আমার নানির নিজের ভাইয়ের মেয়ে কে কি ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ করা জায়েজ আছে কি???জানা থাকলে উঃ দিন।।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

হ্যা, বিবাহ করা জায়েজ  আছে!

পুরুষদের মাহরাম ১৪ জন : মায়ের মত ৫ জন – পুরুষের মাহরাম বা যাদের সাথে দেখা দেওয়া জায়েজ বিবাহ হারাম:-(১) মা, (২)মায়ের আপন বোন মানে আপন খালা, (৩)বাবার আপন বোন মানে ফুফু, (৪)আপন শাশুড়ি, (৫) দুধ-মা বোনের মত ৫ জন – (১)আপন বোন, (২)আপন দাদি, (৩)আপম নানি, (৪)আপন নাতনি, (৫) দুধ-বোন মেয়ের মত ৪ জন – (১)আপন মেয়ে, (২)আপন ভাই-এর মেয়ে, (৩)আপন বোনের মেয়ে, (৪)আপন ছেলের বউ। শরিয়ত মোতাবেক এদের বাইরে বাকিরা গইরে মাহরাম এদের সাথে বিবাহ জায়েজ,সেহেতু আপনার মায়ের মামাতু বোনের সাথে আপনার বিবাহে শরিয়তে কোন বাঁধা নেই।।

Call

ভাই এদরনের ফিতনা না করলে কি হয় এ মহিলা এমনিত আপনার খালাআম্মা রুচিরত একটা বেয়াপার আছে

Call
@mdmonirhossan মনির হোসেন ভাই, আপনার মতো অতিবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের জন্যেই আজকে সমাজের এই অবস্থা। যারা নিজেদেরকে অতিরিক্ত রুচিবোধ সম্পন্ন মনে করেন। কিন্তু আসলে যে তাদের নিজেদের জ্ঞ্যানের ঘটি কতটা অগভীর তা উপলব্ধি করার প্রয়াস কখনও করে বলে মনে হয় না।

আরে ভাই, যেটাকে স্বয়ং আল্লাহ জায়েজ করে দিয়েছেন, সেটাকে আপনি কি করে ফিতনা বলতে পারেন???? আপনি কি একবারও ভেবে দেখেছেন আপনি কি বলছেন?

বরং আপনিই সমাজে ফিতনা ছড়াচ্ছেন, কারন আপনার না জেনে এমন উত্তর দেয়ার কারনে অনেকেই ভাবতে পারেন যে মায়ের মামাতো বোনকে বিয়ে করা যাবে না। কিন্তু কুরআন হাদিস বলে মায়ের মামাতো বোনকে অবশ্যই বিয়ে করা যাবে।

নবীজী নিজের মেয়ে ফাতিমাকে বিয়ে দিয়েছিলেন নবীজীর আপন চাচাতো ভাই হযরত আলীর কাছে অর্থাৎ ফাতিমার চাচার কাছে। এই ঘটনার জন্যে কি আপনি বলবেন, যে নবীজীর রুচিবোধ ছিলো না?? আল্লাহ মাফ করুন।

সম্পর্কে খালা হলেই যে তাকে বিয়ে করা যাবে না বিষয়টা এমন না। একটা ব্যাপার চিন্তা করুন, আপনার মায়ের মামাতো বোন যদি আপনার খালা হয়, তাহলে ওই খালার মামাতো বোনও নিশ্চয় আপনার খালা হবে সম্পর্কে?  তাই না? আবার ওই খালার মামাতো বোনও তো আপনার খালা হবে তাই না? এভাবে যদি চিন্তা করেন তাহলে দেখবেন যে দেশের প্রায় সবাই আপনার খালা লাগে? ব্যাপারটা ভেবে দেখেছেন? তাহলে কি আপনি কাউকেই বিয়ে করবেন না?

আসলে আপনাকে বুঝতে হবে আল্লাহ তায়ালা কোন পরযন্ত সীমারেখা বেধে দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা সূরা নিসা- তে যা বলেছেন এবং এ সম্পর্কে যে হাদিস আছে, তা থেকে স্পষ্ট যে শুধুমাত্র আপন খালাকেই বিয়ে করা নিষেধ। বাকি যেকোন ধরনের খালাকেই বিয়ে করা যাবে। 

আমি জানি আপনি এখানে রুচিবোধের কথাটা কেন বলেছেন। মেয়েটি সম্পর্কে খালা লাগে বলে তাই না? কিন্তু খালা লাগলেই কি তাকে বিয়ে করা রুচিবোধের বাইরে? উত্তর হলো "না"। কারন রুচিবোধ হলো একটা আপেক্ষিক বিষয়। সমাজ, কাল, পাত্রভেদে তা পরিবর্তন হয়ে থাকে। আর যে সমাজে হারাম কাজ করা সহজ কিন্তু হালাল কাজ করা কঠিন, সেখানে একটা জায়েজ কাজ করতে গিয়ে রুচিবোধকে বাধা হিসেবে মনে করাটা আসলে শয়তানের ধোকা ছাড়া আর কিছুই নয়।

আজকে সমাজে তাকিয়ে দেখুন, ইসলাম যা হারাম করেছে (যেমন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, পরকীয়া ইত্যাদি) তা করতে আমাদের রুচিতে বাধে না, কিন্তু বিয়ে করতে গেলে আমরা নানান ধরনের রুচিবোধের দোকান খুলে বসি। শেষমেশ দেখা যায় অতিরিক্ত রুচিবোধের কারনে অনেকের ৩০-৪০ বছর পার হয়ে যায় কিন্তু বিয়ে হয় না।

উপরের উদাহরনগুলো দেখলেই বুঝা যায় যে, আপনি যে সূত্রে আপনার মায়ের মামাতো বোনকে বিয়ে করা ফিতনা বলে আখ্যায়িত করেছেন, তা নিতান্তই অপরিপক্ক চিন্তার ফলাফল।

আসলে এগুলো হচ্ছে আমাদের সমাজের কিছু কুসংস্কারের ফলাফল। আমাদের সমাজে এখন জায়েজ বিষয়গুলোই দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আর নাজায়েজ বিষয়গুলো সহজ হয়ে যাচ্ছে।


তাই আবারও বলছি মায়ের মামাতো বোনকে নিঃসন্দেহে বিয়ে করা যাবে। এতে কোন সমস্যা নেই।

আশা করি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন। আল্লাহ আমাদের সঠিক জ্ঞান দান করুন। আমীন।