শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

মানুষের কোন কিছু গণনা করার চেষ্টা থেকেই সংখ্যার জন্ম হয়েছে। গণনার বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ আঙ্গুল, কাঠি, নুড়ি পাথর, রশিতে গিরা দিয়ে, মাটিতে বা দেয়ালে দাগ কেটে গণনাকার্য সম্পাদন করেছে। এভাবে গণনা শিকার জন্য বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন, বর্ণ, সংখ্যা ইত্যাদির প্রচলন শুরু হয়। সংখ্যাসমূহ পাশাপাশি লিখে তা প্রকাশ করার যে পদ্ধতি তাকে বলে সংখ্যা পদ্ধতি। খ্রিস্টপূর্ব ৩৪০০ সালে হায়ারোগ্লিফিক্স (Hieroglyphs) চিহ্ন বা সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বপ্রথম গণনার কাজে লিখিত সংখ্যা বা চিহ্নের প্রচলন শুরু হয় বলে অনুমান করা হয়। এরপর শুরু হয় মেয়ান (Mayan) পদ্ধতি। তারা ব্যবহার করতো একটি ২০ ভিত্তিক সংখ্যা (vigesimal) এবং ৫ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। তাছাড়াও, প্রেক্লাসিক মায়া এবং তাদের প্রতিবেশীদের ৩৬ খৃষ্টাপূর্বাব্দের মধ্যে শূন্যের ধারণা স্বাধীনভাবে ক্রমবিকশিত করেছিল। খৃস্টপূর্ব ৩৪০০ সালে রোমানরা তাদের নিজস্ব বর্ণমালা ব্যবহার করে রোমান (Roman) সংখ্যা পদ্ধতি চালু করে। খৃস্টপূর্ব ৪০০০ সালের দিকে ভারতবর্ষে দশভিত্তিক সংখ্যার প্রচলন করে এবং আরবের পন্ডিতেরা তাদের এ পদ্ধতি ব্যাপক গবেষণা করে দশভিত্তিক সংখ্যা প্রকাশের কৌশল ও গণনার প্রবর্তন করে। পরবর্তীতে তা আরব থেকে ইউরোপ প্রবেশ করে। খৃস্টপূর্ব ৪০০ সালে গ্রিসে ২৭ টি গ্রিক এলফাবেট নিয়ে ১০ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি চালু হয়। প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদ পিংগালা (Pingala) শূন্য (“০”) আবিষ্কারের মাধ্যমে খৃস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে প্রথম বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির ধারণা দেন। সতের শতাব্দীতে গটফ্রেইড লিবনজ (Gottfried Leibniz) একটি আর্টিকেলে আধুনিক বাইনারি সংখ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেন। তিনি আধুনিক বাইনারি পদ্ধতির 0 ও 1 এর ব্যবহার করেন। প্রখ্যাত ইংরেজ গণিতবিদ জর্জ বুল (George Boole) ১৮৫৪ সালে সত্য এবং মিথ্যা এ দুই যুক্তি বা লজিকের উপর ভিত্তি করে বুলিয় বীজগণিত রচনা করেন। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হওয়ার পর বুলিয় বীজগণিতের সত্য এবং মিথ্যাকে বাইনারি ১ ও ০ দিয়ে পরিবর্তন করার মাধ্যমে কম্পিউটারে অঙ্ক কষার সমস্ত গাণিতিক সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হয়। ডিজিটাল ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির লজিক গেটে এ সংখ্যা পদ্ধতির ব্যাপক প্রয়োগ রয়েছে। তাছাড়া সকল আধুনিক কম্পিউটারে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ