেক হেল্প তথা*হিমোফিলিয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশের* পক্ষ থেকে বিনামূল্য ফ্যাক্টরের ব্যাবস্থা করতে পারব । আমি এই রোগটি নিয়ে কাজ করছি । আমার হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর সদস্য নং ৭১৭ । প্লিজ আমার সাথে যোগাযোগ করেন ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Unknown

Call

হিমোফিলিয়ার স্থায়ী চিকিৎসা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। Hemophilia A-এর ক্ষেত্রে Factor VIII এবং Hemophilia B-এর ক্ষেত্রে Factor IX গ্রহণ করে কিছুদিন সুস্থ থাকা যায়। জিন থেরাপির মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।



যাই হোক, আমি আপনাকে হিমোফিলিয়ার জেনেটিক ইনহেরিটেন্স সম্পর্কে কিছু ধারনা দিচ্ছি যাতে ভবিষ্যতে সচেতন হতে পারেন-

আপনার নানা-নানী সুস্থ ছিলেন। কিন্তু নানী ছিলেন হিমোফিলিয়া জিনের বাহক।

নানা (XY) + নানি (XX)     *বাহক জিন।

তাদের পরবর্তী প্রজন্মে চার ধরনের সন্তান হতে পারে-

সুস্থ ছেলে (XY), সুস্থ মেয়ে (XX), আক্রান্ত ছেলে (XY), বাহক মেয়ে (XX)

এখানে আপনার মামা আক্রান্ত হন আর তার বোন অর্থাৎ আপনার মা হন বাহক।

আপনার বাবা সুস্থ ছিলেন। 

বাবা (XY) + মা (XX)

সুস্থ ছেলে (XY), সুস্থ মেয়ে (XX), আক্রান্ত ছেলে (XY), বাহক মেয়ে (XX)

দুর্ভাগ্যবশত আপনাদের দুই ভাইয়ের জিনোটাইপই XY, অর্থাৎ আপনারা হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত।

আপনি যদি কোনো সুস্থ মেয়েকে বিয়ে করেন, তাহলে আপনার সন্তানসন্ততির জিনোটাইপ হবে-

সুস্থ ছেলে (XY), সুস্থ ছেলে (XY), বাহক মেয়ে (XX), বাহক মেয়ে (XX)

অর্থাৎ আপনার ছেলে সন্তানেরা হবে সম্পূর্ণ সুস্থ, মেয়েরা হবে বাহক।


---এখানে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে কোনো ক্ষেত্রেই আক্রান্ত মেয়ে নেই। এর কারন হলো, জিনগত রোগ ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অনেক কম হয়। একটি মেয়ের হিমোফিলিয়া তখনই হবে যখন তার বাবা হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত এবং মা ও হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত অথবা এর বাহক হন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ