sheikh

Call

১৯৪৮ সালে মার্চ মাসে পাকিস্তানের গর্ভনর জেনারেল মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ
ঢাকায় আসেন এবং ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এক সভায় তিনি ঘোষণা দেন- “Urdu and only Urdu will be the state language of Pakistan.” এই ঘোষণা বাঙালিরা মেনে নিতে পারে নি। তার ঘোষণা সেদিন সভায় উপস্থিত জনতা প্রত্যাখ্যান করে। হাজার বছর পূর্বে এ দেশের মানুষ যে ভাষায় কথা বলে আসছে, সন্তান যে ভাষায় তার মাকে ডাকছে সেই ভাষাকে কেড়ে নেয়ার বিষয়টি বাঙালিরা নিজেদের জন্য অপমানজনক মনে করে এবং ভাষা আন্দোলনে যোগ দেয়। এরপর থেকে আস্তে আস্তে আন্দোলন আরও তীব্র ও গতিশীল হয়ে ওঠে। এরপর খাজা নাজিমুদ্দীনের শাসনামলে উর্দূকে রাষ্ট্রভাষা করার পুনঃপ্রচেষ্টা চলে। তখনও প্রতিবাদ হয়। বাঙালিরা
স্পষ্ট জানিয়ে দেয় বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না।
বাংলাই হবে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। এই দাবি গণ দাবিতে পরিণত হয়।
১৯৫২ সালে ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষার মর্যাদার দাবিতে দেশব্যাপী
ধর্মঘট ডাকা হয়। অন্যদিকে সরকার আন্দোলনকে থামিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত
হয়। ঐ দিন ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে সকল প্রকার সভা সমাবেশ ও মিছিল
নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। দাবি আদায়ে বাঙালি কোন ছাড় দিতে জানে না। যে কোন
মূল্যে প্রতিষ্ঠা করতে চায় নিজ দাবি। বাঙালির রক্তে মিশে আছে তিতুমীর,
হাজী শরীয়তুল্লাহ ও সূর্যসেনের মত সাহসী পুরুষদের দৃঢ় চেতনা ও মনোবল।
এদিকে দৃষ্টি রেখে, ২১ শে ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদী ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ
করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ খেকে ‘মাতৃভাষা বাংলা চাই’ শ্লগানে
মিছিল বের করে। পুলিশ নির্মমভাবে মিছিলের উপর গুলি বর্ষণ করে। মৃত্যুবরণ
করে বরকত, রফিক, সালাম, জব্বারসহ আরও অনেকে যাদের নাম জানা যায় নি। পুলিশ অনেক লাশ গুম করেছিল। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে আহত, নিহত ও বন্দীদের মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দেলন আরও তীব্রভাবে ত্বরান্বিত হয়। গর্জে ওঠে সমগ্র দেশের মানুষ। জনতার রোষে সরকারের ভীত নড়ে যায়। মায়ের ভাষা কেড়ে নেবার পরিণাম ভয়াবহ জেনে তৎকালীন সরকার বাংলাকে পূর্বপাকিস্তনের
রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৫৬ সালে বাংলাভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেল। রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হল ভাষার সম্মান। প্রতিবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি দিবসটি ভাষার জন্য আত্মাহুতি দেয়া শহীদদের স্মরণে পালিত হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ