ব্রংকাইটিস কি?
শ্বাসনালীর ভিতরে আবৃত ঝিল্লিতে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণকে ব্রংকাইটিস (bronchitis) বলে। ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমনে ঝিল্লিগাত্রে প্রদাহ হয়।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে,স্যাঁতস্যাতে ধুলিকনা মিশ্রিত আবহাওয়া,ঠান্ডা লাগা ও ধূমপান থেকে এই রোগ হতে পারে। সাধারণত শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা এই রোগে বেশি ভোগে। ঘন মিউকাস তৈরী হবার জন্য সাধারণত ব্রংকাইটিসে কাশি হয়। ব্রংকাইটিস তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। একবার ব্রংকাইটিস হলে বারবার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ব্রংকাইটিসের প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
ব্রংকাইটিসের উপসর্গগুলি অবস্থার পর্যায়ের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন হয়। যদিও কিছু উপসর্গগুলি তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী ব্রংকাইটিসের ক্ষেত্রে একই থাকে, কিছু বিশেষ উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী পর্যায়ে উল্লেখ করা যেতে পারে।

সাধারণ উপসর্গগুলি:

  • বুক শক্ত হয়ে যাওয়া
  • কাশি, বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট হয়।
  • হাল্কা জ্বর এবং শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
  • কাশির সাথে মিউকাস যেটা পরিষ্কার, সবুজাভ অথবা ফ্যাকাশে হলুদ, এবং কখনও রক্ত মাখা হতে পারে।


তীব্র ব্রংকাইটিস:

  • ঠান্ডার বৈশিষ্টসূচক উপসর্গগুলি
  • হাল্কা-মাত্রার জ্বর
  • শরীরে ব্যথা
  • বেশীরভাগ উপসর্গগুলি সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়, যদিও কাশি আরো দীর্ঘ হতে পারে।


দীর্ঘস্থায়ী ব্রংকাইটিস:

  • বারে বারে কাশি হওয়া
  • কাশি মৃদু বা খুব খারাপ হতে পারে
  • কম করে তিন মাস থাকে।


ব্রংকাইটিসের প্রধান কারণগুলি কি কি?
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মত ঠান্ডা লাগা ও ফ্লু সৃষ্টিকারি সাধারণ ভাইরাস ব্রংকাইটিসের জন্য দায়ী। যাইহোক, দীর্ঘস্থায়ী ব্রংকাইটিসের ফলে গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্স, ফুসফুসে উত্তেজক পদার্থের প্রকাশ হতে পারে যা ঘরে বা কাজের জায়গায় রাসায়নিক, কম প্রতিরোধ ক্ষমতা বা সিগারেট খাওয়ার কারণে হয়।

ব্রংকাইটিস কিভাবে নির্ণয় করা হয়?
বিশেষত প্রারম্ভিক পর্যায়ে, ব্রংকাইটিসকে একটি সাধারণ ঠান্ডা লাগা থেকে আলাদা করা মুশকিল হতে পারে। রোগ নির্ণয় করতে চিকিৎসক সচরাচর নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি ব্যবহার করেন:

  • অ্যালার্জি বা অন্যান্য রোগের লক্ষণের জন্য থুতুর পরীক্ষা
  • নিউমোনিয়া বা অন্যান্য সমস্যাগুলি যা কাশি হওয়া বোঝায় তা নির্ণয় করতে বুকের এক্স-রে করা হয়, বিশেষ করে ধূমপানকারীদের ক্ষেত্রে
  • ফুসফুসের ক্ষমতা এবং এম্ফিসেমা ও অ্যাজমার লক্ষণ দেখতে পালমোনারী ফাংশন টেস্ট ধার্য করা হয়


ব্রংকাইটিসের চিকিৎসা:

  • ধূমপান, মদ্যপান, তামাক বা আয়াদা পাতা খাওয়া বন্ধ করা।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর চিকিৎসা করানো।
  • রোগী কে উষ্ণতা ও শুষ্ক পরিবেশে রাখা।
  • পুষ্টিকর তরল ও গরম খাবার খাওয়ানো। যেমনঃ গরম দুধ,স্যুপ ইত্যাদি।
  • রোগীর পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়া।


ব্রংকাইটিস প্রতিরোধের উপায়:

  • বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করুন
  • হিউমিডিফাইয়ার ইনডোরস্ ব্যবহার করুন
  • ধূমপান,মদ্যপান ও তামাক সেবনের মতো খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করা।
  • ধুলাবালি ও ধোয়াপুর্ন পরিবেশে কাজ করা থেকে বিরত থাকা।
  • শিশু ও বয়স্কদের যেন মাথায় ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে নজর রাখা।
  • বারবার হওয়া আটকাতে ফ্লুয়ের টীকা নিন

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে