দিন দিন শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও শৃংখলাবোধ কমতে কমতে একেবারে তলানীতে। কিছু শিক্ষার্থীদের মাঝে এ বোধ একটু থাকলেও বেশীর ভাগ শিক্ষার্থীর মাঝে নেই বললেই চলে।স্কুল পর্যায় থেকেই শিক্ষক ও গুরুজনের সম্মান দেখাতে একেবারেই তাদের অনীহা। একসময় শিক্ষক দেখলে এগিয়ে গিয়ে সালাম দেওয়ার প্রবণতা ছিল, এখন যেন দেখেও না দেখার ভান করে চলে যায়। পড়ালেখায় অমনোযোগী, শ্রেণিতে পাঠে মনোযোগ না দিয়ে শিক্ষককে পাঠদানে বিরক্ত করা। বাসায়ও পড়া লেখায় আগহী না হওয়া। শিক্ষক বয়োজ্যেষ্ঠ থেকে শুরু করে সবার সাথে তাদের অশিষ্ট আচরণ করা। এসব ত্রুটিপুর্ন আচরনের জন্য আসলে কারন কী ? আমি মনে করি এককভাবে কেউ দায়ী নয়, বরং অনেক বিষয় এখানে জড়িত । প্রথমত পরিবারের দ্বায়িত্বশীলদের কর্ম ব্যস্ততার জন্য তাদের সন্তানকে সময় না দেওয়া, তাদের পারিবারিক সু-শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা, তাদেরকে স্নেহ ভালবাসা না দেওয়া। যার ফলে এই পারিবারিক শিক্ষা স্নেহ বঞ্চিত সন্তানটি যখন বিদ্যালয় আসে সেখানে তার মতই অন্যান্যদের সাথে নিষিদ্ধ হওয়াতে তাদের শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে এবং সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখতে শিক্ষকদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে তা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার শিক্ষকতা পেশায় কিছু এদের মতই অশিষ্টদের প্রবেশ করাতে এ পথটি আর মসৃন নাই। অনেক শিক্ষকদের উদাসীনতা আর দ্বায়িত্বহীনতা শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা প্রদানের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা নামে তাদের পাঠ্য বই থাকলেও তাতে আলাদাভাবে নৈতিক শিক্ষার ব্যবহারিক কোন আলোচনা নাই। অপরদিকে আইন শৃংখলাবাহীনির যথেষ্ট তৎপরতার অভাব রয়েছে। বিদ্যমান কিশোর গ্যাং নির্মূল হচ্ছে না, ফলে তাদের উঠতি বয়েসের কিশোরদের দৌড়াত্ব বাড়ছে। বিদ্যালয়ের আশে পাশে সাদা পোষাকে আইন শৃংখলাবাহীনির তৎপরতা না থাকায়, বিভিন্ন আসাধু চক্রের সাথে তাদের যোগাযোগের কারনে নেশাসহ বিভিন্ন অপরাধ কাজে যোগদানের প্রবণতা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট সকলের একযোগে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এ ভয়ংকর সামজিক ব্যাধি দমন করা সম্ভব নয়। এই সমস্যা দিন দিন আরও প্রকট আকার ধারন করার আগে জরুরী প্রয়োজন সামগ্রিকভাবে সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, যাতে ভবিষ্যতে সুন্দর দেশের জন্য সুনাগরিক গড়ে তুলতে পারি।

মোঃ শাহাদৎ হোসেন
(লেখক,গবেষক ও সমাজকর্মী )
শিক্ষক, দোসাইদ একে স্কুল এন্ড কলেজ
আশুলিয়া,সাভার, ঢাকা
০১৭১২-২৬৭৭২৮
ইমেইলঃ shadu_cu07@yahoocom


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে