walton primo nx4 এর সম্পর্কে এর সুবিধাগুলো এবং এর অসুবিধা গুলো কী কী জানতে চাই ?
Share with your friends
Call

সাশ্রয়ী বাজেটে দারুণ সব ফিচারসম্পন্ন ফোনের সাথে দেশীয় বাজারের ক্রেতাদের পরিচয় ঘটাতে দেশীয় স্মার্টফোন বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন বরাবরই অগ্রগণ্য। এরই ধারাবাহিকতায় তাদের নতুন সংযোজন Walton Primo NX4; ৬৪ বিট চিপসেট ও ২.২ গিগাহার্টজ গতির অক্টাকোর প্রসেসরসমৃদ্ধ এই ফোনের নানা আকর্ষণীয় ফিচারের মধ্যে ৩ গিগাবাইট র্যাম, ৩২ গিগাবাইট রম, ১৩ মেগাপিক্সেলের রেয়ার ক্যামেরা, ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। মাত্র ১৩৯৯০ টাকা মূল্যের এই ফোনে থাকা ৩১০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার লিথিয়াম-পলিমার ব্যাটারির কথা আলাদাভাবে না বললেই নয়। এই ফোনের আরেকটি বিশেষত্ব হলো এতে আছে Extreme Power Saving Mode, যা ব্যবহার করে আপনি মাত্র ১০% চার্জ নিয়েও বেশ কয়েকঘন্টা অনায়াসেই ফোনটি চালাতে পারবেন। ওয়ালটনের নতুন স্মার্টফোন Primo NX4 এর বিল্ড কোয়ালিটি, ইউজার ইন্টারফেস, ব্যাটারি ব্যাকআপ, গেমিং পারফরম্যান্স, বেঞ্চমার্ক স্কোর, ক্যামেরা পারফরম্যান্স প্রভৃতির বিশ্লেষণধর্মী তথ্য নিয়ে আজকের আয়োজন Walton Primo NX4+ এর Exclusive Hands-on Review রিভিউয়ের শুরুতে একনজরে Primo NX4 এর উল্লেখযোগ্য ফিচারসমূহ দেখে নিন- অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ মার্শম্যালো অপারেটিং সিস্টেম গরিলা গ্লাস ৩ সমৃদ্ধ ৫.৫ ইঞ্চি আইপিএস ডিসপ্লে ২.২ গিগাহার্টজ গতির অক্টাকোর প্রসেসর ৩ গিগাবাইট র্যাম ১৩ মেগাপিক্সেলের রেয়ার ক্যামেরা ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামে ওটিজি সাপোর্ট ৩১০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম-পলিমার ব্যাটারি বিস্তারিত রিভিউ শুরু করবো Primo NX4 এর Unboxing দিয়ে- আনবক্সিং: Primo NX4 কেনার পর আপনি এর সাথে যা যা পাবেন- চার্জার অ্যাডাপ্টার ডাটা ক্যাবল ইয়ারফোন ইউজার ম্যানুয়াল ওয়ারেন্টি কার্ড অপারেটিং সিস্টেম: Primo NX4 ফোনটিতে অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ মার্শম্যালো ব্যবহার করা হয়েছে। বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইনঃ প্রিমো NX4 ফোনটির বিল্ড কোয়ালিটি ও ডিজাইন দুটোই বেশ চমৎকার। প্রথম দেখাতেই আপনি কার্ভ ডিজাইনের এই ফোনের প্রেমে পড়ে যাবেন। এর উপরের অংশে আছে ৩.৫ মিলিমিটার অডিও পোর্ট আর নিচের অংশে রয়েছে ইউএসবি পোর্ট। Primo NX4 এর ভলিউম কী ও পাওয়ার কী উভয়ই একপার্শ্বে দেওয়া হয়েছে। এই ফোনের পেছনের দিকে উপরের অংশে আছে রেয়ার ক্যামেরার লেন্স ও ফ্ল্যাশলাইট আর এর নিচেই রয়েছে ওয়ালটনের লোগো ফোনটির সামনের দিকে আছে ফ্রন্ট ক্যামেরা, সেন্সর প্রভৃতি। এর পাশাপাশি অন্যান্য ফোনের ন্যায় এই ফোনেও হোম/মেনু, অপশন ও ব্যাক – এই তিনটি বাটন রয়েছে। ১৫৪ মিলিমিটার উচ্চতার এই ফোনটি প্রস্থে ৭৬.৮ মিলিমিটার আর এর পুরুত্ব মাত্র ৮.৮ মিলিমিটার। এই ফোনের ওজন ব্যাটারিসহ ১৭৯ গ্রাম। ডিসপ্লে: এই ফোনে ৫.৫ ইঞ্চির আইপিএস ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে, আর এর ডিসপ্লের রেজ্যুলেশন হলো ১২৮০x৭২০ পিক্সেল। ইউজার ইন্টারফেস: ওয়ালটনের Primo NX4 ফোনটিতে কাস্টোমাইজড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে এই ফোনে কোন আলাদা অ্যাপ ড্রয়ার নেই। চলুন তাহলে এবারে এই ফোনটির ইউজার ইন্টারফেস দেখে নিই- এছাড়া এই ফোনে বিভিন্ন ধরণের থিম ব্যবহারের সুবিধাও রয়েছে: সিপিউ, চিপসেট ও জিপিউ: Walton Primo NX4 এ মিডিয়াটেকের ৬৪ বিট চিপসেট MT6595 ব্যবহৃত হয়েছে আর সিপিউ হিসেবে এই ফোনে রয়েছে ২.২ গিগাহার্টজ গতির অক্টাকোর প্রসেসর, ফলে এই ফোনে মাল্টিটাস্কিং, এইচডি গেমিং প্রভৃতি বেশ স্মুথলি করতে পারবেন। চিপসেটের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই ফোনে PowerVR G6200 জিপিউ ব্যবহৃত হয়েছে। স্টোরেজ সুবিধা: Primo NX4 ফোনটিতে ৩২ গিগাবাইট ইন্টারনাল মেমোরীর পাশাপাশি আছে ১২৮ গিগাবাইট পর্যন্ত এক্সটারনাল মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহারের সুবিধা। এছাড়া এতে OTG সুবিধা থাকায় এতে পেনড্রাইভ, এক্সটারনাল হার্ডডিস্কসহ বিভিন্ন ধরণের ইউএসবি ড্রাইভ ব্যবহার করার সুযোগ তো থাকছেই! র্যাম: এই ফোনে থাকা ৩ গিগাবাইট র্যামের মধ্যে বুট আপের পর ২ গিগাবাইট ফাঁকা ছিলো। ক্যামেরা: Primo NX4 এর ১৩ মেগাপিক্সেল রেয়ার ক্যামেরার কথা বিশেষভাবে বলতেই হয়। এতে প্রফেশনাল ক্যামেরা মুড থাকায় আপনি অনায়াসেই বেশ ভালো ছবি তুলতে পারবেন। আর সেইসাথে BSI সেন্সর, অটোফোকাস, টাচ ফোকাস, ডিজিটাল জুম, সেলফ-টাইমার প্রভৃতি ফিচার তো থাকছেই। চলুন Primo NX4 এর ক্যামেরা ইন্টারফেস ও সেটিংস এর স্ক্রীনশট দেখে নেওয়া যাক– Primo NX4 এর ক্যামেরায় তোলা ছবিঃ BSI সেন্সরযুক্ত ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরার কল্যাণে সেলফি-প্রেমীদের নিকট এই ফোন আলাদা গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আমার বিশ্বাস। এর ফ্রন্ট ক্যামেরায় টাচফোকাস, সেলফ টাইমার, স্মার্ট সিন, ফেসবিউটি প্রভৃতি আকর্ষণীয় ফিচার রয়েছে। দেখে নিন Primo NX4 এ তোলা সেলফি- মাল্টিমিডিয়া: Primo NX4 এ DTS মিউজিক সিস্টেম থাকার কারণে এর অডিও সাউন্ড কোয়ালিটি দারুণ। আর ৩.৫ মিলিমিটারের অডিও জ্যাকসম্পন্ন এই ফোনের সাথে যে হেডফোনটি দেওয়া হয় তার সাউন্ড কোয়ালিটিও ভালো লাগার মতো। এই ফোনে আরো আছে এফএম রেডিও, সে সাথে থাকছে এফএম রেডিও রেকর্ডার। ফলে আপনি আপনার পছন্দের কোন রেডিও প্রোগ্রাম অনায়াসেই রেকর্ড করতে পারবেন। এবার আসা যাক ভিডিওর কথায়। অক্টাকোর প্রসেসরের এই ফোনে ১০৮০ পি ফুল এইচডি ভিডিও কোন ধরণের ল্যাগ ছাড়াই চলেছে। গেমিং পারফরম্যান্স: তরুণ প্রজন্মের স্মার্টফোন কেনার পেছনে গেমিংয়ের উদ্দেশ্যটাই মূখ্য ভূমিকা পালন করে। সেদিক থেকে ২.২ গিগাহার্টজ গতির অক্টাকোর প্রসেসরসমৃদ্ধ Primo NX4 এর গেমিং পারফরম্যান্স পছন্দসই। ৬৪বিট চিপসেট ও ৩ গিগাবাইট র্যামবিশিষ্ট এই ফোনে বিভিন্ন ধরণের এইচডি গেম বেশ স্মুথলি খেলা যায়। এই ফোনে নিড ফর স্পিড, গ্র্যান্ড থেফট অটো, হিরোস অব ৭১, ক্ল্যাশ রয়্যাল, অ্যাসফাল্ট ৮, ফিফা ১৬ প্রভৃতি জনপ্রিয় গেম কোন ধরণের ল্যাগিং ছাড়াই খেলা গেছে। সেন্সর: ওয়ালটনের এই ফোনে অ্যাক্সিলেরোমিটার, লাইট, প্রক্সিমিটি প্রভৃতি সেন্সর রয়েছে। সিম: ডুয়েল সিম সুবিধার Primo NX4 এর উভয় স্লটেই মাইক্রো-সিম ব্যবহার করতে হয়। রং: সোনালী ও নীল - এই ২ রংয়ে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে Walton Primo NX4 কানেক্টিভিটি: এই ফোনে ফোরজি সুবিধার পাশাপাশি ব্লুটুথ ৪.০, ওয়াইফাই, ওয়্যারলেস হটস্পট প্রভৃতি কানেক্টিভিটি সুবিধা রয়েছে। আরও আছে জিপিএস, এ-জিপিএস, ডিজিটাল কম্পাস প্রভৃতি সুবিধা। স্পেশাল ফিচার: এই ফোনের যেসব ফিচারকে স্পেশাল মনে হয়েছে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- স্মার্ট জেশ্চার, সাসপেন্ড বাটন, প্রফেশনাল ক্যামেরা মুড, এক্সট্রিম পাওয়ার সেভিং মুড প্রভৃতি। OTA আপডেট সুবিধা: এই ফোনে OTA বা Over The Air আপডেট সুবিধা রয়েছে, যার ফলে পিসির সাথে সংযুক্ত করা ছাড়াই এর সফটওয়্যার আপডেট করা যাবে। ব্যাটারি: অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ব্যবহারকারীরা সাধারণত অধিকাংশ সময়ই ব্যাটারি ব্যাকআপ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ভুগেন, তাদের কথা মাথায় রেখেই হয়তো ওয়ালটন তাদের Primo NX4 ফোনটিতে ৩১০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম-পলিমার ব্যাটারি ব্যবহার করেছে। ৫.৫ ইঞ্চি ডিসপ্লের এই ফোনে ফুল চার্জ দিয়ে টানা ৫ ঘন্টা ইন্টারনেট ব্রাউজ ও এইচডি ভিডিও উপভোগ করার পর এর চার্জ ৪৩% এ নেমে এসেছিলো। তবে স্বাভাবিক ব্যবহারে অনায়াসেই একদিন চালিয়ে নিতে পারবেন। আর এই ফোনে থাকা Extreme Power Saving Mode ব্যবহার করে আপনি মাত্র ১০% চার্জ নিয়েও বেশ কয়েকঘন্টা ফোনটি চালাতে পারবেন। ওটিজি: ওয়ালটনের নতুন এই ফোনে রয়েছে OTG (USB On The Go) সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারী এতে মাউস, কীবোর্ড, পেনড্রাইভ, এক্সটারনাল হার্ডডিস্কসহ বিভিন্ন ধরণের ইউএসবি ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবেন। বেঞ্চমার্ক: Primo NX4 এর বেঞ্চমার্ক স্কোর যাচাইয়ের জন্য বেঞ্চমার্ক যাচাইয়ের জনপ্রিয় অ্যাপ AnTuTu বেছে নেওয়া হয়েছিলো, যেখানে এর স্কোর এসেছে ৫৯২১২; GeekBench এ এর স্কোর এসেছে ১১০৪ (সিঙ্গেল-কোর) ও ৩৪৬৯ (মাল্টি-কোর)- বেঞ্চমার্ক যাচাইয়ের আরেক অ্যাপ NenaMark এ Primo NX4 এর স্কোর এসেছে ৫৯.২ মূল্য: নজরকাড়া ডিজাইন ও আকর্ষণীয় সব ফিচার দেখে নিশ্চয়ই ভাবছেন - Walton Primo NX4 এর দাম হয়তো বেশিই হবে ! কিন্তু না, ক্রেতাদের সাধ্যের কথা বিবেচনা করে Primo NX4 স্মার্টফোনটির মূল্য মাত্র ১৩৯৯০ টাকা নির্ধারণ করেছে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ। Primo NX4 এর ভালো লাগার দিকসমূহ- সাশ্রয়ী মূল্য ২.২ গিগাহার্টজ গতির অক্টাকোর প্রসেসর ৩ গিগাবাইট র্যাম ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামে DTS সাউন্ড সিস্টেম এক্সট্রিম পাওয়ার সেভিং মুড Primo NX4 এর সীমাবদ্ধতা: প্রযুক্তিজগতে কোন কিছুই হয়তো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় ! আর তাইতো Primo NX4 এ চমৎকার ডিজাইন ও দারুণ সব ফিচারের সমন্বয় ঘটলেও হালের জনপ্রিয় ফিচার ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর নেই, যার উপস্থিতি ফোনটির ষোলকলা পূর্ণ করতে পারতো! চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত: মধ্যম বাজেটে যারা ভালো ফ্রন্ট ক্যামেরাযুক্ত ফোন কিনতে চান, সেইসাথে চান দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ আর দ্রুতগতির প্রসেসর, তাদের জন্য Primo NX4 হতে পারে আদর্শ পছন্দ। বিশেষ করে ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা, ৩১০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি, ফোরজি সুবিধা প্রভৃতি ফিচার মধ্যম বাজেটের Walton Primo NX4 কে অনন্যতা দান করছে। যারা অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে অধিক ফিচারের ফোন কিনতে চান তাদের জন্য এক আস্থার নাম ওয়ালটন। ভবিষ্যতে Primo NX4 এর মতো আকর্ষণীয় ফোন আরও কমমূল্যে বাজারে এনে নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করবে ওয়ালটন- এমনটাই প্রত্যাশা।

Talk Doctor Online in Bissoy App