মুখ ফুলে যাওয়া কি?
কোনো একদিন ঘুম থেকে উঠে আয়নায় মনে হচ্ছে মুখটা একটু ফোলা ফোলা। কিংবা কেউ হয়তো হঠাৎ বলে বসল, মুখটা ফোলা দেখাচ্ছে কেন? চিন্তার বিষয়ই বটে। মুখ ফুলে যাওয়া হল একটি উপসর্গ যা বিভিন্ন রোগ ও অবস্থার কারণে হয়—যার কয়েকটি তো জটিলই। আবার খুব সাধারণ কিছু কারণেও মুখমণ্ডল বা চেহারা ফুলতে পারে। তাই জানা উচিত কখন সতর্ক হবেন।
এ অবস্থায় মুখ ফোলা এবং প্রসরিত দেখায়। এটি কোনো পোকার কামড়ের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে, অথবা গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিসের মত কিডনির রোগের কারণে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
মুখ ফুলে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
মুখ ফুলে যাওয়ার কিছু সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হল:
- একনাগাড়ে চুলকানি হওয়া
- সবসময় মুখের উপরিভাবে টান অনুভব
- ফোলা ভাবের সঙ্গে লাল ভাব
- চোখ খুলতে ও বন্ধ করতে অসুবিধা হওয়া।
মুখ ফুলে যাওয়ার প্রধান কারণগুলি কি কি?
মুখ ফুলে যাওয়ার কিছু সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- অ্যালার্জিজনিত কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা
- প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার সময় গর্ভবতী মহিলাদের উচ্চ রক্তচাপ ও প্রোটিনের মাত্রার সমস্যা দেখা দেয়।
- সেলুলাইটিস যেখানে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক চামড়ার মধ্যের ফাটল এবং কাটার মাধ্যমে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে
- কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতির থেকে হওয়া অ্যালার্জি
- আমবাত
- খাবারের থেকে হওয়া অ্যালার্জি
- নাক ভাঙা, নাকের হাড় অথবা কার্টিলেজ ভেঙে গেলে, তার থেকে প্রায়ই মুখের উপর ফুলে ওঠে
- চোখের পাতায় অঞ্জনি
- অপুষ্টিজনিত কারণে প্রোটিনের ঘাটতি
- কিডনির অসুখের কারণে প্রোটিনের মাত্রা কমে যাওয়া
- অস্ত্রোপচারের পরের প্রতিক্রিয়া
- থাইরয়েডের সমস্যায় চেহারা ফোলা দেখাতে পারে।
- হৃদ্রোগীদেরও চেহারা ফুলতে পারে। সঙ্গে থাকতে পারে শ্বাসকষ্ট।
- অনেক সময় ঘুম না হলে বা অনেক বেশি সময় ধরে ঘুমালে বা দীর্ঘ যাত্রার পর মুখ ফুলতে পারে। এগুলো সাময়িক ব্যাপার এবং ভয়ের কিছু নেই।
- পানিশূন্যতার ফলেও মুখ ফুলে যেতে পারে।
- সংক্রামক রোগ মাম্পস হলে মুখ ফুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- মুখ ফোলা দেখানোর আরেকটি কারণ হতে পারে ভিটামিন সি এর ঘাটতি।
এক-দুদিন নয়, প্রায়ই মুখ ফোলা দেখালে বা দেহের অন্য কোথাও পানি জমলে এবং অন্যান্য উপসর্গ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মুখ ফুলে যাওয়া কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
মুখ ফুলে যাওয়া সনাক্ত করা সহজ। কিন্তু, কারণটি নির্ধারণ করা আরও গুরুত্বপূর্ণ, যার জন্য ডাক্তারকে দেখানো আবশ্যক।
একটি কার্যকর নির্ণয়ের জন্য, ডাক্তার শারীরিকভাবে পরীক্ষা করবেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, এটি অ্যালার্জি বা সংক্রমণের কারণে হয়। প্রদাহের তীব্রতার উপর নির্ভর করে, ডাক্তার সম্ভাব্য অ্যালার্জিগত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য অ্যান্টি-অ্যালার্জিক পরীক্ষাগুলি করার পরামর্শ দিতে পারেন।
অতএব, ডাক্তার অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধগুলি নির্ধারণ করতে পারেন এবং রোগীকে নির্দিষ্ট অ্যালার্জেন এড়াতে বলতে পারেন। একটি কার্যকর অনুশীলন কারণিক অ্যালার্জেনের ব্যবহার প্রতিরোধ করবে। রোগীর খাদ্যে বাদাম এবং শক্তি বাড়ানোর খাবারগুলি অনাক্রম্যতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
কারণের উপর নির্ভর করে, অ্যান্টিবায়োটিকস, ডিউরেটিকস, বা একটি উচ্চ প্রোটিন ডায়েটেরও পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।