হিন্দু ধর্মমতে বিবাহ হচ্ছে স্বামী ও স্ত্রী’র মধ্যে এমন এক পবিত্র বন্ধন যা মৃত্যুর পরও অটুট থাকে। হিন্দু বিবাহ কোনো চুক্তি নয়; হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে আদিকাল থেকেই শাস্ত্র মোতাবেক প্রচলিত প্রথা ও রীতি অনুযায়ী বিবাহ সুসম্পন্ন হয়ে আসছে। ফলে অতীতে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধনেরও কোন বিধান ছিল না। সময়ের পরিবর্তনে ও সমাজের চাহিদার তাগিদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্রীয় বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার লক্ষ্যে ২০১২ সালে বাংলাদেশে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন, ২০১২ প্রণীত হয়।
হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন, ২০১২ এর ৪ ধারা অনুসারে, “হিন্দু বিবাহ নিবন্ধনের উদ্দেশ্যে, সরকার, সিটি কর্পোরেশন এলাকার ক্ষেত্রে তদ্কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত এলাকা, এবং সিটি কর্পোরেশন বহির্ভূত এলাকার ক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলা এলাকায় একজন ব্যক্তিকে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করিবেন।” অর্থাৎ হিন্দু বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে সিটি কর্পোরেশন এবং সিটি কর্পোরেশন বহির্ভূত এলাকার ক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলায় সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত হিন্দু বিবাহ নিবন্ধকের নিকট বিবাহ নিবন্ধন করা যাবে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক কোন হিন্দু পুরুষ বা নারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে তা এই আইনের অধীন নিবন্ধনযোগ্য হবে না।
বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়। এই আইনের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে হিন্দু বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এই আইনের ৩(২) ধারা মোতাবেক কোন হিন্দু বিবাহ এই আইনের অধীন নিবন্ধিত না হলেও কোন হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সম্পন্ন বিবাহের বৈধতা ক্ষুণ্ন হবে না।
হিন্দু বিবাহ নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন সরকারি চাকুরী হিসেবে গণ্য হবে না। তবু্ও যদি কোন হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক তাহার দায়িত্ব পালনে কোন অসদাচরণের জন্য দায়ী হয়, তাহলে সরকার যথাযথ কারণ দর্শানোর সুযোগ প্রদান করে তার নিয়োগ অনধিক দুই বৎসরের জন্য স্থগিত বা বাতিল করতে পারে।
~ Russell Biswas
Advocate,
Judges’ Court, Chittagong
Mo - 01746-022550