ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়া কি?
খাদ্যনালী হল মুখ থেকে পাকস্থলী পর্যন্ত একটি নলবিশেষ যা উভয়কে যুক্ত করে। ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়া (ইএ) একটি জন্মগত পরিপাকতন্ত্রের ব্যাধি, যা খাদ্যনালীর বিকাশে বাঁধা দেয়, এবং খাদ্যনালী দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। অর্থাৎ ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়ায়, খাদ্যনালী, যে টিউবটি সাধারণত মুখ থেকে পাকস্থলীতে খাদ্য বহন করে, জন্মের আগে সঠিকভাবে বিকশিত হয় না।

ট্র্যাকিওইসোফেজিয়াল ফিস্টুলা (TEF) প্রায়শই সেই সব সদ্যোজাতদের মধ্যে দেখা যায় যাদের ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়া থাকে। ট্র্যাকিওইসোফেজিয়াল ফিস্টুলা খাদ্যনালীর সাথে শ্বাসনালীর (ট্রেকিয়া) অসম্পূর্ণ যোগাযোগের কারণে হয়। শ্বাসনালী সাধারণত খাদ্যনালীর নীচের অংশের সাথে সংযুক্ত থাকে, কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা যায় খাদ্যনালীর উপরের অংশের বা উভয় অংশের সাথে সংযুক্ত রয়েছে। ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়া ছাড়াও ট্র্যাকিওইসোফেজিয়াল ফিস্টুলা হয়ে থাকতে পারে।

ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়ার প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
উপসর্গগুলি একজন থেকে আরেকজন সদ্যোজাতের ক্ষেত্রে আলাদা হতে পারে। এর সাধারণ লক্ষণগুলি হল:

  • খাওয়ানোর সময় কাশি এবং বিষম লাগা
  • খাওয়ানোর সময় সাইনোসিসের কারণে চামড়া নীলচে হয়ে যায়
  • মুখ থেকে অত্যধিক লালা পড়া
  • ওজন বৃদ্ধি না হওয়া
  • বমি করা
  • অস্বাভাবিক গোলাকৃতি পেট
  • খাওয়ানোর সময় দম বন্ধ হওয়া।


ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়ার প্রধান কারণগুলি কি কি?
এই অবস্থার সঠিক কারণ এখনো জানা যায় নি, কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে সদ্যোজাতদের মধ্যে নিম্নলিখিত ত্রুটিগুলি সাধারণত ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়ার সাথে যুক্ত:

  • হৃদযন্ত্রে সমস্যা যেমন ভেন্ট্রিকুলার সেপটালে সমস্যা
  • মূত্রনালীর কিছু অবস্থা যেমন পলিসিস্টিক কিডনি
  • ট্রাইসমি ১৩, ১৮, বা ২১
  • মাস্কুলোস্কেলিটালের অস্বাভাবিকতা।


কিভাবে ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়া নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?

  • ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়ার সঠিক নির্ণয়ের জন্য সাধারণত বুক এবং পেটের এক্স-রে করা হয়ে থাকে।
  • বাচ্চা জন্ম দেওয়ার আগে, গর্ভবতী মায়ের উপর করা আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে ইসোফেজিয়াল অ্যাট্রেসিয়ার লক্ষণগুলো শনাক্ত করা যায়।
  • জন্মের পরে, খাওয়ানোর চেষ্টা করার সময় ব্যাধিটি সাধারণত ধরা পরে এবং শিশুটির খাওয়ার সময় কাশি, দম বন্ধ করে এবং নীল হয়ে যায়।
  • খাদ্যনালীর এক্স-রে করলে আক্রান্তের পেট এবং অন্ত্রে একটি বায়ু ভর্তি থলি দেখা যায়।


এই জন্মগত ত্রুটির জন্য চিকিৎসা হল সার্জারি। সার্জারির পরও ভবিষ্যতে শিশুর ইসোফেজিয়াল সমস্যা হতেও পারে, যেমন কোষে ক্ষতচিহ্ন, যার জন্য শিশু একটু বড় হওয়ার পর দ্বিতীয় সার্জারির প্রয়োজন হয়। অন্যান্য সমস্যাতে শিশু আক্রান্ত হলে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাক্তার ওষুধ দেন।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে