Call

কেরোসিন শিখা বলে মাটির প্রদীপে, ভাই বলে ডাক যদি দেব গলা টিপে, হেন কালে আকাশেতে উঠিলেন চাঁদা, কেরোসিন শিখা বলে- “এসো মোর দাদা।”

 ,

মানুষ ভেদে চরিত্রে পার্থক্য থাকলেও পৃথিবীর সব মানুষের চরিত্র কিছু বৈশিষ্ট্যে সাদৃশ্যপূর্ণ। মানব চরিত্রের তেমনি একটি বৈশিষ্ট্যকে কেরোসিন শিখার মাধ্যমে রূপায়ণ করা হয়েছে। অর্থঃ -বিত্ত, সামাজিক পদমর্যাদা ইত্যাদির স্বপ্নে বিভোর হয়ে কখনও কখনও নিজের অতি আপনজনকেও চিনতে পারে না। মানুষ যখন টাকা-পয়সা, পদমর্যাদা প্রভৃতি দিক থেকে সমাজে উচ্চ অবস্থান অর্জন করে তখন সে তার আপন মানুষজন আত্মীয় স্বজনকে অবহেলা করে। অবহেলাই কোনো কোনো সময় অস্বীকারে রূপ নেয়। মানুষ যখন চিন্তা করে তার দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সম্পর্ক রাখলে তার পদমর্যাদা নষ্ট হতে পারে তখন তার দরিদ্র আপনজনদের আর স্বীকৃতি দিতে চায় না। অথচ এই মানুষটিই আবার তার চেয়ে উচ্চ পদস্থ কারও তোষামোদ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। সেই উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তির সাথে সত্যিকার অর্থঃ ে কোনো সম্পর্ক না থাকলেও সে কাল্পনিক সম্পর্ক তৈরি করেই তা সবাইকে জানাতে চায়। সে মনে করে এতে সে সামাজিকভাবে আরও মর্যাদা পাবে, এবং অন্যরা তাকে আরও সমাদর করবে। এভাবে সে নিজেকে প্রচার করে গর্ববোধ করে। যেখানে নিজের দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনদের যে স্বীকার করতেও কুন্ঠাবোধ করে সেখানে দূরের একজন উচ্চ-পদস্থ ব্যক্তির সাথে সে জোর করে কাল্পনিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টায় ব্যস্ত থাকে। মূলত মানুষ নিজের চেয়ে অবস্থানে ছোটদের চরমভাবে অস্বীকার করে, আর বড়দের তোষামদ করে আপন করে নিতে চায়।

শিক্ষা: পদমর্যাদা ও সামাজিক অবস্থান মানুষকে অন্ধ করে দেয়। এর প্রলোভনে মানুষ নিজের আপন মানুষকে দূরে ঠেলে দিয়ে, দূরের মানুষকে আপন করার চেষ্টা করে। এতে করে সে তার নিজস্বতাকে হারিয়ে ফেলে, কিছুই অর্জন করতে পারে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

কেরোসিন শিখা বলে মাটির প্রদীপে,

‘ভাই বলে ডাক যদি দেব গলা টিপে।

হেনকালে গগনেতে উঠিলেন চাঁদা,

কেরোসিন শিখা বলে, ‘এস মোর দাদা।’

মূলভাব : কেরোসিন শিখা ও মাটির প্রদীপ উভয়ের দামে তারতম্য থাকলেও কাজ ও গুণ প্রায় এক। কারণ উভয়েই আপন সাধ্য অনুসারে আলো দান করে থাকে।

সম্প্রসারিত-ভাব : কেরোসিন শিখাও মাটির প্রদীপ দ’জনের কাজ কিন্তু একই, তবুও কেরোসিন শিখা উজ্জ্বল, পক্ষান্তরে মাটির প্রদীপের আলো ম্লান। তাই কেরোসিন শিখা নিজের উজ্জ্বল আলোকের গর্বে মাটির প্রদীপকে নিজের সগোত্র বলে স্বীকার করতে কুণ্ঠাবোধ করে। অথচ স্নিগ্ধ মধুর আলোকে দশদিক উজ্জ্বল করে আকাশে যখন চন্দ্র উদিত হয়, তখন তার সাথে আত্মিয়তার সম্পর্ক খুঁজে বের করতে কেরসিনের শিখা তৎপর হয়ে উঠে। তার এ ব্যবহার নীচতা ও হীনম্মন্যতার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। মানব সংসারেও এমন লোকের অভাব নেই যারা অনুন্নত দরিদ্র ও ক্ষমতাহীনস্বজনের সাথে সমপর্ক স্বীকার করতে লজ্জাবোধ করে। এরা আবার সমাজের মান্যগণ্য ও ক্ষমতাসীন লোকদের সাথে নিজেদের সম্পর্কের কথা প্রচার করে লোক সমক্ষে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপাদনের প্রয়াস পায়। এরা ঐশ্বর্য ও শক্তির তোষণকারী। প্রকৃত গুণী ব্যক্তি কদাচ এ ধরনের ব্যবহার করেন না। তারা অপরের কল্যাণে প্রকৃত সুখ পায়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ