খুশকি কি?
খুশকি ত্বকের বিশেষ একটি অবস্থাকে বুঝায়, যা মূলত মাথার খুলিতে বেশি দেখা যায়। এতে চর্মরেণু মাথার ত্বক থেকে আঁশের মত উঠে উঠে আসে, এবং ঝরে পড়ে। এটি এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি, যা আত্মসম্মানের এমনকি সামাজিক সমস্যাও তৈরী করতে পারে। এ অবস্থার আরও ভয়াবহ রূপ হলো সেবোরেইক ডারমাটাইটিস বা ত্বকের তৈলাক্ত ও চুলকানিপ্রবণ অবস্থা।
খুশকির স্পষ্ট কোন কারণ জানা না গেলেও, ধারণা করা হয় জিনগত ও পরিবেশগত কারণে খুশকি হতে পারে। শীতকালে যেটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। খুশকির পেছনে কারণ হিশেবে অপরিচ্ছন্নতাকে দায়ী করা হলেও, মূলত তার সাথে এর সম্পর্ক নেই। ত্বকের কোষের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে খুশকি হয়ে থাকে। লক্ষণের উপর ভিত্তি করে খুশকির রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়।
খুশকির কোন সাধারন প্রতিকার নেই। অ্যান্টিফাংগাল ক্রিম বা স্যালিসিলিক অ্যাসিড ব্যবহার করে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের অর্ধেকই এ অবস্থার স্বীকার, যেখানে মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের মধ্যে আক্রান্তর হার বেশি। পৃথিবীর প্রায় সব জায়গার লোকই খুশকিতে আক্রান্ত হয়।
খুশকির প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি কি?
সাধারণ লক্ষণ হলো:
খুশকি স্ক্যাল্পে হয়, তাই, প্রচণ্ড খুশকি হলে, মরা চামড়ার গুঁড়ো সাধারণত কাঁধে পড়ে। সিবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হওয়া সিবামের উৎপাদন বৃদ্ধি অথবা জমার কারণে স্ক্যাল্প তেলতেলে হয়ে ওঠে।
খুশকির প্রধান কারণগুলি কি কি?
অনেক কারণেই খুশকি হতে পারে। খুশকির প্রধান কারণগুলো হলো:
ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
মাথা থেকে ঝরে পড়া সাদা-হলদে খুশকি আসলে আমাদের ত্বকের মৃত কোষ। তবে, মাথা ছাড়াও বাহুমূল, ঊরুসন্ধিসহ শরীরের অন্যত্রও খুশকি হতে পারে।
খুশকি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?
যেহেতু খুশকি আঁশ এবং গুঁড়োর দেখতে মতো হয়, তাই রোগ নির্ণয় এবং খুশকিজনতি অবস্থাকে ত্বক জনিত অবস্থার থেকে আলাদা করা মুশকিল হয়ে উঠতে পারে। সেবোরিক ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াসিস, অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস, টিনিয়া ক্যাপাইটিস, ইত্যাদি ক্ষেত্রেও একই রকম উপসর্গ দেখা দেয়। রোগ নির্ণয় মূলত রোগীর চিকিৎসাজনিত ইতিহাস এবং শারীরিক চিকিৎসার ভিত্তিতে করা হয়। মাঝেমধ্যে ত্বকের বায়োপসি করার পরামর্শও দেওয়া হতে পারে।
সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা হলো অ্যান্টি-ড্যান্ড্রফ শ্যাম্পুর ব্যবহার এবং স্ক্যাল্পের চিকিৎসা করানো। দুর্ভাগ্যবশত, এই চিকিৎসা সব রোগীর ক্ষেত্রে কাজে দেয় না। যদি খুশকি অ্যান্টি-ড্যান্ড্রফ শ্যাম্পু এবং স্ক্যাল্পের চিকিৎসা করে না ঠিক হয়, তাহলে অন্তর্নিহিত চিকিৎসাজনিত অবস্থার ভিত্তিতে, যথাযথ অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল অথবা অ্যান্টি-ফাংগাল চিকিৎসা দেওয়া হতে পারে। খুশকির চিকিৎসার অংশ হিসেবে লিপোসোমস, নিওসোমস এবং লিপিড ন্যানোপার্টিকেলের মতো অভিনব ড্রাগ ডেলিভারি পদ্ধতি ক্রমান্বয়ে ব্যবহার করা হয়।
নিজ যত্ন নেওয়া:
খুশকির কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য, চুলের যথাযথ যত্ন নেওয়ার অভ্যাস অবলম্বন করুন আর তাতেও যদি খুশকি না কমে, তাহলে ট্রাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিন সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য।
চুলের খুশকি দূর করার ঘরোয়া সমাধানঃ