জীবন একটাই সুস্থ্য থাকুন সঠিক জীবন যাপন উপভোগ করুন। অনেক কম সময়ে জীবনের এমন কিছু করা যাবে না যেটা আপনার সুন্দর জীবন ধ্বংস করে দেয় এবং জীবনের সকল প্রকার উপভোগে বাঁধা সৃষ্টি করে। ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুসকে সুস্থ্য ফুসফুস দ্বারা প্রতিস্থাপন করা যায় সেক্ষেত্রে সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়। তবে সেই ফুসফুস পূর্বের সুস্থ্য ফুসফুস এর মত বাস্তবসম্মত হয় না। প্রতিস্থাপনযোগ্য ফুসফুস পরিবর্তন প্রয়োজন হলে সুস্থ্য ফুসফুসের একজন জীবিত মানুষকে হত্যা করে ফুসফুস বের করে দেহের মধ্যে প্রবেশ করানো যায়। ফুসফুস সম্পর্কে নিচে দশটি বিষয়ে সঠিকভাবে আলোচনা করা হয়েছে।


ধূমপান ছাড়ার উপায়

ধুমপান ত্যাগ করার দশটি উপায়
১. নিজে পরিকল্পনা তৈরী করুন:
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করুন ধূমপান ছাড়ার জন্য স্বচ্ছ পরিকল্পনা তৈরী করুন। ধুমপান ছাড়তে নিজে প্রতিজ্ঞা করুন নির্দিষ্ট তারিখ এর মধ্যে ধুমপান ছাড়বেন। যে তারিখ তৈরী করেছিলেন সে তারিখ অনুযায়ী কোনভাবেই পরিবর্তন করা যাবে না। ধুমপান ছাড়তে নির্দিষ্ট সময় সঠিকভাবে নিজের মনকে ভালোভাবে বোঝাবেন, যাতে ধূমপান ছাড়ার জন্য শেষ তারিখ তৈরী হয়। প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী ধুমপান ছাড়ার তারিখের পরে ধুমপান করে এমন বন্ধুদের সাথে কোনো আনন্দ অনুষ্ঠান বা মিলন মেলা থাকলেও এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করুন।


২. নিজে নির্দিষ্ট তালিকা তৈরী করুন: কি কারণে ধূমপান ছেড়ে দিবেন, সেই তালিকা তৈরি করুন। বিভিন্ন প্রকার কারণসমূহ পাবেন ধূমপান ত্যাগ করার। গভীর চিন্তা করে নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত তৈরী করে এক পর্যয়ে নির্ধরিত সময় তৈরি করুন। নির্ধারিত সময়ে আপনার স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এবং ধূমপান করার জন্য আপনার আশপাশে থাকা অনেক মানুষের সু-স্বাস্থ্যের ক্ষতি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর ধূমপানের সৃষ্টি, অর্থ অপচয় ইত্যাদি থাকা আবশ্যক। যখন ধুমপানের কথা মনে হবে, তখনই আর্থিক অপচয়ের কথা ভাবতে শুরু করবেন। সেক্ষেত্রে আপনার ধূমপান করার প্রতি আগ্রহ ধীরে ধীরে কমতেই থাকবে।


৩. সর্তক থাকুন: পূর্বেও আপনি যখন ধূমপান ত্যাগ করার পরিকল্পনা করে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ হয়েছেন। বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী পূর্বের পরিকল্পনার মতো সফলতার মুখ দেখবে না, এরকম পরিকল্পনা কোন ভাবে চিন্তা করা যাবে না। কারণ আপনার এবার বর্তমানে ধুমপান প্রচেষ্টা সফল হবেই হবে এরকম নিজের ভিতর আত্মবিশ্বাস তৈরী করুন। পূর্বের ভুলগুলো কোনভাবেই না চলে আসে, সেই বিষয়ে কঠিনভাবে সর্তক থাকতে হবে।


৪. খাবারের পরিবর্তন:
দুপুর অথবা রাতে খাওয়ার পর অনেক ব্যক্তি ধূমপান করতে পছন্দ করেন। গবেষণা বলা হয়েছে, অনেকের কাছে চর্বি জাতীয় খাদ্য খাওয়ার পর ধূমপান করার উত্তেজনা হয়ে ওঠে। এদিকে আবার ফল অথবা সবজি জাতীয় খাওয়ার পর ধূমপান কিছুটা স্বাদ হারায়। সেক্ষেত্রে ধূমপান ত্যাগ করতে চাইলে কিছুদিন চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে খাবারের তালিকায় সবজি, নিরামিশ এবং ফলমূল রাখতে পারেন।খাওয়া শেষ হলেই নিজের কর্মস্থান বা ঘরে চলে যাবেন, কারণ সেখানে কোন প্রকার ধূমপান করার সুযোগ নেই।


৫. পরিবর্তন করুন পানীয়: বিভিন্ন গবেষকগণ বলছেন, অ্যালকোহল মিশ্রিত পানীয়, কোমলপানীয়, চা এবং কফি পান করার সময় অনেকে মনে করেন যোগ্য সংগত সিগারেট। সংগত সিগারেট পানীয়র স্বাদ অনেক বাড়িয়ে দেয়। এরকম পানীয় পান করার নেশা ত্যাগ করে ফলের রস এবং সঠিক বিশুদ্ধ মেনারেল ওয়াটার পানি পান করুন। বর্তমান বাজারে বিভিন্ন প্রকার রসালো ফল কিনতে পাওয়া যায়। সেসব ফল বাজার থেকে ক্রয় করে বাসায় ঘরোয়াভাবে জুস তৈরী করে খেতে পারেন।


৬. ব্যস্ততা তৈরী করুন: দিনে কোন কোন সময়ে আপনার ধূমপানের ইচ্ছা শক্তি অনেক বেশি জাগে, সে সময় শনাক্ত করুন। এরপর ওই সময়ে নিজেকে যেকোনো কাজের মধ্যে লাগিয়ে ব্যস্ত রাখুন। কোনো কাজ না থাকলে হাঁটাহাঁটি শুরু করুন। ব্যায়াম করা বা নিজের পরিবারের লোকজনের সাথে যেকোন কাজের বিষয়ে কথা বলে নিজেকে পুরোপুরীভাবে ব্যস্ত রাখুন। ব্যস্ততা বেড়ে গেলে ধূমপান করার কথা ভুলে থাকা একদম সহজ হবে।


৭. ধুমপান করে না এমন বন্ধু বাড়ান: ধূমপান ছাড়ার ক্ষেত্রে আপনার বাড়ীর আশপাশের বিভিন্ন মানুষের ভূমিকা অপরিসীম। সম্ভব হলে ধূমপায়ী বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া এড়িয়ে চলুন। ধূমপান ত্যাগ করার পর কয়েক দিন ধূমপায়ী বন্ধুদের সাথে সরাসরি আড্ডা দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। সেই সাথে ধুমপান করে না এমন সব বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।


৮. মুখ কোন সময় খালি রাখবেন না: যে সব ব্যক্তিরা ধুমপান করেন কোন সময় মুখ খালি রাখবেন না। মুখ খালি রাখলেই ধূমপানের কথা মনে পড়বে। ধূমপান একবারে বাদ দিতে চাইলে কোনভাবে মুখ খালি রাখা যাবে না। ধুমপান ছাড়া মুখ খালি না রাখতে চকলেট, লজেন্স বা চুইংগাম সঙ্গে রাখুন। সঙ্গে থাকা সিগারেট এবং গ্যাস বাতি ফেলে দিয়ে লজেন্স, চুইংগাম পকেটে রাখুন।


৯. প্রয়োজনে পরামর্শ নিন: ধূমপান পুরোপুরী ত্যাগ করেছেন, এমন কোন ব্যক্তি চেনা জানা থাকলে সেই ব্যক্তির কাছ থেকে সঠিক পরামর্শ নিন। যে ব্যক্তি কিভাবে ধুমপান সেই অভিজ্ঞতাগুলোকে সঠিকভাবে কাজে লাগান। অনলাইনে বিভিন্ন সোসাল মিডিয়ায় একাধিক গ্রুপ রয়েছে, যেখানে ধূমপান ত্যাগ করার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। এসব সোসাল মিডিয়ায় গ্রুপে জয়েন হওয়ার মাধ্যমে ধুমপান ছাড়ার ফল পাওয়া যেতে পারে।


১০. বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ: কোনোভাবে ধুমপান করার অভ্যাস কমাতে না পারলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যাওয়া নিয়ে লজ্জা বা হীনম্মন্যতার কোনো কারণ নেই। আপনার এই সঠিক পদক্ষেপ হাতে নেওয়ার মাধ্যমে আপনি নিজেকে ধূমপানের আসক্তি থেকে সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসতে পারবেন।


প্রতিবেদনটি ভালোভাবে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে