হাতে ব্যথা কি?
হাতে কারণে-অকারণে ব্যথা। দৈনন্দিন জীবনে এ এক অতি সাধারণ জিনিস। হাতের ব্যথা মৃদু অথবা তীব্র হতে পারে, এবং কোন কোন সময়ে তা এতটাই মারতত্মক হতে পারে যে তা মানুষের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ব্যথা কোন রোগের প্রকাশ হতে পারে এবং অন্তর্নিহিত সেই কারণটির চিকিৎসা করলেই সাধারণত ব্যথার উপশম করে।

হাতে ব্যথার প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?
প্রদাহ, আঘাত, স্নায়ু নষ্ট হয়ে যাওয়া, দীর্ঘকালীন স্বাস্থ্যের সমস্যা (যেমন, বিভিন্ন ধরণের ঘাটতি, হাইপারইউরিসেমিয়া), হাতের যেকোন হাড় বা লিগামেন্ট মচকানো বা ভাঙার ফলে হাতে ব্যথা হতে পারে। হাতের কোন অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং তার বিকারতত্বের কারণের উপর নির্ভর করে হাতে ব্যথার ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়; যদিও, হাতে ব্যথার সবথেকে সাধারণ উপসর্গগুলি হল:

  • ব্যথা (দপদপ করা, ঝিনঝিন করা বা খিঁচ ধরা)।
  • ফোলা।
  • শক্ত হয়ে যাওয়া।
  • ঝিঁঝিঁ বা অবশ অনুভূতি।
  • হাত নাড়াতে বা ক্ষতিগ্রস্থ হাত দিয়ে কাজ করতে সমস্যা বা অক্ষমতা।


হাতে ব্যথার প্রধান কারণগুলি কি কি?
হাতের ব্যথার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। হাতের হাড়, গাঁট, টেন্ডন, যোগকলা বা স্নায়ু প্রভৃতি অন্তর্নিহিত কাঠামোর অসুখের ফলে হাতে ব্যথা হতে পারে। যেমন প্রদাহ, আঘাত, স্নায়ু নষ্ট হয়ে যাওয়া, দীর্ঘকালীন স্বাস্থ্যের সমস্যা, হাতের যেকোনো হাড় বা লিগামেন্ট মচকানো বা ভাঙার ফলে হাতে ব্যথা হতে পারে। হাতে ব্যথার অন্যান্য পরিচিত কারণের মধ্যে আছে:

  • কারপেল টানেল সিনড্রোম।
  • অস্টিওআর্থ্রাইটিস।
  • রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস।
  • গেঁটেবাত।
  • ভিটামিন ডি এর অভাব।
  • স্প্রেন বা মচকানি।
  • টেন্ডনাইটিস।
  • গ্যাংলিয়ন সিস্ট।
  • ডি কেরভেইন’স টেনোসাইনোভাইটিস।
  • পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি।
  • রেইনড’স ডিজিজ।


কিভাবে হাতে ব্যথা নির্ণয় করা হয় এবং এর চিকিৎসা কি?
যথাযথ চিকিৎসার ইতিহাস গ্রহণ এবং উপযুক্ত পরীক্ষার সাহায্যে এই সমস্যার সম্ভাব্যতা নির্ণয় করা যেতে পারে। কিছু রক্ত পরীক্ষা ও রেডিওলজিকাল টেস্টের মাধ্যমে এর নিশ্চিত নির্ণয় সম্ভব। এই পরীক্ষাগুলি হল:

  • রক্ত পরীক্ষা:
  1. এরিথ্রোসাইট সেডিমেন্টেশন রেট (ইএসআর) সহ কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি)
  2. সি-রিআক্টিভ প্রোটিন
  3. রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ফ্যাক্টর
  4. ভিটামিন ডি৩ মাত্রা
  5. ইউরিক এসিড মাত্রা
  • ক্ষতিগ্রস্থ হাতের কব্জির এক্স-রে
  • স্নায়ুর সমস্যা খুঁজতে কব্জির এমআরআই করা হয়।


হাতে ব্যথার চিকিৎসা পদ্ধতি:
হাতে ব্যথার চিকিৎসা নির্ভর করে ব্যথার কারণের উপর, তবে ফিজিক্যাল থেরাপির সাথে কিছু ওষুধের প্রয়োগ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ব্যবহৃত চিকিৎসা প্রণালীগুলি হল:

  • ওষুধ - প্যারাসিটামল, এসিক্লোফেনাক, এবং আইবুপ্রফেন জাতীয় ওরাল এনালজেসিক (ব্যথা কমানোর ওষুধ) ব্যথার উপশমে ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • বরফের প্যাক - হাতে বরফ বা বরফের প্যাক ব্যবহার ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • ফিজিক্যাল থেরাপি - উপযুক্ত ফিজিক্যাল থেরাপি হাতে ব্যথার উপশমে যথেষ্ট সাহায্য করতে পারে।
  • থেরাপিউটিক আল্ট্রাসাউন্ড নিউরোজেনিক (স্নায়ুজনিত) বা ঝিনঝিনে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে