সিস্টিক ফাইব্রোসিস কি?
সিস্টিক ফাইব্রোসিস একটি জেনেটিক রোগ যা প্রধানত শ্বসন ও পরিপাকতন্ত্রকে আক্রমণ করে। যেহেতু জিনঘটিত রোগ, তাই পিতা-মাতা বা পূর্বপুরুষের হাত ধরে এই রোগ শরীরে প্রবেশ করে। পরে তা আপনার হাত ধরে আপনার পরবর্তী প্রজন্মের শরীরেও ঢুকতে পারে। এটি একটি মারাত্মক জীবনঘাতী রোগ। যখন কোন দম্পতি উভয়েই সিস্টিক ফাইব্রোসিসের একটি করে জিন বহন করেন তখন তাদের সন্তানের মাঝে এই রোগ প্রকাশ পায়। সাধারনত বাবা-মার মাঝে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ইউরোপ, আমেরিকার শেতাঙ্গদের মাঝে এর প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। প্রধানত ফুসফুস, অগ্নাশয়, যকৃত, অন্ননালী, জননতন্ত্র এ রোগে আক্রান্ত হয়।
সিস্টিক ফাইব্রোসিসের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?
সিস্টিক ফাইব্রোসিসের বেশীরভাগ উপসর্গগুলি শৈশবে দেখা যায় কারণ প্রতি বছর ফুসফুসের কার্যক্রমের অবনতির সাথে শিশুরা অধিক শ্বাসকষ্টে ভোগে। আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে উপসর্গগুলি শৈশবেই বৃদ্ধি হতে পারে বা তাদের পরবর্তী জীবনেও এটা বৃদ্ধি হতে পারে, যেটার তীব্রতা পরিবর্তিত হতে পারে। উপসর্গগুলি শুরু হবার আগেই, জীবনের প্রথম মাসে নবজাতকের মধ্যে সিস্টিক ফাইব্রোসিস নির্ণয় করা যেতে পারে।
উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:
সিস্টিক ফাইব্রোসিসের প্রধান কারণগুলো কি কি?
সিস্টিক ফাইব্রোসিস স্বাভাবিক শারীরিক নিষ্কাশন, যেমন মিউকাস, ঘাম এবং পৌষ্টিক রসকে আক্রান্ত করে। মিউকাস ঘন হয়ে যায় এবং ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাস প্রশ্বাসে অসুবিধা সৃষ্টি করে। এটা একটা জিনঘটিত সমস্যা, এটা প্রোটিনকে আক্রান্ত করে (সিস্টিক ফাইব্রোসিস ট্র্যান্সমেমব্রান কনডাক্টেন্স রেগুলেটর [সিএফটিআর]) যেটা শরীরের কোষের ভিতরে ও বাইরে লবনের বাড়াকমাকে প্রভাবিত করে। যদি পিতামাতা উভয়েই জিনটির বাহক হয় তবে ত্রুটিপূর্ণ জিন শিশুর কাছে স্থানান্তরিত হয়। যদি পিতামাতার মধ্যে যে কোনো একজনের এই জিন থাকে তবে বাচ্চার মধ্যে সিস্টিক ফাইব্রোসিসের উপসর্গগুলি বৃদ্ধি হতে পারে না, কিন্তু বাহক হতে পারে এবং পরবর্তী প্রজন্মে রোগ ছড়াতে পারে।
ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
জেনেটিক কারণ:
জীবনযাপন ও পরিবেশগত কারণ:
বয়সগত কারণ:
সিস্টিক ফাইব্রোসিস কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?
নবজাতকদের স্ক্রীনিং এবং ডায়াগনোসিস, এখনকার দিনে খুব দ্রুত সিস্টিক ফাইব্রোসিস সনাক্ত করে।
নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করা যেতে পারে:
পুনরাবৃত্তিমূলক প্যানক্রিয়েটাইটিস, নাসাল পলিপস, এবং দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের সংক্রমণের জন্য বড় বাচ্চাদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদের, উভয় জেনেটিক এবং ঘাম পরীক্ষার সুপারিশ করা হতে পারে।
সিস্টিক ফাইব্রোসিসের জন্য চিকিৎসার বিকল্পগুলি দেওয়া হল:
এই রোগে সেরে ওঠা প্রায় অসম্ভব। কোনও জায়গায় সংক্রমণ হলে তা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে কমানো যেতে পারে বা ওষুধের দ্বারা উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রন করা যেতে পারে। তবে রোগ নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
ওষুধপ্রয়োগ:
ফিজিওথেরাপি:
ফুসফুসের ট্রান্সপ্ল্যান্ট:
সিস্টিক ফাইব্রোসিস, উত্তরাধিকারী প্রকৃতির কারণে, সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করা যাবে না। সেইজন্য, তাড়াতাড়ি নির্ণয় এবং এর চিকিৎসাই হল এটাকে ঠিক করতে এবং আরও মারাত্মকতা এড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায়।