আয়রণ পয়জনিং কি?
যখন কোনো ব্যক্তি সাধারণত কম সময়ের ব্যবধানে অত্যাধিক পরিমাণে আয়রণ খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে, তখন শরীরে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ জমা হয়ে যায় যার ফলে আয়রণ পয়জনিং ঘটে। আয়রণ পয়জনিং বয়স্কদের চেয়ে শিশুদের মধ্যে বেশী দেখা যায়।

আয়রণ পয়জনিং এর প্রধান লক্ষন ও উপসর্গগুলি কি কি?

  • আয়রণ পয়জনিংএর প্রাথমিক উপসর্গ হল পেটে খিঁচুনি ধরা এবং পাকস্থলীতে অস্বস্তিবোধ।
  • কোনো ব্যক্তি অত্যধিক পরিমাণে আয়রণ গ্রহণ করলে তার মল কালো রঙের হয় বা মলের সাথে রক্ত দেখা দিতে পারে।
  • শরীরে পানিশূন্যতা ও প্রচন্ড বমি হওয়া।
  • যদি উপরোক্ত প্রাথমিক উপসর্গগুলি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঠিক না হয়, আরো গুরুতর উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এর মধ্যে আছে: শ্বাসকষ্ট, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, মাথাঘোরা, ত্বক নীলবর্ণ ধারণ করা, শরীরের অত্যধিক তাপমাত্রা।
  • উপসর্গগুলির বাড়াবাড়ি নির্ভর করে কি পরিমাণ আয়রণ গ্রহণ করা হয়েছে তার উপর।


আয়রণ পয়জনিং এর প্রধান কারণগুলো কি কি?
শিশুদের মধ্যে আয়রণ পয়জনিং এর সবচেয়ে পরিচিত কারণ হল অত্যধিক আয়রণ সম্পূরক হিসাবে গ্রহণ করা। এটা হয় যদি ছোট বাচ্চাদের উপর নজর না রাখা হয় বা ওদের নাগালের মধ্যে ওষুধপত্র রাখা থাকে।

আয়রণ সম্পূরক হিসাবে শিশু এবং বয়স্কদের অ্যানিমিয়ার কারণে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু যদি এটা চিকিৎসকের সাথে বিনা পরামর্শ করে দেওয়া হয় বা বেশী পরিমানে দেওয়া হয়, তাহলে তা আয়রণ পয়জনিং ঘটাতে পারে।

যখন একজন ব্যাক্তি শরীরের ওজনের প্রতি কিলোর অনুপাতে ২০ মিলিগ্রামের বেশী আয়রণ গ্রহণ করে, তখন পয়জনিং এর উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে।

৬০ মিলিগ্রাম/কিলোর ক্ষেত্রে, গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে এবং তৎক্ষনাৎ চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।

আয়রণ পয়জনিং কিভাবে নির্ণয় করা হয় ও এর চিকিৎসা কি?

  • যদি কোনো শিশুর মধ্যে আয়রণ পয়জনিং এর উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে চিকিৎসক ঐ শিশুটি কতটা আয়রণ গ্রহণ করেছে সেটা বিশদভাবে জানতে চাইবেন।
  • রক্তপরীক্ষা করতে বলা হয়, যাতে রক্তে আয়রণের পরিমাণ জানা যায়। একে আয়রণ স্টাডিস বলা হয়।
  • ইমেজিং এর সাহায্যে, একজন বিশেষজ্ঞ পরিপাক নালীতে কতটা আয়রন বড়ি আছে জানতে পারেন।


আয়রণ পয়জনিংয়ের চিকিৎসাগুলি হল:

  • যদি আয়রণ পয়জনিং এর উপসর্গগুলি কয়েকঘন্টার মধ্যে উধাও হয়ে যায়, তাহলে চিকিৎসার কোনো দরকার নেই।
  • যদি উপসর্গগুলি রয়ে যায় অসুবিধাগুলির সঙ্গে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসার দরকার হয়।
  • তৎক্ষনাৎ চিকিৎসার অন্তর্গত হল পাকস্থলী ধৌতকরণ, মানে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে সম্পূর্ণ পেট পরিষ্কার করা।
  • অন্য পদ্ধতি হল শরীরে একটি বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ শিরার মাধ্যমে (আইভি) প্রবেশ করানো। একটা রাসায়নিক, ডেফেরোক্সামিন, আয়রনের সাথে সংলগ্ন হয়ে মুত্রের সাথে সেটিকে নির্গত করে দেয়। কিন্তু, এই রাসায়নিক পদার্থটি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসাবে শ্বাসক্রিয়াকে আক্রান্ত করতে পারে।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে