আসন্ন আমেরিকার ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প নির্বাচিত হলে মুসলিমদের লাভ-ক্ষতির সম্ভাবনা প্রসঙ্গে
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
بِسْمِ اللهِ والصلاة والسلام على رسول الله، وعلى آله وأصحابه ومن والاه
.
আজকের আলোচ্য বিষয়ের শিরোনাম হচ্ছেঃ আমেরিকার ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হলে মুসলিমদের লাভ-ক্ষতির সম্ভাবনা প্রসঙ্গে।
.
আমরা ইতিমধ্যেই অবগত আছি যে, আমেরিকায় ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসের ০৫ তারিখে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুনরায় নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রিপাবলিকান পার্টির সদস্য ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।
.
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এ পর্যন্ত সকল জনমত জরিপে ডোনাল্ড ট্রাম্প বাইডেনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। আজকের আলোচনাটা মূলত এজন্যই করা। কারণ, জনমত জরিপে ট্রাম্পের এগিয়ে থাকার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই অনেক ধরনের মন্তব্য ও মতামত ব্যক্ত করেছে। অনেকে বলতে চাচ্ছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে মুসলিমদের জন্য ভালো হবে। কারণ, ট্রাম্পের কারণে আমেরিকার আন্তর্জাতিক ক্ষমতার প্রভাব অনেক কমে যাবে, এতে মুসলিম বিশ্বে আমেরিকার হস্তক্ষেপ কমে যাওয়ায় মুসলিমদের অনেক উপকার হবে। আবার অনেকেই বলতে চাচ্ছে, ট্রাম্প বিজয়ী হলে মুসলিমদের জন্য, বিশেষ করে আমেরিকান মুসলিমদের অবস্থা আরো খারাপ হবে, যে সকল মুসলিমরা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া ভালো মনে করছেন তারা আসলে মুসলিমদের ভালো চাচ্ছে না, উম্মাহর প্রতি তাদের কোন দরদ নেই, ট্রাম্পের কারণে মুসলিমরা অনেক চাপে পড়বে এতে তারা খুশি হচ্ছে ইত্যাদি কথা শোনা যাচ্ছে।
.
তো বাস্তবে ব্যাপারটি আসলে কি?? এই বিষয়টা ক্লিয়ার করার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ। ওয়ামা তাওফীকী ইল্লা বিল্লাহ।
.
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, বর্তমানে আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটা শুধু আমাদের কথা নয় বরং এটা বেশিরভাগ পশ্চিমা বিশ্লেষকদেরও ধারণা যে, ট্রাম্প হচ্ছে আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। কেননা পৃথিবীর প্রতিটি রাষ্ট্রকে দীর্ঘ সময় স্থিতিশীলভাবে টিকে থাকতে হলে তাকে একটি আদর্শের উপর থাকতে হয়। আদর্শ ছাড়া কোন জাতি কখনো দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে পারে না। আদর্শ ছাড়া হয়ত ৪০/৫০ বছর বা তারও কিছু বেশি সময় রাষ্ট্র টিকে থাকবে, কিন্তু একটি সময় রাষ্ট্রের পতন অবশ্যই হবে। যে বিষয়ে ইবনে খালদুন রহমাতুল্লাহি আলাইহির সাম্রাজ্যের জীবনকাল সংক্রান্ত থিওরি থেকেও ধারণা পাওয়া যায়। রাষ্ট্র যদি তার জাতিকে একটি আদর্শের উপর একীভূত না করে, তাহলে ঐ রাষ্ট্র দীর্ঘ কয়েকশ বৎসর টিকে থাকতে পারবে না।
.
আমেরিকা এখন পর্যন্ত যে আদর্শের উপর টিকে আছে ট্রাম্প মূলত সেই আদর্শে বিশ্বাস করে না। শুধু বিশ্বাস করে না ব্যাপারটা তা নয় বরং ট্রাম্প আমেরিকার বর্তমান আদর্শের ঘোর বিরোধী এবং গত মেয়াদে ট্রাম্প আমেরিকার আদর্শের বাহিরে গিয়ে অনেক কাজও করেছে।
.
আমেরিকার যে ফরেন পলিসি বা পররাষ্ট্র নীতি (BLOB) আছে, এর মাধ্যমেই আমেরিকা তার ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বৈশ্বিকভাবে টিকিয়ে রেখেছে। ট্রাম্প এই ফরেন পলিসির সাথে একমত না। শুধু ট্রাম্পই যে একমত হতে পারিনি তা নয়, এর আগে বারাক ওবামাও পুরোপুরি একমত ছিল না। কিন্তু বারাক ওবামা রাজনীতিবিদ হওয়ায় অনেক চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই ফরেন পলিসি নিয়ে এত বিরোধিতা করেনি। কিন্তু ট্রাম্প রাজনীতিবিদ নয় বরং ব্যবসায়ী। যেটা ভালো মনে করে সেটাই হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। এটাই আমেরিকার জন্য বড় সমস্যা।
.
এখানে দুইটি প্রেক্ষাপট সামনে আসেঃ
.
প্রথম প্রেক্ষাপটঃ
.
একটি দেশ আভ্যন্তরীণভাবে টিকে থাকে তার প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যত স্বাধীন ও শক্তিশালী হয়, ঐ দেশ তত স্থিতিশীল থাকে ও টিকে থাকে। প্রতিষ্ঠান বলতে দেশের আইন ও বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দূর্নীতি দমন কমিশন, গোয়েন্দা সংস্থা, সেনাবাহিনী, মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী মহল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জনগণ, দেশের ক্ষমতাসীন সরকারকে, গণতান্ত্রিক দেশ হলে নির্বাচন কমিশন ইত্যাদিকে প্রতিষ্ঠান বুঝায়। তো এই সকল প্রতিষ্ঠান এরা পরস্পরকে একটি নজরদারী ও ভারসাম্যের মধ্যে রাখে। সরকার যখন দেশের আদর্শ ও নীতির বাহিরে কোন কাজ করে, তখন এই সকল প্রতিষ্ঠান সরকারের সমালোচনা করে, সরকার সংবিধান পরিপন্থী কোন আইন বা কাজ করলে বিচার বিভাগ তাতে হস্তক্ষেপ করে, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীরা সমালোচনার পাশাপাশি উপদেশ প্রদান করে, জনগণ প্রতিবাদ করে এতে সরকারকে স্বেচ্ছাচারিতা থেকে ফিরে আসতে বাধ্য করে। এর ফলে ক্ষমতা কেবল একজনের মধ্যে কেন্দ্রীভূত থাকে না। কারণ, ক্ষমতা এককেন্দ্রিক হলে দেশে সুশাসন ও ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হয়, জনগণের ন্যায়সঙ্গত স্বাধীনতা খর্ব হয়। এতে সরকার ধীরে ধীরে স্বৈরাচারী হয়ে উঠে। একসময় রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। এরকম নজীর অহরহ আছে।
.
এজন্য যখন কোন দেশে স্বৈরাচার সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন ঐ সরকারের প্রথম কাজ থাকে সরকারকে নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন সকল প্রতিষ্ঠানকে নিজের করায়ত্ত করা। এটা সকল স্বৈরাচারী সরকারই করে থাকে। যেমনঃ বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার। এরা দেশের আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী সহ সকল কিছু নিয়ন্ত্রণ করে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। ভারতের নরেন্দ্র মোদী সরকারও একই পথে হাঁটার চেষ্টায় আছে।
.
ট্রাম্প আমেরিকাতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ইউরোপ আমেরিকার আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া বাস্তবেও তুলনামূলক অনেক স্বাধীন ও শক্তিশালী। ট্রাম্প এই সব প্রতিষ্ঠানকে জোর করে তার পক্ষে কথা বলানোর চেষ্টা করেছে। ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট হলে এই সব স্বৈরাচার আরো বাড়তে পারে। ফলে আমেরিকাতে সুশাসন ও ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এরকম হলে আমেরিকা তার আদর্শ হতে বের হয়ে যাবে, এতে একসময় আমেরিকার জনগণ ও মিত্ররা মুখ ফিরিয়ে নিবে। এভাবেই ট্রাম্পের মাধ্যমে আমেরিকা আভ্যন্তরীণভাবে দূর্বল হয়ে পড়তে পারে। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী যেভাবে তাদের দেশকে দূর্বল করেছে, ট্রাম্প সেটাই করতে চাচ্ছে। এতে রাষ্ট্র দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে পারবে না।
.
ইবনে তাইমিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহির বিখ্যাত একটি উক্তি আছে। তা হলোঃ
«مجموع الفتاوى» (28/ 63):
«" {الله ينصر الدولة العادلة وإن كانت كافرة ولا ينصر الدولة الظالمة وإن كانت مؤمنة} "»
"নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা ন্যায়পরায়ণ রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখেন যদিও তা কাফের রাষ্ট্র হয়। কিন্তু, আল্লাহ তায়ালা জালিম রাষ্ট্রকে টিকিয়ে রাখেন না যদিও তা মুমিনদের রাষ্ট্র হয়"। -মাজমুউল ফাতাওয়া: ২৮/৬৩
.
আমেরিকা যদিও বিশ্ব মোড়ল তবু তার অভ্যন্তরীণ অনেক সমস্যা আছে। এখনো বর্ণবাদী সমস্যা প্রকট, বন্দুক হামলা, যৌন হয়রানি, দারিদ্র্যতা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রায় ব্যয় বৃদ্ধি, ডিভোর্স সহ নানান রকম সমস্যা রয়েছে।
.
দ্বিতীয় প্রেক্ষাপটঃ
.
আন্তর্জাতিকভাবে আমেরিকা বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে চুক্তির মাধ্যমে তার মিত্র তৈরি করে প্রভাব প্রতিপত্তি ধরে রেখেছে। ইউরোপকে রাশিয়ার আক্রমণ হতে রক্ষায় ন্যাটো গঠন, এশিয়াতে কোয়াড গঠন, তাছাড়া জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান আমেরিকার মিত্র, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে মিত্র তৈরি করে প্রভাব ধরে রেখে বিশ্ব শাসন করছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে আমেরিকার এই সকল মিত্রদের সাথে সম্পর্ক তিক্ত হতে পারে, ফলে মিত্ররা আমেরিকার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে, ট্রাম্পের কারণে তা মারাত্মক ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। কেননা সে বারবার ন্যাটো সহ অন্যান্য মিত্র ও চুক্তির ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করে আসছে।
.
এখন মূল আলোচনায় আসা যাক। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে মুসলিমদের কতটুকু লাভ-ক্ষতি হবে তা দেখা যাক। বিশ্বে নতুন শক্তির উত্থানের জন্য খুবই জরুরী হলো, বর্তমান শক্তির উপস্থিতি বা কর্তৃত্ব না থাকা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনেও এরকম ঘটনা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়ে আরবে কোন সুপার পাওয়ারের উপস্থিতি ছিল না। রোমানদের কিংবা পারস্যদের কোন ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব আরবে ছিল না। যার কারণে তৎকালীন সময়ে মুসলিমদের উত্থান অনেক সহজ ছিল। এটা আল্লাহ তায়ালার একটি সুন্নাহ।
.
তাই মুসলিমদের উত্থানের জন্য আমেরিকার শক্তি খর্ব হওয়া খুবই জরুরী। আমেরিকা যত তাড়াতাড়ি তার খোলসে ঢুকে যাবে অর্থাৎ বিশ্বের মোড়লগিরির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে, মুসলিমদের সুপার পাওয়ার হওয়াটা তত তাড়াতাড়ি হবে। আল কা-য়ে*দা-র কৌশল হলো, কুফর নামক সাপের মাথা আমেরিকাকে তার স্বার্থে ক্রমাগত আঘাতের মাধ্যমে দূর্বল করে তার খোলসে ঢুকিয়ে দেওয়া। যাতে আমেরিকার অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এতে মুসলিমদের পুনঃউত্থান ত্বরান্বিত হবে ইনশা আল্লাহ।
.
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ট্রাম্পের কারণে আমেরিকান মুসলিমদের অসুবিধা হবে কিনা? হ্যাঁ, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়াতে আমেরিকান মুসলিমরা বিভিন্ন অসুবিধা ও হয়রানির শিকার হবে এটা সত্য। বিশ্বের যেকোন প্রান্তের মুসলিমদের সামান্য কষ্টও হোক এটা আমরা কখনোই চাই না। চাই সে মুসলিম গুনাহগার হোক বা পরহেজগার। এমনকি পৃথিবীর যেকোন প্রান্তরে একজন কাফিরের উপরও যদি জুলুম হয়ে থাকে, তাও আমাদেরকে ব্যথিত করে এবং আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সামর্থ্য দিলে আমরা তাদেরকেও জুলুম থেকে রক্ষা করতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ।
.
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ
অর্থঃ তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানব জাতির জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। (সূরা আলে ইমরান, আয়াতঃ ১১০)
.
প্রত্যেকটি কাজের লাভ-ক্ষতি দুটোই থাকে। আর, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে সামগ্রিকভাবে মুসলিমদের ক্ষতির চেয়ে লাভটাই বেশি হবে। এখানে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়, তা হচ্ছে: ট্রাম্পের কারণে সাময়িক ৪/৫ বছর হয়ত আমেরিকার মুসলিমদের কিছু অসুবিধা হবে, কিন্তু ট্রাম্পের কারণে আমেরিকার যে মারাত্মক ক্ষতি হবে, তা গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য স্থায়ীভাবে লাভ হবে এবং মুসলিমদের উত্থানের পথ সুগম হবে ইনশা আল্লাহ।
.
আমেরিকার পতনের মাধ্যমে বিভিন্ন মুসলিম দেশে ইসলামী ইমারাহ বা খিলাফাহ প্রতিষ্ঠিত হলে মুসলিমদের পাশাপাশি কাফেররাও সুখে শান্তিতে থাকবে। গোটা মানবজাতি ও দুনিয়ার জীবজন্তুরাও নিরাপদ থাকতে পারবে ইনশা আল্লাহ। তাই ট্রাম্পের বিজয়ী হওয়ায় আমেরিকান মুসলিমদের সাময়িক অসুবিধা হলেও আমেরিকার শক্তিক্ষয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতে গোটা উম্মাহর জন্য তা অনেক বেশি কল্যাণকর হতে পারে ইনশা আল্লাহ। বাইডেনের মতো মানুষ যদি আমেরিকার ক্ষমতায় থাকে, তাহলে আমেরিকার মুসলিমদের কিছু সুবিধা হলেও গোটা উম্মাহর জন্য তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। বারাক ওবামা আমেরিকার সব প্রেসিডেন্টের চাইতে মুসলিমদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে, অথচ সে আমেরিকার মুসলিমদের কাছে খুব জনপ্রিয় ছিলো। তাই ট্রাম্পের মতো লোক আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হলে আমেরিকার যে ক্ষতি করবে, তা মুসলিম উম্মাহর জন্য সামগ্রিকভাবে ক্ষতির চেয়ে লাভ অনেক বেশি হবে।
.
তবে, এই বিশ্লেষণ এবং অনুমান স্বাভাবিক ঘটনাপ্রবাহের আলোকে জন্নে গালেব বা প্রবল ধারণার ভিত্তিতে করা হচ্ছে। কিন্তু রাজনীতিতে সুনিশ্চিত করে ভবিষ্যৎবাণী করা সম্ভব নয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসা সত্ত্বেও আমেরিকা পরবর্তীতে তার ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারা অসম্ভব নয়। তাই উপরোক্ত অনুমানগুলোকে অকাট্য ও সুনিশ্চিত মনে করার পরিবর্তে সম্ভাব্যতার দৃষ্টিকোণ থেকেই বিবেচনা করতে হবে।
.
অপরদিকে ভারতের নরেন্দ্র মোদী আবারো ক্ষমতায় আসলে উপমহাদেশের মুসলিমদের, বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশের মুসলিমদের লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে। মোদী সরকার ইসরাইলের প্লান ফলো করে পরিকল্পিতভাবে মুসলিম নিধনে লেগেছে। তাই এখানে একতরফাভাবে উপমহাদেশের মুসলিমদের উপর কেবল জুলুম-ই বাড়বে। তাই মোদী সরকার আবার ক্ষমতায় আসলে ভারত ও বাংলাদেশের মুসলিমদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। (আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন)
.
অনেকে আবেগের বশে মোদী আসাকে ভালো মনে করেন। মনে করেন যে, মোদী আসলে নির্যাতনের শিকার হয়ে উম্মাহ জাগ্রত হবে। নিজ উম্মাহর প্রতি এ ধরণের চিন্তা খুবই নিকৃষ্ট। আপনি নিশ্চয় চাইবেন না আপনার পিতাকে কেউ হত্যা করে, আপনার বোনের গায়ে হাত দিয়ে আপনার গাফিল হয়ে থাকা ভাই জাগ্রত করুক! তাহলে কীভাবে আমরা এই উম্মাহর পিতা আর বোনদের ব্যাপারে এমনটি ভাবি!!! মাআযাল্লাহ!
.
আজকের আলোচনা এই পর্যন্তই। আল্লাহ তায়ালা কাফের মুশরিকদের অত্যাচার নির্যাতন হতে মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা করুন। আমীন।

~আবু উবাইদাহ আল হিন্দী


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে