সাপ, ব্যাঙ, বিষাক্ত পোকা পাখি দেখলে এগুলো কি হত্যা করা যাবে?

উপযুক্ত প্রমান সহ কেউ পরামর্শ দিয়েন।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

হ্যাঁ, জায়েজ আছে।

যে প্রাণীগুলো মানুষের ক্ষতি করতে পারে, তাকে হত্যা করায় কোনো দোষ নেই; বরং আত্মরক্ষা করতে গিয়ে তাকে মেরে ফেলা ওয়াজিব। তাছাড়া অনেক প্রাণী মেরে ফেলাতে শরীয়ত নির্দিষ্ট ছওয়াবও ঘোষণা করা হয়েছে।

রাসূলে পাক (সঃ) বলেন, “পাঁচটি দুষ্ট প্রাণীকে ইহরাম ও হালাল অবস্থায় (অথবা হারাম সীমানার ভিতরে ও তার বাইরে) হত্যা করা হবে; সাপ (বিছা), (পিঠে অথবা বুকে সাদা দাগবিশিষ্ট এক প্রকার) কাক, ইঁদুর, হিংস্র কুকুর ও চিল।” — (মুসলিম, মিশকাত হা/ ২৬৯৯)

রাসূল (সঃ) আরও বলেন, “যে ব্যক্তি প্রথম আঘাতেই একটি টিকটিকি মারবে, তার জন্য রয়েছে ১০০টি নেকী, দ্বিতীয় আঘাতে মারলে রয়েছে তার চেয়ে কম নেকী, আর তৃতীয় আঘাতে মারলে রয়েছে তার চাইতেও কম নেকী।’’ — (মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২২৪০)

তিনি আরও বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি কোন (বিষধর) সাপ দেখে এবং তার হামলার ভয়ে তাকে মেরে না ফেলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।’’ — (সহীহুল জা’মে হা/৬২৪৭)

তবে ব্যাঙ হত্যা করা হারাম। কারণ, হাদীসে এসেছে – “কোন চিকিৎসক রাসূল (সঃ) কে ব্যাঙ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন যে, এটা ঔষধে প্রয়োগ করবেন কি না ? অতঃপর তিনি ওটা হত্যা করতে নিষেধ করলেন।” (আহমাদ ১৫৩৩০, নাসাঈ ৪৩৫৫, আবূ দাউদ ৩৮৭১, সহীহুল জামে, হা/৬৯৭০) 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

ইসলামে ক্ষতিকর প্রাণী হত্যা করা জায়েজ আছে। যেগুলো পোকামাকড় মানুষকে কষ্ট দেয়, ক্ষতি করে এ ধরনের কষ্টদায়ক পোকামাকড় মারা জায়েজ। কারণ, কষ্ট থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। সুতরাং মানুষের কষ্ট দেওয়ার কারণে এ পোকামাকড়গুলো হত্যা করা জায়েজ।

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের ঘরে বসবাসকারী অন্য প্রাণীও আছে। এদেরকে তিনবার সাবধান কর। এরপরও তা হতে তোমাদের জন্য (ক্ষতিকর কিছু) প্রকাশ পেলে তবে এটাকে মেরে ফেল। (সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত], অধ্যায়ঃ ১৬/ শিকার।, হাদিস নম্বরঃ ১৪৮৪)।

॥ সাপ মারাঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সাপ মার। পিঠে দু'টি দাগ বিশিষ্ট সাপ ও লেজকাটা সাপকে তোমরা মেরে ফেল। কেননা এ দু'টি সাপ দৃষ্টিশক্তি ধ্বংস করে এবং (মহিলাদের) গর্ভপাত ঘটায়। (সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত], অধ্যায়ঃ ১৬/ শিকার।, হাদিস নম্বরঃ ১৪৮৩)

॥ ব্যাঙ মারাঃ ব্যাঙকে ঔষধের মধ্যে ব্যবহার করা সম্পর্কে নবী (সঃ) কে জিজ্ঞাসা করেন । তখন নবী (সঃ) তাকে ব্যাঙ মারতে নিষেধ করেন। (সূনান আবু দাউদ (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ২২, হাদিস নম্বরঃ ৩৮৩১)

॥ পাখি মারাঃ আল্লাহ তাআলা বলেন, প্রাণিকূল সৃষ্টির (অন্যতম) কারণ হলো, এগুলোতে তোমরা আরোহণ করে থাকো আর এগুলো সৌন্দর্যের প্রতীক। (সুরা নাহল, আয়াত: ৮)

প্রাণিজগতকে পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দিয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীতে বিচরণশীল যত প্রাণী আছে আর যত পাখি দুই ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো একেক জাতি। (সুরা আনআম, আয়াত: ৩৮)

প্রাণিজগত সতত মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত। আল্লাহ তাআলা কুদরতিভাবে এগুলোকে মানুষের করায়ত্ত করে রেখেছেন। প্রাণীরা অবশ্যই করুণা ও মমতা পাওয়ার যোগ্য। ইসলাম পশু-পাখির সঙ্গে যথাসম্ভব দয়াশীল আচরণ করার শিক্ষা দেয়। পশু-পাখিকে আল্লাহর জমিনে অবাধ বিচরণের সুযোগ দিতে হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে যে হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে। (নাসায়ি, ইবনে হিব্বান)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ