দীর্ঘমেয়াদী মাথাব্যথার অন্যতম একটি কারণ ক্লাস্টার মাথাব্যথা। এটির প্রকৃত কারণ আজো জানা সম্ভব হয়নি। এই মাথাব্যথা এপিসোডিক বা পালাক্রমে হয়। অর্থাৎ একবার হয়ে যাবার পর রোগী বেশ কিছুদিন ভাল থাকে। তারপর আবার মাথাব্যথা হয়। ক্লাস্টার মাথাব্যথায় চোখ লাল হয়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে, নাক বন্ধ থাকে বা নাক দিয়ে পানি পড়ে, অস্থির লাগে, বমিভাব হয় এবং ক্ষুধামন্দা থাকে। এ ধরনের মাথাব্যথা সাধারণত মাথার একদিকে হয়ে থাকে। ক্লাস্টার মাথাব্যথা ছেলেদের বেশী হয়। এর পেছনে কোন কারণ স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। পরিবারের কারো একজনের থাকলে অন্যদের হবার সম্ভাবনা থাকে। যাদের বয়স ২০ বা তার বেশী তার ক্ষেত্রে এ ধরনের মাথাব্যথার সম্ভাবনা বেশী। বিজ্ঞানীরা ক্লাস্টার মাথাব্যথার যথাযথ কারণ আজো বের করতে পারেনি। তবে সেরোটোনিন এবং হিস্টামিন নামের দুটি উপাদানের সাথে যে অসুখের সম্পর্ক আছে তা আজ প্রমাণিত। গবেষকরা হাইপোথ্যালামাসের সাথে অসুখের সম্পর্ক পেয়েছেন। ক্লাস্টার মাথাব্যথা শুরু হবার কিছু ‘ট্রিগার ফ্যাক্টর’ আছে। যেমন:
এসবের ফলে মাথাব্যথা শুরু হয়।ক্লাস্টার মাথাব্যথা ডায়াগনসিস খুব একটা কঠিন নয়। তবে দক্ষ চিকিৎসকের দরকার। ইতিহাস নিলে এবং শারীরিক পরীক্ষা করলে অসুখটি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। সিটিস্ক্যান এবং এমআরআই করা হয় অন্য কোন অসুখ আছে কিনা তা জানার জন্য। কিছু ওষুধ আছে যা ক্লাস্টার মাথাব্যথা প্রতিরোধ করে। যেমন: প্রোপানোলল, ভেরাপামিল, সাইপ্রোহেপ্টাডিন, টপিরামেট, ভ্যালপ্রোয়িক এসিড, লিথিয়াম, এমিট্রিপটাইলিন ইত্যাদি। আর হঠাৎ ক্লাস্টার মাথাব্যথা শুরু হলে ট্রিপট্যান জাতীয় ওষুধ বা স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়। ১০০% অক্সিজেন দিলে রোগী দ্রুত আরাম পায়।ক্লাস্টার মাথাব্যথা জীবনের জন্য হুমকি হয়। এই ধরনের মাথাব্যথায় ব্রেনের কোন ক্ষতি হয়না। কিন্তু এ ধরনের মাথাব্যথা শারীরিক ও মানসিক কষ্ট দেয়। অভিজ্ঞ একজন নিউরোলোজিস্টের কাছে গেলে অনেক ভাল ভাবে এ ধরনের মাথাব্যথা মোকাবেলা করা যায়।
- ডা: মোঃ ফজলুল করিম পাভেলরেজিস্ট্রার মেডিসিন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ফোন : ০১৭১২-৮৩৬৯৮৯