আবু উবাইদাহ আল হিন্দী

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী

0 Views
Rated 5 / 5 based on 0 reviews

আবু উবাইদাহ আল হিন্দী

  • Male | |

Chamber

Services

Work Experience

Skills

Language

Training

Education

প্রশ্ন-উত্তর সমূহ 0 বার দেখা হয়েছে | এই মাসে 0 বার
0 টি প্রশ্ন দেখা হয়েছে 0 বার
0 টি উত্তর দেখা হয়েছে 0 বার
0 টি ব্লগ | 0 টি মন্তব্য | 0 টি প্রিয়

Recent Q&A

তাকফীর ও তুচ্ছ করা ছাড়াও সমালোচনা ও সংশোধন সম্ভব!

মাসআলা হলো; এই কুফুরি শাসনব্যবস্থায় শরয়ী তাবীলের মাধ্যমে, দ্বীনের খেদমতের নামে কেউ যদি অংশ গ্রহণ করে তাহলে জিহাদের আলেমদের মতে এটি বাড়াবাড়ি, গুনাহের কাজ এবং হারাম। তার পুরোপুরি বিরোধিতা করা হবে এবং দাওয়াতের ভাষায় এই ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে সমালোচনা করা হবে। কিন্তু তাদেরকে কাফের বলা হবে না। এই ব্যক্তিরা সবাই এক স্তরের নয়। কোন বিশেষ নেতা এমনও থাকতে পারে, যে দ্বীন ও জিহাদের ক্ষতি করায় অনেক অগ্রসর অথবা তার ব্যক্তিগত কোন কাজ তার ঈমানের দাবির বিপরীত। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে কাফের ফতোয়া দেয়া থেকে আমাদের ভাষাকে সংযত করবো। তার বিরুদ্ধে এ ধরণের ফতোয়া দেয়া জিহাদের দাওয়াতের জন্য ক্ষতির কারণ।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের পূর্ববর্তী আলেমগণ সর্বদা কোন বিশেষ ব্যক্তি অথবা গ্রুপকে কাফের ফতোয়া দেয়ার পূর্বে দাওয়াতের লাভ-ক্ষতির দিকটি বিবেচনায় রাখতেন। যদি কোন ব্যক্তি ইসলামের পোশাক গায়ে জড়াতো অর্থাৎ মুসলিম দাবী করত অথচ সে কুফুরি গ্রহণ করেছে, তাহলে পূর্ববর্তী আলেমগণ দেখতেন তাকে স্পষ্ট কাফের ফতোয়া দেয়া বা হত্যা করা দ্বারা দাওয়াতের ক্ষতি হবে নাকি লাভ হবে? যদি ক্ষতি হওয়ার আশংকা বেশি থাকত তাহলে নাম ধরা ছাড়া তার সমালোচনা করা হত। সংশোধনের চেষ্টা করা হত। তার খারাবী বন্ধ করে দেয়া হত। কিন্তু তাকে নির্দিষ্ট করে তাকফীরও করা হত না। তাকে হত্যা করাও হত না।
আমরা রঈসুল মুনাফেকীন আব্দুল্লাহ বিন উবাই’র সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণের দিকে লক্ষ করি। সাহাবীগণ যখন বললেন, ‘আমরা তাকে হত্যা করি?’ তখন তিনি বললেন, ‘তাকে ছাড়, মানুষ বলবে মুহাম্মদ তাঁর সাথীদের হত্যা করে’।
.
আরেকটি বিষয় লক্ষ করি, ইবনে উবাই আনসারিদের খাজরাজ গোত্রের ছিল। এক গোত্র হওয়ার কারণে খাজরাজের সরদার সাআদ বিন উবাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু সাহাবী হওয়া সত্ত্বেও এটা সহ্য করেননি যে, অন্য গোত্রের কোন লোক তাকে (ইবনে উবাইকে) হত্যা করবে। এই কারণেই আউস গোত্রের সরদার সাআদ বিন মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আব্দুল্লাহ বিন উবাইকে হত্যা করার অনুমতি চাইলেন, তখন সাআদ বিন উবাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু তার ওপর রাগ করলেন এবং এমন কাজ করতে নিষেধ করলেন।
.
এই ঘটনা সহীহ মুসলিমমে এসেছে। সেখানে আয়শা রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর একটি কথা বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, “সাআদ বিন উবাদা ভালো মানুষ ছিলেন। কিন্তু ওই সময় তার আত্মমর্যাদাবোধ জেগে উঠেছিল। তিনি চাচ্ছিলেন যদি হত্যা করার আদেশ দেয়া হয় তাহলে যেন তাদেরকে আল্লাহর রাসুল আদেশ দেন। তারাই ইবনে উবাইকে হত্যা করবে। অন্য গোত্রের কেউ হত্যা করবে এটা তারা চাচ্ছিলেন না। ঠিক এমন কথাই বলেছিলেন ইবনে উবাই এর মুসলমান ছেলে ‘আব্দুল্লাহ’ রাদিয়াল্লাহু আনহু ।
যখন ইবনে উবাই এর খারাবী বেড়ে গেলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কষ্টের বিষয়টি তিনি বুঝতে পারলেন, তখন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আমার পিতাকে হত্যা করতে চান তাহলে আমাকে আদেশ করুন। আমিই তা'র মাথা এনে আপনার সামনে রাখব। কিন্তু অন্য কেউ হত্যা করলে আমার আত্মমর্যাদাবোধে আঘাত লাগবে”।
.
সম্মানিত ভাইয়েরা!
.
বংশীয় এবং দলীয় সম্পর্ক খুব নাযুক। নিজের দলের কোন নে'তার সাথে দলের কোন সদস্যের মতবিরোধ থাকতে পারে - কোন এক পর্যায়ে সে তাকে খারাপও মনে করতে পারে। কিন্তু দলের বাহিরের কেউ ওই নে'তার নামে কোন খারাপ কথা বললে তার দলীয় অনুভূতি জেগে উঠে। বিশেষ করে দলটি যখন দ্বীনী দল হয় তখন অনুভূতিও তীব্র হয়। তাই এই নাজুকতার প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি।
এই দ্বীনী দলের মধ্যে ভালো মানুষও আছে। তারা তাদের নেতাদের ভালোবাসে নেতাদের দুনিয়া পূজার কারণে নয়, বরং নেতাদের দ্বীনী খেদমতের কারণে বা দ্বীনী খেদমতের ওয়াদার কারণে। সুতরাং এই নেতাদেরকে কাফের ফতোয়া দিয়ে আমরা কীভাবে ধারণা করতে পারি যে, তার দলের লোকেরা আমাদের কথা শুনবে? আর তাদেরকে কাফের ফতোয়া দেয়ার দ্বারা অন্য দ্বীনদার ও জনসাধারণকে মোটেও প্রভাবিত করা যায় না।
.
সুতরাং আপনি যদি চান যে, তাদের এই রোগের চিকিৎসা করবেন, তাদেরকে গণতন্ত্রের কুফুরি বোঝাবেন, তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে নববী মানহাজে নিয়ে আসবেন, তাদেরকে এই খারাপ পথ থেকে ফিরাবেন, তাহলে সিরাতের অনুসরণ করুন। কাজের সমালোচনা করুন। কারো নাম উল্লেখ ব্যতীত, কাউকে কাফের ফতোয়া দেয়া ব্যতীত গণতন্ত্রের ভ্রান্ত হওয়ার দলিলাদি বর্ণনা করুন।
.
.
টিকা –
.
.
দাওয়াতের পদ্ধতি ও জিহাদি মানহাজের হেফাযত

0 likes | 1 views

জানুয়ারি ২০২৪, বাংলাদেশ। এই স্থান-কালের প্রেক্ষাপটঃ

জানুয়ারি ২০২৪, বাংলাদেশ। এই স্থান-কালের প্রেক্ষাপট এখানকার শিক্ষিত সচেতন মুসলিমদের কাছে একেবারেই স্পষ্ট। কিন্তু মূল আলাপে যাবার আগে দীর্ঘকালীন ফায়েদার বিবেচনায় (খুবই সংক্ষেপে) প্রেক্ষাপটের প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো একবার উল্লেখ করে দেওয়াই সমীচীন মনে করছি ইন শা আল্লাহ।
.
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু মাস আগে থেকেই ক্ষয়িষ্ণু সাম্রাজ্য আমেরিকা বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রচলিত গণতান্ত্রিক সিস্টেমকে হ্যাক করে পর পর তিনবার শাসনক্ষমতায় থাকার পর চতুর্থবার শাসনক্ষমতায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারকে সাধারণ নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই আমেরিকা ভিসা নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য অবরোধ সহ নানামুখী চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
.
বলাই বাহুল্য, বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি - যারা কিনা আরেক সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী দল - তাদের সাথেও আমেরিকার যোগসূত্রের বিভিন্ন গুঞ্জন ওঠে। বিএনপি-পন্থী অনেক অ্যাক্টিভিস্টরা স্পষ্টভাবেই আমেরিকার সাহায্যের ব্যাপারে খোলাখোলি কথা বলে যায়। এভাবে চলতে চলতে এটা অন্তত দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তারা আমেরিকার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতন করে শাসনক্ষমতায় যেতে চায়। আরও স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সুকৌশলী আমেরিকাও নিজের বিভিন্ন স্বার্থে সেবার বিএনপিকে শাসনক্ষমতায় দেখতে চায়। বিভিন্ন ঘটনা আর রটনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচী এবং আন্দোলন করতে থাকে।
.
একইসাথে গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামি শরিয়াহ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাওয়া বিভিন্ন ইসলামি দলও বিএনপির আন্দোলনের সাথে অনেকটাই একাত্নতা ঘোষণা করে। অবস্থা এমন হয় যে, গণতান্ত্রিক পন্থায় ইসলামি শরীয়াহ কায়েমের জন্য কাজ করে যাওয়া রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও আমেরিকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতাকে পুঁজি করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সাথে কোনোরকমে জোটবদ্ধ হয়ে হলেও শাসনক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন বুনতে থাকে। এমতাবস্থায়, ইসলামি শাসন কায়েমের জন্য কাফিরদের নির্ধারণ করে দেওয়া সিস্টেমের ভেতর থেকে তাদের হস্তক্ষেপমূলক পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা গ্রহণ করা বৈধ কি না সে বিষয়ক শরয়ী আলাপে যদি নাও যাই, তবুও বাস্তবতার আলোকে এটা কতটুকু কার্যকর ও ফলপ্রসূ সে বিষয়ে আমাদের সরল মনের আন্তরিক কিছু আলাপ আমরা গণতান্ত্রিক ইসলামি দলগুলোর ‘আন্তরিক’ ভাইদের উদ্দেশ্যে রাখতে চাই।
.
বাংলাদেশে প্রায় ১৫ বছর শাসনক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ তো অন্তত আভ্যন্তরীণভাবে চরম শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমেরিকার মতো পরাশক্তি যখন চায় না, তখন আওয়ামী লীগেরও ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। আবার দেশটির প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও এত শক্তি নিয়ে আন্দোলন করলেও ঘুরেফিরে আমেরিকার হস্তক্ষেপের আশাতেই বুক বাঁধে। এখানে শাসনক্ষমতায় আসা কিংবা টিকে থাকার জন্য গণতান্ত্রিক সিস্টেমটা যে আদৌ মুখ্য নয়, তা আরেকবার দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার তো ঠিকই এই সিস্টেমকে হ্যাক করে দুইবার (২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে) জোর করে শাসনক্ষমতায় থাকতে পেরেছিল। কেন পেরেছিল? কারণ গণতন্ত্রের দেবী আমেরিকা সেই দুইবার বাদ সাধেনি, কারণ সেসময় গেরুয়া সন্ত্রাসী ভারত নিজের স্বার্থে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারকেই সমর্থন দিয়েছিল।
.
সহজভাষায় বললে, বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি রাষ্ট্রে বিদ্যমান কাঠামোর অধীনে থেকে শাসনক্ষমতায় যাওয়াটা যে আন্তর্জাতিক পরাশক্তি (যেমন: আমেরিকা) কিংবা আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী শক্তির (যেমন: ভারত) সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল, সেটা বাংলাদেশের ২০২৪ সালের নির্বাচনে যতটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, তা যেন এখানকার ইতিহাসে আর কোনো সময়েই অতটা হয়নি।
.
গণতন্ত্রের মানহাজ অবলম্বন করা বিভিন্ন ইসলামি দলের চিন্তাশীল আন্তরিক ভাইয়েরা খুব ভালোভাবেই এই ব্যাপারগুলো উপলব্ধি করেন। তাহলে প্রশ্ন হলো, এভাবে শাসনক্ষমতায় গিয়ে প্রকৃত ফায়দা কোথায় যখন আমাদের কাছে স্পষ্ট যে আন্তর্জাতিক কিংবা আঞ্চলিক কোনো কুফরি শক্তির অনুমোদনেই সেই শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হয়? এভাবে শাসনক্ষমতায় গিয়েও ‘সত্যিকার ও পূর্ণাঙ্গ ইসলামি শরীয়াহ’ কীভাবে ফিরিয়ে আনা যাবে যখন এই ব্যাপারে আমাদের সামনে মিশর, আলজেরিয়া, এমনকি তুরস্কের মতো ব্যর্থতার উদাহরণ রয়েছে? সত্য হলো – একালের ফিরাউন পশ্চিমা সভ্যতার বিরুদ্ধে জি@হা@দকে এড়িয়ে যাওয়ার, নববী মানহাজকে পরিত্যাগ করে ওদেরই প্রচলন করা তন্ত্রমন্ত্রকে মেনে নেওয়ার অনিবার্য ফল হলো এটা। কুফরি শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে নববী সংঘাতকে এড়িয়ে যেতে যেতে একসময় ওদেরই অনুমোদন আর সাহায্যের দিকে তাকিয়ে থাকার পরিণতি বরণ করে নিতে হয়। আর কখনও কোনো কালে শাসনক্ষমতায় গিয়ে পৌঁছলেও ইসলামি শরীয়াহ আর কায়েম না করে পশ্চিমা শয়তানদেরকে খুশি রেখেই টিকে থাকতে হয়। নইলে যে এত বছরের রাজনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে!
.
প্রিয় ভাইয়েরা, আল্লাহর ইবাদাত একমাত্র তাঁরই নির্দেশিত পন্থায়, তাঁর রাসূল ﷺ-এর দেখানো উপায়ে করলেই কবুল হবে। তাহলে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের ইবাদাত কেন আমরা নুসুসের সুস্পষ্ট পন্থা জি@হা@দ ফি সাবিলিল্লাহকে বাদ দিয়ে ইজতিহাদ করে মানবসৃষ্ট তন্ত্রমন্ত্রকে বেছে নিব? আফসোস গণতন্ত্রকে মানহাজ বানানো বিভিন্ন ইসলামি দলের ভাইদের জন্য। কুফরি শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যে ধরনের সংঘাতকে তারা শুরুতেই আপাত অসম্ভব বলে ইজতিহাদ করে গণতন্ত্রের মানহাজ বেছে নেন, গণতান্ত্রিক প্রতিপক্ষগুলোর বিরুদ্ধে একসময় তারা সেই ধরনের সংঘাতেই গিয়ে লিপ্ত হন। [১] যে আত্নত্যাগ তারা দ্বীন কায়েমের নববী মানহাজ জি@হা@দ@কে বেছে নিয়ে সরাসরি আল্লাহর রাহে করতে পারতেন, সেই ধরনের আত্নত্যাগই তারা কিনা কখনও পশ্চিমা তন্ত্রমন্ত্র ফিরিয়ে আনা তো আবার কখনও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের রাহে করেন। আর প্রায় শত বছর ধরে সেই একই চক্রে ঘুরপাক খাওয়া এখনও চলছে তো চলছেই।
.
শুধু বাংলাদেশের হিসেব করলেও, ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্নপ্রকাশের পর ১৯৭৯ সালের মে মাসে ইকামতে দ্বীন বা আল্লাহর দ্বীন কায়েমের লক্ষ্যে নতুন উদ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ইসলামি দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি – জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর রাজনীতি শুরু হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক চড়াই উতরাই দেখা গিয়েছে। এমনকি সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী বিএনপির নেতৃত্বে ঐক্যজোট করে জামায়াতে ইসলামী দলটি বাংলাদেশের শাসনক্ষমতায় কিছুটা অংশও নিয়েছে। কিন্তু ১৯৭৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বছরের গণতান্ত্রিক মানহাজে সেই যে ইকামতে দ্বীন বা দ্বীন কায়েমের মূল লক্ষ্য – তা আজোবধি এই জমিনের কোথাও এক মুহুর্তের জন্যও অর্জিত হয়নি।
.
অপরদিকে আমাদের সামনে রয়েছে আল্লাহর রাস্তা জি@হা@দ@কে সত্যিকারভাবে আঁকড়ে ধরা আ-ফ-গা-ন মুসলিমদের উদাহরণ। সেই একই বছর অর্থাৎ ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে আ-ফ-গা-নি-স্তা-নে সোভিয়েত আগ্রাসন থেকে শুরু। সেই থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তা*লে*বা*ন এবং বৈশ্বিকভাবে জি@হা@দি মানহাজকে জীবন্ত করার লক্ষ্যে কাজ করা মু*জা-হি/দ'রা পরপর দুইটা পরাশক্তিকে হারিয়ে দিয়ে গোটা আ-ফ-গা-নি-স্তা-নের জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করেছেন। একবার ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত, আর পরে ২০২১ এর আগস্ট থেকে শুরু হয়ে আল্লাহর ইচ্ছায় এখনও চলছে। আর এই হলো আজকের দুনিয়ায় তন্ত্রমন্ত্রের বিপরীতে আল্লাহর রাস্তার নববী মানহাজকে আঁকড়ে ধরার ফলাফল।
.
আ-ফ-গা-নি-স্তা-নে আল্লাহর পক্ষ থেকে বাহ্যিক এই বিজয় যখন অর্জিত হয়নি কিংবা আজোবধি যদি তার দেখা না মিলতো, তখনও আমরা আল্লাহর দ্বীন কায়েমের ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট নুসুসের বিপরীতে গিয়ে পশ্চিমা তন্ত্রমন্ত্রকে কবুল করে নেওয়ার ইজতিহাদকে বৈধ বলিনি আলহামদুলিল্লাহ, এবং তা কস্মিনকালেও বলবো না ইন-শা-আল্লাহ। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ২০২১ সালে বাহ্যিক বিজয়ের পর বিস্তীর্ণ জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা হওয়া আ-ফ-গা-নি-স্তা-ন, আর এখন অর্থনৈতিকভাবেও ঘুরে দাঁড়ানোর ফিকিরে থাকা আ-ফ-গা-নি-স্তা-ন কি এখনও তন্ত্রমন্ত্রের পিছনে ছুটে চলা মুসলিম নেতাকর্মীকে কোনো কিছু উপলব্ধি করায় না?
.
আবু উবাইদাহ আল-হিন্দি
২৩ জুমাদা আল-আখিরাহ, ১৪৪৫ হিজরি

0 likes | 1 views

বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট?

জানুয়ারি ২০২৪, বাংলাদেশ। এই স্থান-কালের প্রেক্ষাপট এখানকার শিক্ষিত সচেতন মুসলিমদের কাছে একেবারেই স্পষ্ট। কিন্তু মূল আলাপে যাবার আগে দীর্ঘকালীন ফায়েদার বিবেচনায় (খুবই সংক্ষেপে) প্রেক্ষাপটের প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো একবার উল্লেখ করে দেওয়াই সমীচীন মনে করছি ইন শা আল্লাহ।
.
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু মাস আগে থেকেই ক্ষয়িষ্ণু সাম্রাজ্য আমেরিকা বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রচলিত গণতান্ত্রিক সিস্টেমকে হ্যাক করে পর পর তিনবার শাসনক্ষমতায় থাকার পর চতুর্থবার শাসনক্ষমতায় যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারকে সাধারণ নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই আমেরিকা ভিসা নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য অবরোধ সহ নানামুখী চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
.
বলাই বাহুল্য, বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি - যারা কিনা আরেক সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী দল - তাদের সাথেও আমেরিকার যোগসূত্রের বিভিন্ন গুঞ্জন ওঠে। বিএনপি-পন্থী অনেক অ্যাক্টিভিস্টরা স্পষ্টভাবেই আমেরিকার সাহায্যের ব্যাপারে খোলাখোলি কথা বলে যায়। এভাবে চলতে চলতে এটা অন্তত দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তারা আমেরিকার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতন করে শাসনক্ষমতায় যেতে চায়। আরও স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সুকৌশলী আমেরিকাও নিজের বিভিন্ন স্বার্থে সেবার বিএনপিকে শাসনক্ষমতায় দেখতে চায়। বিভিন্ন ঘটনা আর রটনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচী এবং আন্দোলন করতে থাকে।
.
একইসাথে গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলামি শরিয়াহ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাওয়া বিভিন্ন ইসলামি দলও বিএনপির আন্দোলনের সাথে অনেকটাই একাত্নতা ঘোষণা করে। অবস্থা এমন হয় যে, গণতান্ত্রিক পন্থায় ইসলামি শরীয়াহ কায়েমের জন্য কাজ করে যাওয়া রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও আমেরিকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতাকে পুঁজি করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর সাথে কোনোরকমে জোটবদ্ধ হয়ে হলেও শাসনক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন বুনতে থাকে। এমতাবস্থায়, ইসলামি শাসন কায়েমের জন্য কাফিরদের নির্ধারণ করে দেওয়া সিস্টেমের ভেতর থেকে তাদের হস্তক্ষেপমূলক পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা গ্রহণ করা বৈধ কি না সে বিষয়ক শরয়ী আলাপে যদি নাও যাই, তবুও বাস্তবতার আলোকে এটা কতটুকু কার্যকর ও ফলপ্রসূ সে বিষয়ে আমাদের সরল মনের আন্তরিক কিছু আলাপ আমরা গণতান্ত্রিক ইসলামি দলগুলোর ‘আন্তরিক’ ভাইদের উদ্দেশ্যে রাখতে চাই।
.
বাংলাদেশে প্রায় ১৫ বছর শাসনক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ তো অন্তত আভ্যন্তরীণভাবে চরম শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমেরিকার মতো পরাশক্তি যখন চায় না, তখন আওয়ামী লীগেরও ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে যায়। আবার দেশটির প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও এত শক্তি নিয়ে আন্দোলন করলেও ঘুরেফিরে আমেরিকার হস্তক্ষেপের আশাতেই বুক বাঁধে। এখানে শাসনক্ষমতায় আসা কিংবা টিকে থাকার জন্য গণতান্ত্রিক সিস্টেমটা যে আদৌ মুখ্য নয়, তা আরেকবার দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার তো ঠিকই এই সিস্টেমকে হ্যাক করে দুইবার (২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে) জোর করে শাসনক্ষমতায় থাকতে পেরেছিল। কেন পেরেছিল? কারণ গণতন্ত্রের দেবী আমেরিকা সেই দুইবার বাদ সাধেনি, কারণ সেসময় গেরুয়া সন্ত্রাসী ভারত নিজের স্বার্থে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারকেই সমর্থন দিয়েছিল।
.
সহজভাষায় বললে, বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি রাষ্ট্রে বিদ্যমান কাঠামোর অধীনে থেকে শাসনক্ষমতায় যাওয়াটা যে আন্তর্জাতিক পরাশক্তি (যেমন: আমেরিকা) কিংবা আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী শক্তির (যেমন: ভারত) সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল, সেটা বাংলাদেশের ২০২৪ সালের নির্বাচনে যতটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, তা যেন এখানকার ইতিহাসে আর কোনো সময়েই অতটা হয়নি।
.
গণতন্ত্রের মানহাজ অবলম্বন করা বিভিন্ন ইসলামি দলের চিন্তাশীল আন্তরিক ভাইয়েরা খুব ভালোভাবেই এই ব্যাপারগুলো উপলব্ধি করেন। তাহলে প্রশ্ন হলো, এভাবে শাসনক্ষমতায় গিয়ে প্রকৃত ফায়দা কোথায় যখন আমাদের কাছে স্পষ্ট যে আন্তর্জাতিক কিংবা আঞ্চলিক কোনো কুফরি শক্তির অনুমোদনেই সেই শাসনক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হয়? এভাবে শাসনক্ষমতায় গিয়েও ‘সত্যিকার ও পূর্ণাঙ্গ ইসলামি শরীয়াহ’ কীভাবে ফিরিয়ে আনা যাবে যখন এই ব্যাপারে আমাদের সামনে মিশর, আলজেরিয়া, এমনকি তুরস্কের মতো ব্যর্থতার উদাহরণ রয়েছে? সত্য হলো – একালের ফিরাউন পশ্চিমা সভ্যতার বিরুদ্ধে জি@হা@দকে এড়িয়ে যাওয়ার, নববী মানহাজকে পরিত্যাগ করে ওদেরই প্রচলন করা তন্ত্রমন্ত্রকে মেনে নেওয়ার অনিবার্য ফল হলো এটা। কুফরি শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে নববী সংঘাতকে এড়িয়ে যেতে যেতে একসময় ওদেরই অনুমোদন আর সাহায্যের দিকে তাকিয়ে থাকার পরিণতি বরণ করে নিতে হয়। আর কখনও কোনো কালে শাসনক্ষমতায় গিয়ে পৌঁছলেও ইসলামি শরীয়াহ আর কায়েম না করে পশ্চিমা শয়তানদেরকে খুশি রেখেই টিকে থাকতে হয়। নইলে যে এত বছরের রাজনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে!
.
প্রিয় ভাইয়েরা, আল্লাহর ইবাদাত একমাত্র তাঁরই নির্দেশিত পন্থায়, তাঁর রাসূল ﷺ-এর দেখানো উপায়ে করলেই কবুল হবে। তাহলে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের ইবাদাত কেন আমরা নুসুসের সুস্পষ্ট পন্থা জি@হা@দ ফি সাবিলিল্লাহকে বাদ দিয়ে ইজতিহাদ করে মানবসৃষ্ট তন্ত্রমন্ত্রকে বেছে নিব? আফসোস গণতন্ত্রকে মানহাজ বানানো বিভিন্ন ইসলামি দলের ভাইদের জন্য। কুফরি শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে যে ধরনের সংঘাতকে তারা শুরুতেই আপাত অসম্ভব বলে ইজতিহাদ করে গণতন্ত্রের মানহাজ বেছে নেন, গণতান্ত্রিক প্রতিপক্ষগুলোর বিরুদ্ধে একসময় তারা সেই ধরনের সংঘাতেই গিয়ে লিপ্ত হন। [১] যে আত্নত্যাগ তারা দ্বীন কায়েমের নববী মানহাজ জি@হা@দ@কে বেছে নিয়ে সরাসরি আল্লাহর রাহে করতে পারতেন, সেই ধরনের আত্নত্যাগই তারা কিনা কখনও পশ্চিমা তন্ত্রমন্ত্র ফিরিয়ে আনা তো আবার কখনও সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের রাহে করেন। আর প্রায় শত বছর ধরে সেই একই চক্রে ঘুরপাক খাওয়া এখনও চলছে তো চলছেই।
.
শুধু বাংলাদেশের হিসেব করলেও, ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্নপ্রকাশের পর ১৯৭৯ সালের মে মাসে ইকামতে দ্বীন বা আল্লাহর দ্বীন কায়েমের লক্ষ্যে নতুন উদ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ইসলামি দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি – জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর রাজনীতি শুরু হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনেক চড়াই উতরাই দেখা গিয়েছে। এমনকি সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী বিএনপির নেতৃত্বে ঐক্যজোট করে জামায়াতে ইসলামী দলটি বাংলাদেশের শাসনক্ষমতায় কিছুটা অংশও নিয়েছে। কিন্তু ১৯৭৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বছরের গণতান্ত্রিক মানহাজে সেই যে ইকামতে দ্বীন বা দ্বীন কায়েমের মূল লক্ষ্য – তা আজোবধি এই জমিনের কোথাও এক মুহুর্তের জন্যও অর্জিত হয়নি।
.
অপরদিকে আমাদের সামনে রয়েছে আল্লাহর রাস্তা জি@হা@দ@কে সত্যিকারভাবে আঁকড়ে ধরা আ-ফ-গা-ন মুসলিমদের উদাহরণ। সেই একই বছর অর্থাৎ ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে আ-ফ-গা-নি-স্তা-নে সোভিয়েত আগ্রাসন থেকে শুরু। সেই থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তা*লে*বা*ন এবং বৈশ্বিকভাবে জি@হা@দি মানহাজকে জীবন্ত করার লক্ষ্যে কাজ করা মু*জা-হি/দ'রা পরপর দুইটা পরাশক্তিকে হারিয়ে দিয়ে গোটা আ-ফ-গা-নি-স্তা-নের জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করেছেন। একবার ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত, আর পরে ২০২১ এর আগস্ট থেকে শুরু হয়ে আল্লাহর ইচ্ছায় এখনও চলছে। আর এই হলো আজকের দুনিয়ায় তন্ত্রমন্ত্রের বিপরীতে আল্লাহর রাস্তার নববী মানহাজকে আঁকড়ে ধরার ফলাফল।
.
আ-ফ-গা-নি-স্তা-নে আল্লাহর পক্ষ থেকে বাহ্যিক এই বিজয় যখন অর্জিত হয়নি কিংবা আজোবধি যদি তার দেখা না মিলতো, তখনও আমরা আল্লাহর দ্বীন কায়েমের ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট নুসুসের বিপরীতে গিয়ে পশ্চিমা তন্ত্রমন্ত্রকে কবুল করে নেওয়ার ইজতিহাদকে বৈধ বলিনি আলহামদুলিল্লাহ, এবং তা কস্মিনকালেও বলবো না ইন-শা-আল্লাহ। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ২০২১ সালে বাহ্যিক বিজয়ের পর বিস্তীর্ণ জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা হওয়া আ-ফ-গা-নি-স্তা-ন, আর এখন অর্থনৈতিকভাবেও ঘুরে দাঁড়ানোর ফিকিরে থাকা আ-ফ-গা-নি-স্তা-ন কি এখনও তন্ত্রমন্ত্রের পিছনে ছুটে চলা মুসলিম নেতাকর্মীকে কোনো কিছু উপলব্ধি করায় না?
.
আবু উবাইদাহ আল-হিন্দি
২৩ জুমাদা আল-আখিরাহ, ১৪৪৫ হিজরি

0 likes | 1 views

তাকফীর ও তুচ্ছ করা ছাড়াও সমালোচনা ও সংশোধন সম্ভব?

মাসআলা হলো; এই কুফুরি শাসনব্যবস্থায় শরয়ী তাবীলের মাধ্যমে, দ্বীনের খেদমতের নামে কেউ যদি অংশ গ্রহণ করে তাহলে জিহাদের আলেমদের মতে এটি বাড়াবাড়ি, গুনাহের কাজ এবং হারাম। তার পুরোপুরি বিরোধিতা করা হবে এবং দাওয়াতের ভাষায় এই ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে সমালোচনা করা হবে। কিন্তু তাদেরকে কাফের বলা হবে না। এই ব্যক্তিরা সবাই এক স্তরের নয়। কোন বিশেষ নেতা এমনও থাকতে পারে, যে দ্বীন ও জিহাদের ক্ষতি করায় অনেক অগ্রসর অথবা তার ব্যক্তিগত কোন কাজ তার ঈমানের দাবির বিপরীত। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে কাফের ফতোয়া দেয়া থেকে আমাদের ভাষাকে সংযত করবো। তার বিরুদ্ধে এ ধরণের ফতোয়া দেয়া জিহাদের দাওয়াতের জন্য ক্ষতির কারণ।
আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের পূর্ববর্তী আলেমগণ সর্বদা কোন বিশেষ ব্যক্তি অথবা গ্রুপকে কাফের ফতোয়া দেয়ার পূর্বে দাওয়াতের লাভ-ক্ষতির দিকটি বিবেচনায় রাখতেন। যদি কোন ব্যক্তি ইসলামের পোশাক গায়ে জড়াতো অর্থাৎ মুসলিম দাবী করত অথচ সে কুফুরি গ্রহণ করেছে, তাহলে পূর্ববর্তী আলেমগণ দেখতেন তাকে স্পষ্ট কাফের ফতোয়া দেয়া বা হত্যা করা দ্বারা দাওয়াতের ক্ষতি হবে নাকি লাভ হবে? যদি ক্ষতি হওয়ার আশংকা বেশি থাকত তাহলে নাম ধরা ছাড়া তার সমালোচনা করা হত। সংশোধনের চেষ্টা করা হত। তার খারাবী বন্ধ করে দেয়া হত। কিন্তু তাকে নির্দিষ্ট করে তাকফীরও করা হত না। তাকে হত্যা করাও হত না।
আমরা রঈসুল মুনাফেকীন আব্দুল্লাহ বিন উবাই’র সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আচরণের দিকে লক্ষ করি। সাহাবীগণ যখন বললেন, ‘আমরা তাকে হত্যা করি?’ তখন তিনি বললেন, ‘তাকে ছাড়, মানুষ বলবে মুহাম্মদ তাঁর সাথীদের হত্যা করে’।
.
আরেকটি বিষয় লক্ষ করি, ইবনে উবাই আনসারিদের খাজরাজ গোত্রের ছিল। এক গোত্র হওয়ার কারণে খাজরাজের সরদার সাআদ বিন উবাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু সাহাবী হওয়া সত্ত্বেও এটা সহ্য করেননি যে, অন্য গোত্রের কোন লোক তাকে (ইবনে উবাইকে) হত্যা করবে। এই কারণেই আউস গোত্রের সরদার সাআদ বিন মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আব্দুল্লাহ বিন উবাইকে হত্যা করার অনুমতি চাইলেন, তখন সাআদ বিন উবাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু তার ওপর রাগ করলেন এবং এমন কাজ করতে নিষেধ করলেন।
.
এই ঘটনা সহীহ মুসলিমমে এসেছে। সেখানে আয়শা রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর একটি কথা বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, “সাআদ বিন উবাদা ভালো মানুষ ছিলেন। কিন্তু ওই সময় তার আত্মমর্যাদাবোধ জেগে উঠেছিল। তিনি চাচ্ছিলেন যদি হত্যা করার আদেশ দেয়া হয় তাহলে যেন তাদেরকে আল্লাহর রাসুল আদেশ দেন। তারাই ইবনে উবাইকে হত্যা করবে। অন্য গোত্রের কেউ হত্যা করবে এটা তারা চাচ্ছিলেন না। ঠিক এমন কথাই বলেছিলেন ইবনে উবাই এর মুসলমান ছেলে ‘আব্দুল্লাহ’ রাদিয়াল্লাহু আনহু ।
যখন ইবনে উবাই এর খারাবী বেড়ে গেলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কষ্টের বিষয়টি তিনি বুঝতে পারলেন, তখন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আমার পিতাকে হত্যা করতে চান তাহলে আমাকে আদেশ করুন। আমিই তা'র মাথা এনে আপনার সামনে রাখব। কিন্তু অন্য কেউ হত্যা করলে আমার আত্মমর্যাদাবোধে আঘাত লাগবে”।
.
সম্মানিত ভাইয়েরা!
.
বংশীয় এবং দলীয় সম্পর্ক খুব নাযুক। নিজের দলের কোন নে'তার সাথে দলের কোন সদস্যের মতবিরোধ থাকতে পারে - কোন এক পর্যায়ে সে তাকে খারাপও মনে করতে পারে। কিন্তু দলের বাহিরের কেউ ওই নে'তার নামে কোন খারাপ কথা বললে তার দলীয় অনুভূতি জেগে উঠে। বিশেষ করে দলটি যখন দ্বীনী দল হয় তখন অনুভূতিও তীব্র হয়। তাই এই নাজুকতার প্রতি লক্ষ্য রাখা জরুরি।
এই দ্বীনী দলের মধ্যে ভালো মানুষও আছে। তারা তাদের নেতাদের ভালোবাসে নেতাদের দুনিয়া পূজার কারণে নয়, বরং নেতাদের দ্বীনী খেদমতের কারণে বা দ্বীনী খেদমতের ওয়াদার কারণে। সুতরাং এই নেতাদেরকে কাফের ফতোয়া দিয়ে আমরা কীভাবে ধারণা করতে পারি যে, তার দলের লোকেরা আমাদের কথা শুনবে? আর তাদেরকে কাফের ফতোয়া দেয়ার দ্বারা অন্য দ্বীনদার ও জনসাধারণকে মোটেও প্রভাবিত করা যায় না।
.
সুতরাং আপনি যদি চান যে, তাদের এই রোগের চিকিৎসা করবেন, তাদেরকে গণতন্ত্রের কুফুরি বোঝাবেন, তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে নববী মানহাজে নিয়ে আসবেন, তাদেরকে এই খারাপ পথ থেকে ফিরাবেন, তাহলে সিরাতের অনুসরণ করুন। কাজের সমালোচনা করুন। কারো নাম উল্লেখ ব্যতীত, কাউকে কাফের ফতোয়া দেয়া ব্যতীত গণতন্ত্রের ভ্রান্ত হওয়ার দলিলাদি বর্ণনা করুন।
.
.

0 likes | 1 views

আমাদের নিহতরা তো জান্নাতে!

উ'হু'দে'র যু*দ্ধে মুসলিম বাহিনীর বাহ্যিক পরাজয়ের পর রাসূলুল্লাহ ﷺ রক্তাক্ত হয়ে সাহাবাদের মধ্যে ফিরে আসেন। বিশুদ্ধ বর্ণনামতে, সেবার আনসারদের চৌষট্টি জন এবং মুহাজিরদের মধ্যে ছয়জন অর্থাৎ, মোট সত্তরজন সাহাবি শহীদ হন। রদিয়াল্লাহু আনহুম। কিন্তু যু*দ্ধ শেষে রাসূলুল্লাহ ﷺ বেঁচে ছিলেন কিনা, মক্কার কুরাইশ কাফিররা তখনও ঠিক জানতো না। সেসময় কুরাইশ বাহিনীর পক্ষ থেকে আবু সুফিয়ান - যিনি তখনও মুসলিম হননি - আর মুসলিম বাহিনীর পক্ষ থেকে উমার ইবনুল খাত্তাব (রদিয়াল্লাহু আনহু)-এর এক উত্তপ্ত বাকযুদ্ধ হয়ে যায়। ইবনু আব্বাস (রদিয়াল্লাহু আনহু)-এর বর্ণনায় [১] সেই ঘটনার একটা দৃশ্য আমাদের সামনে ফুটে ওঠে –
.
“... (সেদিন) বিপুল সংখ্যক মুসলিম নিহত হন। (কিন্তু) দিনের শুরুটি ছিল রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তাঁর সাহাবাদের অনুকূলে। এমনকি (সেসময়) মুশরিকদের সাত বা নয়জন পতাকাবাহী নিহত হয়। মুসলিম সেনারা পাহাড়ের দিকে দৌড়ে যান; কিন্তু ওখানে পৌঁছার আগেই (শুনতে পান) লোকজন বলছে, ‘গুহার কাছে! গুহার কাছে!’ তারা তখন মিহরাসের নিচে। শয়তান চিৎকার করে বলে উঠে, ‘মুহাম্মাদ খতম!’ (ঐ মুহুর্তে) সংবাদটির সত্যতা নিয়ে কেউ কোনো সন্দেহ পোষণ করেনি। আমাদেরও সন্দেহ হতে থাকে যে তিনি নিহত হয়েছেন।
.
এমন সময় রাসূলুল্লাহ ﷺ দুই সা'দ এর কাঁধে ভর করে হাজির হন। চলার সময় তিনি একটু সামনের দিকে ঝুঁকে পড়তেন। এই ভঙ্গি দেখে আমরা তাঁকে চিনতে পারি। তাঁকে দেখে আমরা এতটাই খুশি হই যেন আমাদের কোনো সমস্যাই হয়নি! তিনি ﷺ আমাদের দিকে উঠে আসতে আসতে বলেন, “আল্লাহর ক্রোধ ঐ জাতির বিরুদ্ধে কঠোর রূপ ধারণ করেছে, যারা তাদের রাসূলের চেহারা রক্তাক্ত করেছে।” আরেকবার বলেন, “হে আল্লাহ! আমাদের উপর ওদের বিজয়ী হওয়ার কোনো অধিকার নেই।”
.
এরপর তিনি ﷺ আমাদের কাছে এসে কিছুক্ষণ থাকেন। এরপর আবু সুফিয়ান পাহাড়ের নিচ থেকে চিৎকার করে তার দেবতার নাম বলে উঠে, ‘হুবাল মহান! হুবাল মহান! আবু কাবশার ছেলে (মুহাম্মাদ ﷺ) কোথায়? আবু কুহাফার ছেলে (আবু বকর) কোথায়? খাত্তাবের ছেলে (উমার) কোথায়?’
.
উল্লেখ্য, বুখারি ও আবু দাউদের ভিন্ন আরেকটি বর্ণনায় জানা যায় যে, প্রথমদিকে রাসূলুল্লাহ ﷺ সাহাবাদেরকে কোনো উত্তর দিতে নিষেধ করেছিলেন। আর তাই সেসময় প্রথমে আবু সুফিয়ান কোনো উত্তর না পেয়ে তার সঙ্গীদের দিকে ফিরে বলে ওঠে, ‘এদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে! তোমরা তাদের ভালই প্রতিশোধ নিয়েছো!’ [২] যাহোক, আমরা মূল বর্ণনায় ফিরে যাই –
.
তখন উমার (রদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি কি তার কোনো জবাব দিবো না?”। জবাবে নবী ﷺ বলেন, “অবশ্যই!” এরপর –
.
আবু সুফিয়ান: হুবাল মহান!
.
উমার (রদিয়াল্লাহু আনহু): আল্লাহ সুমহান! মহিমাময়!
.
আবু সুফিয়ান: ইবনুল খাত্তাব! আমি হুবালের ইতিবাচক সাড়া পেয়ে এই যুদ্ধে এসেছি! আবু কাবশার ছেলে (মুহাম্মাদ ﷺ) কোথায়? আবু কুহাফার ছেলে (আবু বকর) কোথায়? খাত্তাবের ছেলে (উমার) কোথায়?’
.
উমার (রদিয়াল্লাহু আনহু): এই যে রাসূলুল্লাহ ﷺ ! এই হলেন আবু বকর, আর এই যে আমি উমার!
.
আবু সুফিয়ান: আজকের এইদিন হলো বদরের সেই দিনের প্রতিশোধের সমান! আর যুদ্ধ তো একটি (চলমান) অমীমাংসিত ব্যাপার, যেখানে উভয়পক্ষই পালাক্রমে বিজয়ী হয়!
.
উমার (রদিয়াল্লাহু আনহু): এটা সমান সমান নয়! আমাদের নিহতরা তো জান্নাতে! আর তোমাদের নিহতরা জাহান্নামে!
.
আবু সুফিয়ান: এটা কেবল তোমাদের বিশ্বাস। আর এমনটা বাস্তবেই হয়ে থাকলে আমরা ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত!
.
.
আজকের আলাপে বর্ণনার প্রাসঙ্গিক অংশ এটুকুই। সুবহানআল্লাহ! সুবহানআল্লাহ! আল্লাহর কসম করে বলছি, ঈমান এবং কুফরের চলমান দ্বন্দ্বে উল্লেখিত এই বাকযুদ্ধে কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর রাস্তার মু*জা-হি/দ আর তাঁদের সমর্থকদের খোরাক রয়েছে। আর জবাব রয়েছে মু*জা-হি/দ'দের মানহাজের বিরোধিতাকারীদের; হোক তারা কাফির, মুসলিম নামধারী মুনাফিক কিংবা জাহিল মুসলিম। ইতিহাসে এমন কতোবারই না হয়েছে – দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য আল্লাহর রাস্তার মু*জা-হি/দ'রা কাফিরদের ওপর কোনো হামলা করেছে। তারপর সেই ঘটনার দোহাই দিয়ে কাফিররা মুসলিমদের ওপরও আগ্রাসন কিংবা ড্রোন হামলা চালিয়েছে। আর তাতে মুসলিমদের জানমালের বাহ্যিক ক্ষয়ক্ষতি দেখেই কতো কাফিররা খুশি হয়ে গেছে, কতো মুনাফিকরা আল্লাহর রাস্তার নববী মানহাজকে বাতিল সাব্যস্ত করতে উদ্যত হয়েছে, আর কতো জাহিল মুসলিমরা আল্লাহর সেনাদলকেই তিরস্কার করে বসেছে। অথচ বাস্তবতা হলো, আমাদের নিহতরা তো জান্নাতে! আর ওদের নিহতরা জাহান্নামে!
.
কাফিরদের কথা তো বাদই দিলাম। ওরা তো আল্লাহর রাস্তার মু*জা-হি/দ'দের দোষ দিবেই। কিন্তু দুঃখজনক হলো মুসলিম উম্মাহর মধ্য থেকেই এসব ব্যাপারে কাফিরদের পক্ষপাতিত্ব করা অভাগাদের কার্যকলাপ। এদের জন্য সত্যিই আফসোস। এদের কথা-কাজে ইসলাম ও ইসলামের মু*জা-হি/দ'দের উপকার তো হয়ই না, তার চেয়ে বরং উল্টোটাই বেশি হয়; সাধারণ মুসলিমরা মু*জা-হি/দ'দের ব্যাপারে বিভ্রান্ত হয়। এবং অবশ্যই তাদেরকে এইসব ব্যাপারে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। সত্য হলো, এইসমস্ত আলাপ জুড়নেওয়ালাদের কেউ আল্লাহর রাস্তায় জি@হা@দের মানহাজকেই অপছন্দ করে; কেউ আবার জি@হা@দের মানহাজকে মুখে স্বীকৃতি দিলেও এই যুগের মু*জা-হি/দ'দের সমালোচনা করতে গিয়ে এসব বলে, নাহলে যে আবার নিজের ওপর মু*জা-হি/দ'দেরকে যথাসাধ্য সহায়তার ফারজিয়্যাত এড়ানো কষ্ট হয়ে যায়; আর কেউ কেউ স্রেফ নিজের ঘরকুনে স্বভাব লুকিয়ে বিশেষজ্ঞ সাজতেই এসব বলে বেড়ায়।
.
বিশেষ করে একবিংশ শতাব্দীর সূচনালগ্নে যে বরকতময় ৯/১১ আক্রমণের মাধ্যমে যুগের হুবাল আমেরিকার পতনের শুরু, সেই হামলাকেও মুসলিমদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির দোহাই দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে। ‘৯/১১ এর কারণে এই হয়েছে, ওই ক্ষতি হয়েছে... আ-ফ-গা-নি-স্তা-নে এত এত সাধারণ মুসলিমের জানমালের ক্ষতি হয়েছে... পুরো দেশটা ধ্বংস হয়ে গেছে... সবই ৯/১১ এর কারণে হয়েছে। মু*জা-হি/দ'রা যদি ওই আক্রমণটাই না করতো, তাহলে তো কাফিররা আক্রমণ করতো না... ইত্যাদি ইত্যাদি।’
.
জবাবে আমরা বলি, আরও আগের কয়েক দশক ধরেই তো আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল; আরও অনেক আগে থেকেই তো পবিত্র ভূমিগুলো কাফিরদের আগ্রাসনের স্বীকার হচ্ছিল; মুসলিমদের দ্বীন, ইজ্জত আর জানমালকে তুচ্ছজ্ঞান করা হচ্ছিল। ইরাকে কয়েক লক্ষ শিশুকে হত্যা করা হয়েছিল। আর এই সবকিছুই তো ছিল বরকতময় মানহ্যাটান রেইডের আগেই! জবাবে আমরা বলি, পরবর্তীতে যখন ডব্লিউ.এম.ডি. [৩] এর মিথ্যা বাহানা দিয়ে গোটা ইরাককে ধ্বংস করা হলো, তখনও তো কাফিরদের ওজর ৯/১১ ছিল না। আর এটা প্রমাণ করে দেয় যে, মুসলিমদের ওপর আগ্রাসনের জন্য ওদের কোনো সত্য ওজর লাগে না।
.
জবাবে আমরা বলি, ৯/১১ এর বরকতময় হামলার ফলে আমেরিকা আর তার মিত্র কাফিরদের হওয়া ক্ষতির দায় (আদতে কৃতিত্ব) আ/ল-কা/য়ে/দা/র মু*জা-হি/দ'দের। আর তারপর আ-ফ-গা-নি-স্তা-নে কাফিরদের করা হামলায় মুসলিমদের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির দায় কাফিরদের। জবাবে আমরা বলি, আল্লাহর ইচ্ছায় ৯/১১ এর জের ধরেই তো দেড় যুগ পরের আ-ফ-গা-নি-স্তা-নে ‘আপোষহীন’ ইসলামি শরিয়াহ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এসব ছাড়াও... সমস্তকিছু ছাপিয়ে... জবাবে আমরা বলি, “আমাদের নিহতরা তো জান্নাতে! আর ওদের নিহতরা জাহান্নামে!”
.
وَلَا تَهِنُوا فِي ابْتِغَاءِ الْقَوْمِ ۖ إِنْ تَكُونُوا تَأْلَمُونَ فَإِنَّهُمْ يَأْلَمُونَ كَمَا تَأْلَمُونَ ۖ وَتَرْجُونَ مِنَ اللَّهِ مَا لَا يَرْجُونَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا
.
“আর তোমরা (শত্রু) কওমকে ধাওয়া করতে দুর্বলতা দেখিয়ো না; যদি তোমরা কষ্ট পেয়ে থাকো, তাহলে তোমাদের মতো ওরাও তো কষ্ট পায়; আর (বাস্তবতা তো হলো) তোমরা আল্লাহর কাছে এমন কিছুর আশা করো, যা ওরা আশা করে না। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান।” [৪]
.
আবু উবাইদাহ আল-হিন্দি
২ রজব, ১৪৪৫ হিজরি
.
.
টিকা –
.
[১] মুসনাদে আহমাদ, ১/২৮৭, ২৮৮, ৪৬৩; মুসতাদরাক আল-হাকিম ২/২৯৬, ২৯৭, তিনি বলেন, ‘এর ইসনাদটি সহিহ, তবে বুখারি ও মুসলিম এটি উল্লেখ করেননি; যাহাবি তার সাথে একমত।
.
[২] সহিহুল বুখারি, অধ্যায়: যুদ্ধবিগ্রহ, পরিচ্ছেদ: উহুদ যুদ্ধ, হাদিস নং ৪০৪৩; আবু দাউদ, অধ্যায়: জিহাদ, হাদিস নং ২৬৬২ ও অন্যান্য।
.
[৩] WMD এর পূর্ণরূপ Weapons of Mass Destruction। আভিধানিক অর্থ বিরাটাকারে ধ্বংসযজ্ঞ হয় এমন অস্ত্র। সাধারণত পারমাণবিক অস্ত্রকে বোঝানো হয়।
.
[৪] সূরাহ নিসা, ৪: ১০৪

0 likes | 1 views