প্রাথমিকভাবে দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলাসহ ১০ জন দরিদ্র বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিকে ভাতা প্রদানের আওতায় আনা হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
shohanrand1

Call

বয়ঃসন্ধিকালে তথা যৌবন আগমনের শুরুতে প্রত্যেক নারীরই মাসিক বা ঋতুস্রাব হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই মাসিক সবার ক্ষেত্রে নিয়মমত নাও হতে পারে। আবার নিয়মিত হলেও সমস্যাযুক্ত হতে পারে। আমাদের আজকের এই ফার্স্ট লাইফে স্টেস বা টেনশন জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলশ্রুতিতে প্রবল স্নায়ু চাপ, হরমোনের অসমতা ইত্যাদির ফলে মহিলাদের মাসিক সংক্রান্ত বিবিধ সমস্যার প্রকোপ আগের তুলনায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজকের আলোচনায় তাই মাসিক সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যায় কারণ ও প্রতিকারের আলোচনা করার চেষ্টা থাকবে। প্রথমেই আলোচনা করছি যন্ত্রণাদায়ক মাসিক বা ঋতুস্রাব নিয়ে। এ ধরনের সমস্যাকে ডাক্তারী পরিভাষায় ডিসমেনোরিয়ার বলা হয়। শতকরা ৫০ থেকে ৭০ ভাগ মহিলার যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাব বা ডিসমেনোরিয়ার সমস্যা হতে পারে। পৃথিবীব্যাপী তরুণীদের এটি একটি প্রধান সমস্যা। ডিসমেনোরিয়া সমস্যাকে সাধারণত দু'ভাগে ভাগ করা যায় ১. প্রাইমারী ২. সেকেন্ডারি। প্রাইমারী ডিসমেনোরিয়া সাধারণত মেয়েদের প্রথম মাসিকের দু'তিন বছর পর শুরু হয়। ১৫-২৫ বছর বয়সের মেয়েদেরই সাধারণত এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। ২৫ বছরের পর থেকে এ সমস্যা কমে আসতে শুরু করে। বিশেষ করে বিয়ের পর সাধারণত এই সমস্যা আর দেখা যায় না। প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া সত্যিকার কারণ আজো নির্ণয় করা যায়নি তবে এর সাথে যুক্তিযুক্ত কিছু সমস্যার সহাবস্থান বের করা সম্ভব হয়েছে। যেমন : ১. এই সমস্যা প্রধানত ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের তরুণীদের মাঝেই দেখা যায়। ২. যে সকল তরুণী মাসিকের আগে ও পরে টেনশনে ভোগের তাদের সমস্যা দেখা দেয়। ৩. বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেশনজনিত মানসিক সমস্যায় ডিসমেনোরিয়া বেশি হয়। ৪. মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল তরুণীদেরও এই সমস্যা হয় ৫. অস্বস্তিকর, অশান্তিপূর্ণ ও কোলাহলময় পারিবারিক পর্যবেশে জীবনযাপনে অভ্যস্ত তরুণীদেরও এই সমস্যা থাকতে পারে। ৬. রোগাটে, স্বাস্থ্যহীন বা রোগাক্রান্ত মেয়েদের এই সমস্যা বেশি হয়। ৭. মা-বাবার আদরের মেয়ে অথবা যে সকল মায়েরও এই সমস্যা ছিল তাদের মেয়েদেরও এই সমস্যা হতে পারে। রোগীর লক্ষণ : ডিসমেনোরিয়া ব্যথার একটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্য রোগের ব্যথা থেকে আলাদা। এই ব্যথা মাসিক শুরু হবার কয়েক ঘণ্টা আগে শুরু হয় ও ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা স্থায়ী হয়। কখনও পুরো একদিনও স্থায়ী হতে পারে। ব্যথা প্রথমে পেটের দিকে থাকে এবং পরে উরুর ভিতরের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ব্যথার তীব্রতায় চেহারা ফ্যাকাসে দেখায়, ঘাম নির্গত হয়। বমি বমি ভাব তীব্র ব্যথায় বমি অবশ্যই হবে। পাতলা পায়খানাও হতে পারে। কখনও কখনও পায়খানা/প্রস্রাব করতে কষ্ট হতে পারে। প্রতিরোধ : ১. স্বাস্থ্যহীনতা ভগ্নস্বাস্থ্য বা অপুষ্টির শিকার হয়ে থাকলে তা দূর করা হবে। ২. বিষণ্ণতায় মানসিক কষ্ট, কুসংস্কার, ভুল ধারণা দূর করতে হবে। ৩. আক্রান্ত তরুণীদের বোঝাতে হবে যে মাসিক বা ঋতুস্রাব কোন রোগ নয় বরং প্রত্যেক নারীরই শরীরবৃত্তিক প্রক্রিয়া। ৪. ঘরে-বাইরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দূর করতে হবে। চিকিৎসা : মাসিক শুরু হলে ও স্বল্প ব্যথা হলে রোগীকে বুঝিয়ে আশ্বস্ত করতে হবে। উপশম না হলে প্যারাসিটামল বা এসপিরিন বড়ি, বেশি ব্যথায় আইবোপ্রতফেন সাথে এনাস্লোজমোডিফ ট্যাবলেট খেতে দিতে হবে। তীব্র ব্যথায় প্রয়োজনে ইনজেকশন প্রয়োগ করা যেতে পারে। এ ধরনের চিকিৎসায় কাজ না হলে জন্মনিয়ন্ত্রণ জাতীয় বড়ির ব্যবহারে এক্ষেত্রে ভাল কাজ করবে। তবে ডিসমেনোরিয়া স্থায়ী সমাধান হলে বিয়ে এবং সন্তান প্রসবের পর এ সমস্যা আর থাকে না। তবে দাম্পত্য জীবন অসুখী হলে এই সমস্যা থেকে যেতে পারে। এতসব ব্যবস্থার পর যদি সমস্যা থেকেই যায় ওষুধের পাশাপাশি সার্জিকেল ট্রিটমেন্টেরও প্রয়োজন হতে পারে- সম্পূর্ণ যন্ত্রণামুক্ত হবার জন্য। দ্বিতীয় আরেকটি সমস্যার কথা বলবো আর তাহল অনিয়মিত পিরিয়ড- এই সমস্যাটিকে অনেক নারী গুরুত্বের সাথে নেন না। কিন্তু অনেক সময় পলিসিসটিক ও ভারী সিনট্রামের জন্য পিরিয়ড অনিয়মমত হতে পারে অথবা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। একমাসে একাধিক মাসিক হতে পারে। ক্রমাগত বিল্ডিংয়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া ওজন বেড়ে যাওয়া, শরীরের বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্ছিত লোম দেখা দিতে পারে। মনের অস্থিরতা হতে পারে। প্রেগনেন্ট অবস্থায় অনিয়মিত ঋতুচক্র ক্ষতিকারক এমনকি গর্ভপাতও হতে পারে। তাই এ সময়ে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। জীবন ধারার পরিবর্তন আনতে পারেন উপরিল্লিখিত সিনড্রোমকে প্রতিরোধ করার জন্য। সুষম ডায়েট ও এক্সারসাইজ খুব জরুরি বিধান। পলিসিমটি ওভারি সিনড্রোম চিকিৎসায় করতে হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ