শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Jobedali

Call

কোষ্ঠ কাঠিন্যের প্রতিকার

উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার

খাবার-দাবারে আঁশ জাতীয় খাদ্যের পরিমাণ কম থাকলে, রিফাইন বা পরিশুদ্ধ খাবার-দাবার বেশি গ্রহণ করলে। অর্থাৎ ভূষিযুক্ত আটার বদলে ময়দার তৈরি খাবার বেশি খেলে। লাল চালের বদলে মেশিনে ছাঁটা কুড়াবিহীন ধবে ধবে সাদা চাল বেশি খেলে এ সমস্যা হতে পারে।

শাক-সবজি এবং ফল মুল সহ আঁশ জাতীয় খাবার বেশি করে খেলে কোষ্ঠ পরিস্কার হয় এ কথা কমবেশী আমরা সবাই জানি। কিন্তু সমস্যা হলো এই জানা কথাটি আমরা নিষ্ঠার সাথে মানি না। খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইট জানায়- এসব থেকে মুক্তি পেতে দৈনিক ২৫ গ্রাম আঁশ পেটে যাওয়া দরকার।

আর এই আঁশ পেতে পারেন খাবার থেকেই-

আপেল: কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কেবল যে পেট ব্যাথা হবে তা নয় এর জন্য ভবিষ্যতে গুরুতর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। আপেল এই সমস্যা সারাতে পারে। এই ফলে ৪.৪ গ্রাম আঁশ থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার জন্য বেশ কার্যকর। এছাড়াও অন্যান্য কাঁচাফল যেমন নাশপাতি, পাম ইত্যাদি খোসাসহ খেলে আঁশ পাওয়া যায়।

বাদাম: ক্যালরির ভালো উৎস। তাই প্রতিদিন কাঠবাদাম খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন থাকা উচিত। চিনাবাদাম, কাঠবাদাম, তিসি ইত্যাদি উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার। এক মুঠ কাঠবাদামে ৩ গ্রাম আঁশ থাকে যেখানে পেস্তাবাদাম ও পিকান বাদামে থাকে ২.৫ থেকে ২.৯ গ্রাম আঁশ থাকে।

লাল-চাল: ওটস, বার্লি, রাই এবং লালচাল আঁশের ভালো উৎস। প্রতি কাপ লাল চালে ৪ গ্রাম আঁশ থাকে। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় এই উপাদানগুলো রাখলে তা হজমে সাহায্য করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।

পালংশাক: আঁশজাতীয় খাবার। এটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও গাজরজাতীয় সবজি, ব্রোকলি ও ডাল হজমে সহায়তা করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধানে এই খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়া উচিত।

শুকনা ফল: শুকনা ফল যেমন- এপ্রিকটস, আলু বোখরা, খেজুর ও কিশমিশ উচ্চ আঁশসমৃদ্ধ খাবার। আলু বোখরায় আছে সর্বিটল, যা প্রাকৃতিক ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান করে।

প্রচুর পানি পান

কোষ্ঠকাঠিন্যের থেকে মুক্তি পেতে সারা দিনে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে৷ এটা তো বলার প্রয়োজন নেই পানি আমাদের দেহের জন্য কতটা উপকার। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় শরীর যথেষ্ট পানি না পাওয়ার কারণে তৈরি হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। এ কারণে যথেষ্ট পানি পান করতে হবে।

দিনে অন্ততপক্ষে ৭-৮ গ্লাস পরিশ্রুত পানীয় পানি (ফোটানো এবং ঠান্ডা) পান করা উচিত।ঘুম থেকে জাগার পর একগ্লাস হালকা গরম পানি খেলেও অনেকের উপকার হয়।

নিয়মিত শরীরচর্চা

জীবন যাপনের পদ্ধতিকে যতোটা সম্ভব সক্রিয় করে তুলতে হবে। অর্থাৎ ব্যায়াম চর্চার অভ্যাস করতে হবে। গর্ভাবস্থার পুরোটা সময় অনেকেই শুয়ে বসে কাটিয়ে দেন। এটা উচিত নয়। এতে অনেক ধরনের সমস্যা শরীরে বাসা বাঁধে।

একজন গর্ভবতী মহিলা দৈনিক যদি ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন, তাহলে এই সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এছারাও সাতার কাটা, যোগাসন এগুলোও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সাহায্য করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় সব ব্যায়াম নিরাপদ নয় আবার সবার জন্য সব ব্যায়াম নয়। তাই ব্যায়াম শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

নিজের শরীরের প্রয়োজন বুঝুন

মল ত্যাগের জন্যে যথেষ্ট সময় দিন, বিশেষত সকালের নাস্তার পর এবং রাতের আহারের পর, এবং যদি পারেন তবে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে মল ত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলুন। কখনোই পায়খানা চেপে রাখবেন না।

মানসিক উত্তেজনা থেকে দূরে থাকুন

শুধু খাওয়া-দাওয়া নয়, মানুষের জীবনযাত্রা, মানসিক চাপ বা স্ট্রেসও পেট খারাপ, পেটকষা বা হজমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে৷ তাই প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷

প্রি-ন্যাটাল ভিটামিন

যদি আপনার প্রি-ন্যাটাল ভিটামিনে আয়রনের পরিমান বেশী থাকে তবে ডাক্তারের সাথে কথা বলে সাপ্লিমেন্ট পরিবর্তন করে দেখতে পারেন। (যদি আপনার এনেমিয়ার সমস্যা না থাকে)।

যদি উপরের উপায়গুল অবলম্বন করার পরও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার সমাধান না হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সঠিক কারণ শনাক্ত না করেই অনেক সময় মল নরম করার বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, সিরাপ কিংবা মলদ্বারের ভিতরে দেওয়ার ঔষুধ ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটা মোটেও উচিত নয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ