আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসা কাকে বলে?
আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসা হল ত্বকের এমন একটি অসুখ যার ফলে ত্বকে প্রচণ্ড চুলকানি ও গাঢ় ছোপের সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত ত্বক ঘষা হলে এটি লাল চাক চাক ফোলার প্রবণতা দেখায়। এটি সাধারণত শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, তবে পূর্ণবয়স্করাও এতে আক্রান্ত হতে পারে।

আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসার প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?
যদিও এই রোগের উপসর্গ একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হতে পারে। সাধারণত যে উপসর্গগুলো দেখতে পাওয়া যায়:

  • এর প্রধান উপসর্গটি হল ত্বকের উপর বাদামি ছোপ তৈরি হওয়া। ট্রিগার ফ্যাক্টরের উপস্থিতিতে হিস্টামিনের প্রভাবে এই ছোপগুলি লালচে উঁচু গোটাতে (ডেরিয়ার সাইন) বদলে যায়।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত ত্বক চুলকানোর পরে তরল ভর্তি ফোস্কা দেখা দেয়।
  • মুখে দ্রুত লালভাব ছড়িয়ে পড়া উপসর্গটিও এতে দেখতে পাওয়া যায়।


রোগটির গুরুতর পর্যায়ে যে উপসর্গগুলি দেখা যায় তা হল:

  • মাথা যন্ত্রনা।
  • হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়ে যাওয়া।
  • নিঃশ্বাসের সঙ্গে শোঁ শোঁ শব্দ।
  • ডায়রিয়া।
  • বিরল ক্ষেত্রে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।


আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসার প্রধান কারণগুলি কি কি?
আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসা রোগটি ঘটার প্রধান কারণ হল ত্বকে অতিরিক্ত প্রদাহমূলক কোষের উপস্থিতি। হিস্টামিনের প্রভাবে টিস্যুতে ফোলাভাব ও প্রদাহের সৃষ্টি হয়। নিচে উল্লেখ করা ঘটনাগুলি হিস্টামিনকে সক্রিয় করে তুলতে পারে:

  • শারীরিক অনুশীলন।
  • রোদ বা ঠান্ডার সংস্পর্শ।
  • অত্যধিক মসলাদার খাবার খাওয়া বা গরম তরলপান অথবা মদ্যপান।
  • ত্বকের ঘর্ষণ।
  • সংক্রমণ।
  • মাদকদ্রব্য, যেমন নন-স্টেরয়ডাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধ (অ্যাসপিরিন), অ্যানেস্থেটিক (অনুভূতিনাশক) ওষুধ, মদ।



আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসা রোগের ঝুঁকির কারণসমূহ:
নিম্নোক্ত নির্ণায়কগুলো আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়:

  • শিশু
  • আবেগী মানসিক যন্ত্রনা
  • তাপ
  • ঘর্ষণ
  • অত্যধিক ব্যায়াম
  • বিষাক্ত ব্যাকটেরিয়া
  • অতিরিক্ত মদ খাওয়া
  • মরফিন ব্যবহার
  • dextran ধারণকারী চোখের ড্রপ ব্যবহার
  • গরম তরল পান
  • বেশি মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া
  • আবদ্ধ চামড়া।


কিভাবে আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসা নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
চিকিৎসক ত্বকের সম্পূর্ণ পরীক্ষা করবেন এবং ডারিয়ার লক্ষণের সন্ধান করবেন। এর পরে যে পরীক্ষাগুলি করা হতে পারে সেগুলো নিচে দেওয়া হল:

  • রক্ত পরীক্ষা।
  • কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট।
  • রক্তে ট্রিপটেজের মাত্রা।
  • মূত্রে হিস্টামিনের পরিমাণ।
  • মাস্ট কোষের সংখ্যা জানার জন্য ত্বকের বায়োপ্সি।


আর্টিকেরিয়া পিগমেন্টোসা রোগটি নিয়ন্ত্রণের জন্য যে চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করা হয় তারা হল:

  • চুলকানি ও লালভাব কমানোর জন্য চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী অ্যান্টিহিস্টামিনিক ওষুধ গ্রহণ।
  • ত্বকের উপর স্থানীয়ভাবে কর্টিকোস্টেরয়েড প্রয়োগ।
  • মাস্ট কোষের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার জন্য ডাইসোডিয়াম ক্রোমোগ্লাইকেট খাওয়া, যা পরবর্তীতে হিস্টামিনের ক্ষরণ কমায়।
  • লাইট বা লেজার থেরাপি।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে