চাঁদ থেকে পৃথিবীতে ফিরতে হলে চাঁদের মাটি থেকে উপরের দিকে উঠতে হবে। কেনো? এর সহজ ব্যাখ্যা হলো— পৃথিবীতে বসে চাঁদকে আমরা মাথার ওপরে বিস্তীর্ণ আকাশে ভেসে বেড়াতে দেখি, তাই চাঁদে যাওয়ার সময় নভোচারীদের মহাকাশযান নিয়ে উপর দিকেই উঠতে হয়। আবার চাঁদে মাটেতে পা রাখার পর নবোচারীরা পৃথিবীকে মাথার উপরে চাঁদের আকাশে ভেসে থাকতে দেখবেন। তাই সেখান থেকে পৃথিবীতে ফিরতে হলে আমাদের ওপর দিকে উঠতে হবে। কেন উপরের দিকে উঠতে নিচের দিকে নামতে হবে না একটা ব্যাপার খেয়াল করলেই তা পরিষ্কার হয়ে যায়। চন্দ্র পৃষ্ঠ কি বায়বীয়? অবশ্যই তা নয়। বরং পাথর দিয়ে তৈরি চাঁদের মাটি আমাদের পৃথিবীর চেয়ে কম শক্ত নয়— সেই মাটি খুড়ে নিচের দিকে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া চাঁদের মাটিতে দাঁড়িয়ে নভোচারী পৃথিবীকে মাথার ওপরেই। আসলে ওপর-নিচটা আপেক্ষিক ব্যাপার। আমরা যখন যে পৃষ্ঠের ওপর দাঁড়াই সেই পৃষ্ঠতলকে নিচ ধরে নিই। অর্থাৎ পায়ের পাতার নিচের অবলম্বনকে ‘নিচ’ এবং মাথার উপরের কোনো বস্তুকে মনে হবে ওপর। সে চাঁদ হোক- সূর্যই হোক, আর আকাশ কিংবা ঘরে ছাদই হোক।
কে বলেছে উপরের দিকে যেতে হয়! যেতে হয় চাঁদের দিকে। কারণ আমরা আমাদের মাথার উপরের অংশকে 'উপর' বলি। ভাবুনতো নভোচারীরা যদি আমেরিকা থেকে তাদের মাথার উপরের দিকে উঠতে থাকে তখন তা আমাদের দেশ থেকে হয় নিশ্চয়ই নিচের দিকে! আবার কোথাও হয় তা পাশের দিকে। ঠিক চাঁদের বেলায়ও একই অবস্থা। এর এক প্রান্ত দিয়ে পৃথিবী উপরে হলেও অন্য প্রান্ত দিয়ে তা নিচের দিকে। কোন পাশ দিয়ে পাশের দিকে। সুতরাং আসার সময়ও আসতে হয় পৃথিবীর দিকে।