সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনকারীদের দাবীর প্রেক্ষিতে সরকার ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮ নামে নতুন একটি আইন প্রণয়ন করেন।


 এই আইনের ১০৫ ধারায় বলা হয়েছে, মোটরযান চালনাজনিত কোনো দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে কোনো ব্যক্তি আহত হলে কিংবা মারা গেলে, তৎসংক্রান্ত অপরাধসমূহ বাংলাদেশ দণ্ডবিধি অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আরও বলা হয়েছে যে, দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৩০৪খ তে যাই থাকুক না কেন, কোনো ব্যক্তি বেপরোয়া বা অবহেলাজনিত মোটরযান চালনার কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত হলে কিংবা তার প্রাণহানি ঘটলে, উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক ০৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৩০৪খ ধারায় বেপরোয়া বা অবহেলাজনিত মোটরযান চালনায় গুরুতর আহত করা বা মৃত্যু ঘটানোর ক্ষেত্রে মাত্র ৩ বৎসর কারাদণ্ড উল্লেখ আছে বিধায় মামলার ক্ষেত্রে ২০১৮ সালে প্রণীত আইনের ১০৫ ধারা প্রাধান্য পাবে। 


সড়ক পরিবহণ আইন, ২০১৮ এর ৯৮ ধারা অনুসারে, “যদি নির্ধারিত গতিসীমার অতিরিক্ত গতিতে বা বেপরোয়াভাবে বা ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং বা ওভারলোডিং বা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে মোটরযান চালনার ফলে কোনো দুর্ঘটনায় জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি সাধিত হয়, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট মোটরযানের চালক বা কন্ডাক্টর বা সহায়তাকারী ব্যক্তির অনুরূপ মোটরযান চালনা হইবে একটি অপরাধ, এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ড, বা অনধিক ০৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং আদালত অর্থদণ্ডের সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে প্রদানের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।” 


উক্ত আইনে অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্রের জন্যে দণ্ডের পাশাপাশি অপরাধ পুনঃ সংঘটনের ক্ষেত্রে দ্বিগুণ দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এই আইনের ধারা ৮৪, ৯৮ ও ১০৫ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ জামিন-অযোগ্য; এবং ধারা ৬৬, ৭২, ৭৫, ৮৭, ৮৯ এবং ৯২ এর অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আপোষযোগ্য। আঞ্চলিক এখতিয়ারসম্পন্ন কোনো জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী বা অন্যূন অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ বা সম-মর্যাদাসম্পন্ন কোনো পুলিশ অফিসার এই আইনের অধীন আপোষযোগ্য অপরাধসমূহ আপোষ-মীমাংসা করতে পারবেন।


 ~ Russell Biswas 

Advocate,

Judges’ Court, Chittagong

 Mo – 01746-022550


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে