শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

পর্দাহীনতা আল্লাহ্‌-রাসূলের নাফরমানী: যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের বিরোধিতা করবে সে তো নিজেরই ক্ষতি করবে। আল্লাহ্‌র কোনই ক্ষতি হবে না। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:

]كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ إِلا مَنْ أَبَى قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَنْ يَأْبَى قَالَ مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أَبَى

“আমার উম্মতের সবাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তবে সে লোক নয় যে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করে। তাঁরা প্রশ্ন করলেন, কে অস্বীকার করে? তিনি বললেন, যে আমার আনুগত্য করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে; আর যে আমার নাফরমানী করবে সেই জান্নাতে যেতে অস্বীকার  করে।”[52]

পর্দাহীনতা অভিশাপ: রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  বলেন, “শেষ যুগে অচিরেই আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু নারী হবে, যারা কাপড় পরেও উলঙ্গ থাকবে। তাদের মাথা হবে উটের কুঁজের মত। তোমরা তাদেরকে অভিশাপ কর। কেননা তারা অভিশপ্ত।”[53]

বেপর্দা জাহান্নামীদের কাজ: আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,

]صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ...[

“জাহান্নামবাসী দু’টি দল রয়েছে। যাদেরকে আমি এখনও দেখিনি। একদল এমন লোক যাদের হাতে গরুর লেজের মত লাঠি থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদেরকে প্রহার করবে। আর অন্য দল এমন নারী যারা পোষাক পরেও উলঙ্গ থাকে...।”[54]

বেপর্দা ইবলীসের সুন্নাত: আদমের সাথে ইবলীসের ঘটনাই আমাদের সামনে ইবলিসের ষড়যন্ত্র উম্মোচন করে দেয়; সে কিরূপ আগ্রহী ছিল লজ্জাস্থান প্রকাশ হওয়া ও পর্দা উম্মোচন করার জন্য। বেপর্দা হচ্ছে শয়তানের মূল লক্ষ্য। আল্লাহ্‌ বলেন,

]يَابَنِي آدَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمْ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُمْ مِنْ الْجَنَّةِ يَنزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْآتِهِمَا[

“হে আদম সন্তান! শয়তান যেন তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে না পারে; যেমন সে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছে এমতাবস্থায় যে তাদের থেকে তাদের পোষাক খুলিয়ে দিয়েছে। যাতে করে তাদের লজ্জাস্থান প্রকাশ হয়ে পড়ে।” (সূরা আ’রাফ- ২৭)

সুতরাং ইবলিসই হল, বেপর্দা ও লজ্জাহীনতার আহ্বানকারী। আর সেই হল আধুনিক ‘নারী মুক্তি’ নামে আন্দোলনের সবচেয়ে বড় নেতা।

বেপর্দা ইহুদী নীতি: মুসলিম জাতির নৈতিকতা ধ্বংসের ব্যাপারে ইহুদীদের ষড়যন্ত্র কারো কাছে গোপন নয়। বিশেষ করে নারীর ফিৎনার মাধ্যমে। কেননা নারীর সাথে পুরুষের অবাধ মেলামেশা জাতির নৈতিকতা ধ্বংসের প্রধান অস্ত্র। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  বলেন,

]اتَّقُوا الدُّنْيَا وَاتَّقُوا النِّسَاءَ فَإِنَّ أَوَّلَ فِتْنَةِ بَنِي إِسْرَائِيلَ كَانَتْ فِي النِّسَاءِ[

“তোমরা দুনিয়া এবং নারী থেকে বেঁচে থাক। কেননা বনী ইসরাঈলের মধ্যে সর্বপ্রথম ফিৎনা ঘটেছিল নারীর মাধ্যমে।”[55]

বেপর্দা ঘৃণিত জাহেলী রীতি: আল্লাহ্‌ বলেন, “তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে- মূর্খতা যুগের অনুরূপ (বেপর্দা হয়ে) নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।” (সূরা আহযাব- ৩৩)

এ আয়াতে বেপর্দাকে অন্ধকার যুগের বর্বরদের রীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাহেলী যুগের সবধরণের রীতি-নীতিকে পদদলিত করেছেন। তিনি বলেন: “মূর্খ যুগের সব বিষয় আমার দু’পায়ের নীচে।”[56]

বেপর্দা চারিত্রিক পদস্খলনের অন্যতম মাধ্যম: কেননা এর মাধ্যমে নারী পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ফলে তাদের চরিত্র ধ্বংস হয়। বিশেষ করে যুব সমাজ। কেননা বেপর্দা তাদের অন্তরে কুচিন্তার উদ্রেক করে; ফলে তারা ধাবিত হয় অশ্লীলতার দিকে।

বেপর্দার কারণে নারী হয় সস্তা সামগ্রী। যার বাস্তব প্রমাণ হল বর্তমান প্রচার মাধ্যম। ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য-সামগ্রী বাজারজাত করার ক্ষেত্রে নারীকেই ব্যবহার করে থাকে।

Oval: 3বেপর্দার কারণেই বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নানা ধরণের দূরারোগ্য ব্যাধির সৃষ্টি হয়েছে। যেমন- এইডস্‌...। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,

]لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا إِلا فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلافِهِمِ الَّذِينَ مَضَوْا[

“কোন জাতির মধ্যে যখনই অশ্লীলতার প্রকাশ ঘটবে, তখনই তাদের মধ্যে মহামারী, দুর্ভিক্ষ.. প্রভৃতি ব্যাপক আকার ধারণ করবে; যা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে ছিল না।”[57]

বেপর্দা চোখের ব্যভিচারের পথকে সুগম করে। রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “চোখের ব্যভিচার হচ্ছে দৃষ্টিপাত করা।”[58] নি:সন্দেহে দৃষ্টি অবনত রাখার আনুগত্যকে লংঘণ করার কারণেই পৃথিবীতে ফিৎনা-ফাসাদের সূত্রপাত হয়েছে; যা আনুবিক বোমা ও ভূমিকম্পের চাইতে বেশী ক্ষতি করে থাকে মানুষের চরিত্রকে। আল্লাহ্‌ বলেন,

]وَإِذَا أَرَدْنَا أَنْ نُهْلِكَ قَرْيَةً أَمَرْنَا مُتْرَفِيهَا فَفَسَقُوا فِيهَا فَحَقَّ عَلَيْهَا الْقَوْلُ فَدَمَّرْنَاهَا تَدْمِيرًا[

“যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন তার অবস্থাসম্পন্ন লোকদেরকে উদ্বুদ্ধ করি, অত:পর তারা পাপাচারে মেতে উঠে। ফলে তাদের উপর দন্ড ন্যায়ত: অবধারিত হয়ে পড়ে এবং তখন আমি তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে থাকি।” (সূরা বানী ইসরাঈল- ১৬)

[৫২] . বুখারী, অধ্যায়ঃ কুরআন-সুন্নাহ্‌ আঁকড়ে ধরা। হা/৬৭৩৭।

[৫৩] . আহমাদ হা/৬৭৮৬।

[৫৪] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ পোশাক ও সৌন্দর্য, হা/৩৯৭১।

[৫৫] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ যিকির, দু'আ.., হা/৪৯২৫।

[৫৬] . মুসলিম, অধ্যায়ঃ হজ্জ, হা/২১৩৭।

[৫৭] . ইবনু মাজাহ্‌, অধ্যায়ঃ ফিতান, হা/৪০০৯।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ