Call

এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

 ,

বেঁচে থাকার তাগিদে অর্থঃ ের প্রয়োজন। কিন্তু সমাজের এক শ্রেণির মানুষ যাবতীয় অর্থঃ সম্পদ নিজেদের কুক্ষীগত করতে সদা সচেষ্ট। এই বিত্তবান শ্রেণির লোকেরা নিজেদের অঢেল ধন-সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও সম্পদের লোভ ত্যাগ করতে পারে না। তাদের এই বিকৃত লোভের শিকার হয় দরিদ্র ও অসহায় মানুষেরা। প্রাচীনকাল থেকেই এই ধারা প্রচলিত হয়ে আসছে। জমিদাররা যেমন বিপুল সম্পদের মালিক হয়েও সামান্য খাজনার জন্য দরিদ্র প্রজার সহায়-সম্বলটুকু কেড়ে নিতে কুণ্ঠিতবোধ করতো না, তেমনি বর্তমানেও ক্ষমতাপিপাসু একটা শ্রেণি নিজেদের জন্য একের পর এক সম্পদের ইমারত গড়ে তুলছে। আর এই সম্পদ আহরণের নেশায় মত্ত হয়ে তারা নিজেদের মানবতাকে বিসর্জন দিতে দ্বিধা করে না। তারা সমাজের দরিদ্র শ্রেণির মানুষদের অধিকারবঞ্চিত করে নিজেদের সম্পদের পাহাড় বানিয়ে চলে ক্রমাগত। কেননা তাদের আরো সম্পদ, আরো ভোগ-বিলাসিতার প্রয়োজন। বিত্তবানদের এই ধরণের বিকৃত অর্থঃ লিপ্সার কোনো সীমা নেই বরং দিনে দিনে তাদের লালসা বাড়তেই থাকে। অঢেল সম্পদের মালিক হয়েও, আরো পাওয়ার ইচ্ছা তাদেরকে অমানুষে পরিণত করে। নিজেদের সম্পদ আরো বাড়িয়ে তোলার নেশায় তারা ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ, সাদা-কালো কোনো কিছুই বাছ-বিচার করে দেখে না। কেউ তিনবেলা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে পারলেই খুশি, আবার কেউ হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারে না, আরো সম্পদের অভাবে সে কাতর। আরো সম্পদশালী হতে গিয়ে তারা সুদ, ঘুষ, চুরির মতো নানারকম দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। এমনকী অর্থঃ লিপ্সায় কাতর এই বিত্তবান লোকগুলো গরিবের মুখের অন্ন, মাথা গোঁজার নিরাপদ আশ্রয়, ন্যূনতম শিক্ষা প্রভৃতি মৌলিক অধিকারগুলো হরণ করে নিজেদের সম্পদের পাহাড় আকাশচুম্বী করে তোলে। আর এভাবেই সমাজে ধনী-দরিদ্র বৈষম্য বাড়তে থাকে। দরিদ্রের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে ধনীরা হয় আরো ধনী, অন্যদিকে যারা দরিদ্র তারা আরো বেশি দরিদ্র হয়ে পড়ে। জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় , অর্থঃ ের যোগান না দিতে পেরে তারা অনাহারে-অর্ধাহারে, বস্তির ঘুপচি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়।

শিক্ষা: এ পৃথিবীতে ধনীদের পাশাপাশি গরিবদেরও বাঁচার অধিকার আছে। পুঁজিবাদী বিত্তবানদের উচিত গরিবের সম্পদ আত্মসাৎ করে নিজেদের সম্পদ বৃদ্ধির নিলর্জ্জ মোহ পরিহার করা এবং তাদের দিকে সাহায্য, সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়া।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি

রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

মূলভাব : অর্থশালী ও সম্পদশালী ব্যক্তিরা যে কোনো পন্থায় বা কৌশলে আরও অর্থ-বিত্তের মালিক হতে চায়। তাদের অর্থ লাভের চাহিদা এবং সম্পদ লাভের আকাঙ্ক্ষার যেন শেষ নেই।

সম্প্রসারিত ভাব : জীবন সমস্যাসঙ্কুল ও সংকটময়। বেঁচে থাকার জন্যে মানুষকে সেই সমস্যা ও সংকটের মোকাবেলা করতে হয়। প্রয়োজনীয় অর্থ-সম্পদ ছাড়া এ সব সমস্যা ও সংকটের মোবাবেলা করা সম্ভব নয়। এজন্যে প্রত্যেকেরই অর্থ-বিত্তের দরকার আছে, যা দিয়ে তারা তাদের অভাব ও চাহিদা মিটাবে। কিন্তু সব মানুষই সমান অর্থ-বিত্তের মালিক নয়। সমাজে কেউ বিপুল অর্থ-সম্পদের অধিকারী, আবার কারো কোনো অর্থ-বিত্তই নেই। পার্থিব জীবনে এই সামাজিক ভেদাভেদ শারীরিক শক্তি, ক্ষমতা ও প্রভাবের পার্থক্যের কারণেই হয়েছে। যে কারণে কেউ ধনী, কেউ গরিব, কেউ সম্পদশালী, কেউ নিঃস্ব। বেঁচে থাকার সামান্য অবলম্বনটুকুও অনেকের নেই। সমাজে তারাই দুর্বল, অসহায়, দরিদ্র এবং অবহেলিত। ধনী ও বিত্তবান ব্যক্তিরা এসব দরিদ্র, দুর্বল মানুষকে কৌশলে ঠকিয়ে, বল প্রয়োগ করে অথবা প্রভাবিত করে শোষণ করে। প্রতারণা ও বাঞ্চনার মাধ্যমে দরিদ্রদের অর্থ-সম্পদ কুক্ষিগত করে ধনীরা অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। তারপরও অর্থ-বিত্তের প্রতি তাদের লোভের শেষ নেই। তাদের আকাঙ্ক্ষা অসীম, অভাব সীমাহীন আর চাহিদা বেপরোয়া। তাদের মনের ক্ষুধার নিবৃত্তি নেই। এ প্রকৃতির মানুষের সারাক্ষণের চিন্তা চাই-চাই-আরও চাই। যাদের অনেক আছে তারাই আরও বেশি চায়। আর এ চাওয়াকে পাওয়ায় পরিণত করত জুলুম-অত্যাচার, ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। অক্টোপাশের মত চারদিকে ঘিরে ধরে দরিদ্র মানুষের শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিতে তারা কিছুমাত্র দ্বিধা করে না। একটু মায়া-মমতা, একটু সহানুভূতি, একটু বিবেচনাবোধ শোষিতের জন্যে অবশিষ্ট থাকে না। কৃষিজীবী ও শ্রমজীবীরা যেন তাদের কাছে পণ্যের মতো, ভোগ করে উচ্ছিষ্টটুকু ফেলে দেয়। সম্পদ বাড়ানোর এমন দুর্দমনীয় নেশা কার্যকর করতে সত্য-মিথ্যা, ভালোমন্দ ইত্যাদি বিষয়কে দূরে ঠেলে বিত্ত ও বৈভবের মোহে তারা দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলে।

অনাহারক্লিষ্ট দরিদ্র মানুষ নিত্যদিন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের শিকার। তারা কষ্ট করে। দুঃখে তাদের জীবন গড়া। কিন্তু তারপরও ধনীদের বিত্ত-বৈভবের দিকে তারা লোভী দৃষ্টিতে তাকায় না। ’রাজা, জমিদার, মহাজনদের বিলাসবহুল জীবনের খোঁজ-খবর রাখে না। ভাঙা কুটিরে একবেলা আধপেটা খেয়ে হাসি-আনন্দে কাটিয়ে দেয় অসহায় মানুষ। অসৎ, অনৈতিক, অমানবিক কাজকর্মকে তারা ঘৃণা করে। কোনোরকমে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকার মধ্যেই তাদের সুখ এবং শান্তি। অথচ এই নিরিবিলি অভাব-অনটনের শান্তিতেও বাধা সৃষ্টি করে ধনিক শ্রেণী। তাদের লোভী দৃষ্টি গ্রাস করে গরিবের ভিটে মাটি, সামান্য জমিজিরাত। এভাবেই ‘রাজার হস্ত’ অর্থাৎ বিত্তশালীরা ’করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি’। কৌশলে চুরি করে, শোষণ করেই যাদের ভুরি ভুরি আছে তারা আরও ধনী হয়।

মন্তব্য : সারা পৃথিবী দুঃখী মানুষের আহাজারি আর দীর্ঘনিঃশ্বাসে ভরে উঠেছে। শ্রেণীবিভক্ত সমাজ ব্যবস্থায় নির্মম শিকার হয়ে শোষিত-বঞ্চিত মানুষ শুধুই কাঁদে আর অভিশাপ দেয়। কিন্তু আর কতদিন? কতদিন ধনী আরও ধনী হবে, গরিব ক্রমশ নিঃস্ব হতে থাকবে? পেশীশক্তি আর এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শিকড় উপড়ে ফেলার সময় এখনই। মানুষে মানুষে অর্থনৈতিক সমতা বিধানের সুযোগ সৃষ্টি করা ধনীদেরই নৈতিক দায়িত্ব।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Sumya Akter

Call

এ জগতে হায় সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি

রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

পৃথিবীতে কাহারো চাওয়া-পাওয়ার শেষ নাই। প্রচুর ধন-সম্পত্তি আছে এমন লোক আরো ধন-সম্পত্তি পাইতে চায়, যাহা আছে তাহাতে তাহার তৃপ্তি নাই। চাই আরও। বিপুল প্রভাব-প্রতিপত্তি সম্পন্ন লোক কিন্তু ইহাতে তাহার সান্ত্বনা নাই। সে চায় আরও বেশি প্রভাব, আরো বেশী প্রতাপ যাহাতে সে যখন যাহা ইচ্ছা, তাহা করিতে পারে।

সর্বক্ষেত্রে আরও বেশি পাইবার সীমাহীন লোভ মানুষকে পাইয়া বসে কেন? কারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার শেষ নাই। যেহেতু তাহারা যত চায়, তত পায় সেহেতু তাহাদের পাওয়ার দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষা ক্রমে বাড়িতে থাকে এবং বাড়িতে বাড়িতে শেষে এমন এক পর্যায়ে গিয়া পৌঁছে যে শুধু নেওয়া ছাড়া সে আর কিছুই দেখে না বা বুঝে না এবং এই নেওয়ার জন্য যে কোন রকম অন্যায় কাজ করিতে সে দ্বিধাবোধ করে না। তাহার কৃতকর্মের ভালমন্দ বিচার করার অবসর তাহার হয় না। তাহার মনুষ্যত্ব লোপ পাইয়া যায় এবং হিংস্র পশু তাহার ভিতর বাসা বাঁধে। ফলে নিরাশ্রয় গরীবের শেষ সম্বল আশ্রয়টুকু পর্যন্ত সে কাড়িয়া নিতে দ্বিধাবোধ করে না, ছলে বলে কৌশলে সকলকে অধিকার সঞ্চিত করিতে চায়। তাই লোভীর অতিলোভে বিমুঢ় হইয়া কবি গাহিয়া উঠেন-

এ জগতে হায় সে-ই বেশী চায় আছে যার ভুরিভুরি

রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙ্গালের ধন চুরি।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ