কানে চুলকানি কি?
কানে সংক্রমণের থেকেই বেশীরভাগ সময় কানে চুলকানির উপসর্গ দেখা যায়। বিশেষ করে কানের নালীপথে ত্বকের প্রাকৃতিক উদ্ভিজ্জাণুর অসাম্যের জন্য এটা হয়। কানে চুলকানি একটা সাধারণ সমস্যা এবং সাধারণত এর পিছনে অন্য কোনো অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অত্যধিক কানের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য কানের চামড়া উঠে যেতে পারে এবং তার থকে কানের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিউ-টিপস, দাঁত পরিষ্কার করার কাঠি এবং সেফটিপিনের মতো জিনিষ দিয়ে কান খোঁচালেও কানের নালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অনেকের কান চুলকানোর সমস্যা রয়েছে। এটা কোনো সাধারণ চুলকানি নয়। সব সময় কানে একটা আঙুল দিয়েই রাখতে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অসুবিধা হয় প্রচণ্ড রকমের স্পর্শকাতর নিউরোলজিক্যাল ফাইবারের কারণে। এগুলো অতি সূক্ষ্ম তন্তু, যা কি না খুবই স্পর্শকাতর এবং চুলকানির উদ্রেক ঘটায়।

কানে চুলকানির সাথে যুক্ত লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
কানে চুলকানির সাথে অন্যান্য উপসর্গগুলো হল:

  • জ্বর।
  • ফোলা।
  • কান থেকে রস বা পুঁজ বেরোনো।
  • কানে অস্বস্তির সঙ্গে কান বন্ধ হয়ে আছে এমন উপলব্ধি হওয়া।


কানে চুলকানির প্রধান কারণগুলো কি কি?
কানে চুলকানির অন্যতম কারণ হলো ছত্রাক সংক্রমণ। কিছু লোকের ক্ষেত্রে, তাদের কান ভীষণ সংবেদনশীল হয় যার ফলে একটা সামান্য ধুলো বা বাইরে থেকে কিছু জিনিষ কানে ঢুকলেই কানে চুলকানি শুরু হয়ে যায়। কানে চুলকানির অন্যান্য কারণগুলো হলো:

  • সোরিয়াসিস।
  • নাকে প্রদাহ।
  • বাইরের কানের পথে সংক্রমণ।
  • কানের ময়লার জন্য কান বন্ধ হয়ে যাওয়া।
  • অ্যালার্জি।
  • চুলকানি।
  • শুকনো চামড়া।
  • যে দেশের আবহাওয়া উষ্ণ ও আর্দ্র অর্থাৎ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের মানুষ। যেমন বাংলাদেশ।
  • যাদের দীর্ঘ সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হচ্ছে।
  • যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অর্থাৎ রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে।


কানে চুলকানি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
আপনার চিকিৎসক চুলকানির কারণ জানার জন্য আপনার সম্পূর্ণ ইতিহাস জানতে চাইবেন ও বিশদ পরীক্ষা করবেন । কানে অন্য কোনও রোগ আছে কিনা তা জানতে একটা অটোস্কোপ (কানের ভেতরটা পরীক্ষা করবার যন্ত্র) ব্যবহার করে কানের পরীক্ষা করা হতে পারে। নির্ণয়ের উপর নির্ভর করে চিকিৎসা করা হবে।

চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:

  • সংক্রমণের চিকিত্‍সার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গাল কানের ড্রপস দেওয়া হয়।
  • কানে চুলকানির জন্য মৃদু স্টেরয়েড ড্রপস দেওয়া হতে পারে।
  • কানের ময়লা নরম করার ড্রপ ব্যবহার করলে তা বন্ধকান খুলতে সাহায্য করতে পারে।


কি কি সাবধানতা অবলম্বন করবেন?

  • সামান্য অসুবিধা হলে তা ঘরে যত্ন নিলেই কমে যাবে, কিন্তু যদি উপসর্গগুলি না ঠিক হয় তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
  • যদি আপনার চর্মরোগ থাকে তাহলে তার ফলে যাতে কানে সংক্রমণে না হয় তার জন্য আপনি ই এন টি বিশেষজ্ঞ বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।
  • যদি আপনি কানে শোনার যন্ত্র ব্যাবহার করেন তাহলে সংক্রমণ এড়াতে ওটা নিয়মিত পরিষ্কার করবেন।
  • যদি কান থেকে অস্বাভাবিক রক্ত বেরোতে দেখেন তাহলে তৎক্ষনাৎ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
  • সতর্কতার সঙ্গে চিকিৎসা না করলে কানের পর্দার অনাকাংখিত ক্ষতি হতে পারে। রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে