স্বপ্নদোষ না হওয়া আর প্রসাবের সাথে পাতলা বীর্য বের হওয়ার কারন কি?
আমি টানা ৪/৫ বছর হস্তমৈথুন করেছি, কিন্তু এরপর টানা ৭ মাস হস্তমৈথুন থেকে বিরত ছিলাম, এই ৭ মাসে আমার মাত্র ৪ বার স্বপ্নদোষ হয়েছে। ৭ মাস পর মাঝে আবার কয়েকদিন হস্তমৈথুন করার পর এখন আবার টানা ৪ মাস হস্তমৈথুন থেকে বিরত আছি কিন্তু এই ৪ মাসে আমার একবারও স্বপ্নদোষ হয় নাই, কিন্তু কয়েকদিন পর পরই প্রসাবের সাথে পাতলা পানির মত বীর্য বের হয়? স্বপ্নদোষ না হওয়া আর প্রসাবের সাথে পাতলা বীর্য বের হওয়ার কারন কি? আমার বর্তমান বয়স ২৫ বছর।

প্রসাবের সাথে পাতলা বীর্য বের হওয়ার প্রধান কারন হচ্ছে, উত্তেজনার বশিভুত হয়ে হস্তমৈথুন করে বীর্যপাত ঘটানো।
সাধারণত মাসে ৩-৪ বার স্বপ্নদোষ হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে কারো যদি একেবারেই স্বপ্নদোষ না হয় তবে তার শারীরিক কোনো সমস্যা আছে বলে ধরে নেয়া যেতে পারে।
তবে স্বপ্নদোষ হওয়া যেমন স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া, তেমনি না হওয়াও একদমই স্বাভাবিক বিষয়। কেননা এটি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।
কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত হস্তমৈথুন করেন বা প্রসাবের সাথে পাতলা বীর্য বের হয়ে যায় এক্ষেত্রে আপনার স্বপ্নদোষ না হওয়াটাই স্বাভাবিক। কেননা আপনার বীর্য থলিতে পূর্ণ হতে পাচ্ছে না।
বিস্তারিত জানতে এই বিষয়ের উপর অভিজ্ঞ এবং রেজিস্টার্ড একজন হোমিও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।

অন্ডথলিতে অবিরাম নতুন শুক্রাণু তৈরি হচ্ছে, একই সাথে আয়ু শেষে পুরানা শুক্রাণু মারা যাচ্ছে। এই নষ্ট মৃতু শুক্রাণু পরিত্যাগ করার জন্যই স্বপ্নদোষ ঘটে।
কিন্তু শারীরিক বির্যপাত একটি জটিল প্রক্রিয়া। জননতন্ত্রের গঠনে ক্ষেপননালী নামে একটি নালিকা আছে। এই ক্ষেপননালী মূলত অন্ডথলির শুক্রাণুকে একটি প্রেসারজনিত চাপে ছুড়ে বের করে দেয়। আর এই প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষেপননালী সহ পেনিসকে শক্ত হতে হয়। ফলে দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বপ্ন দোষের সময় লিঙ্গ উত্তেজিত হয় যাতে ক্ষেপননালী সহজে বীর্যপাতের শক্তি অর্জন করতে পারে।
কিন্তু বহুদিন যাবত হস্তমৈথুনের প্রভাবে লিঙ্গের উথান ক্ষমতা অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে।
আসলে পেনিসের ভেতর রক্তজালক নামক এক প্রকার ফাইব্রিন জালিকা থাকে যা রক্তপূর্ণ হলে লিঙ্গ শক্ত হয়। কিন্তু হস্তমৈথুনের অত্যাচারে এই জালিকাগুলো অনেকটা শক্তি হারিয়েছে। যেকারনে বীর্যপাতের সময় লিঙ্গ খুব একটা উত্তেজিত হয়না, এতে ক্ষেপননালী শক্ত হতেও পারেনা। ফলে নষ্ট বীর্য চাপে ছুড়ে না যেয়ে গড়িয়ে গড়িতে বের হয়। যেহেতু গড়িয়ে বের হয় তাই উত্তেজিতও আসেনা, বুঝতেও পারেন না। প্রবল প্রসাবের চাপ, একটু চাপ দিলে, বা টয়লেটে পায়খানা জটিল হলে যদি চাপ দেন তখন বীর্য গড়িয়ে প্রসাবের সাথে বের হয়। এই কারনে স্বপ্ন দোষ ঘটেনা।
অন্যদিকে আপনার অন্ড থলির এপিথেলিয়াম জার্মিনাল জনন কোষগুলোও হস্তমৈথুনের জন্য অপরিণত বিভাজনের জন্য এখন ঠিক মত বিভাজিত হয়না বলে সবল শুক্রাণু গঠিত হয়না, শুক্রাণু কিন্তু ঠিকই হয় কিন্তু তা দুর্বল পুষ্টিহীন ও অতি তরল ইস্ট্রজেনের মিশ্রনে থাকে ফলে পাতলা তরল হয়। যা গড়িয়ে বের হওয়ার উপযুক্ত।
মুলত এই সকল জটিল একাধিক প্রক্রিয়ার জন্য আপনার এই সমস্যা।
আমার জানা মতে এই সমস্যা আর কখনো পুরাপুরি ঠিক হবেনা।
এখন যদি আপনি কঠিন সাধনা করেন, হস্তমৈথুন একেবারেই পরিত্যাগ করেন আর পুষ্টিকর খাদ্যখান তবে কিছুটা সতেজতা ফিরে পাবেন। মনে হবে অনেকটাই ভাল হয়ে গেছে। তবে তা আগের মত পুরাটা ভাল হয়না।
যতই চিকিতসা নিন, বিশেষত হারবালের রমরমা প্রচারে ফিদা হয়ে হারবাল চিকিতসা নিন কাজ হবেনা। এসবে বরঙ আরও ক্ষতি হবে।
তাহলে কি করবেন?
আসলে এগুলো নিয়া চিন্তা বাদ দিন সর্ব প্রথম, নিজেকে কনফিডেন্ট করুন আপনি সুপুরুষ।
পেয়াজ রসুন, কাচা ছোলা এসব খাবেন না , কাচা ছোলা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে খান , অসুবিধা নাই কিন্তু যৌনতা বাড়বে এই ভেবে খাবেন না।
পেয়াজ খাবেন মূলত তরকারীতে রান্না করে। একটি আইটেম বলি, দুটো পেয়াজ, ৪-৫ ক রসুন, কয়েকটা কাচা মরিচ তেল দিয়া ভাজুন, তাতে একটি ডিম ভেঙ্গে দিন মাঝ খানে। তারপর খান, এভাবে পেয়াজ খান, কিন্তু অতিরিক্ত নয়, কাচা নয়। কবিরাজী পথ পরিহার করুন।
ভুলেও লিঙ্গ মালিশ করবেন না, মোটে হাতই দেবেন না, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
ফল, শাক সবজি খান, ভিটামিন এ এবং ই জাতীয় খাবার খান।
মধু কলা এগুলো আগে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে খান, কিন্তু অভ্যাস না থাকলে যৌনতা ফিরে পেতে খাওয়ার দরকার নাই।
আমলকি, হরিতিকী, বহেরা ভিজিয়ে পানি খান, কাচা আমলকি পেলেই খাবেন।
কড়া ভাজি এবং আদা এড়িয়ে চলুন।
এভাবে নর্মাল জীবন যাপন করুন, এমনিতেই সতেজ হয়ে উঠবেন।
আর দাম্পত্য নিয়া মোটেও ভাববেন না, স্ত্রীসহ বাসের সময় শুধু শক্তিশালী যৌনতার উপর নির্ভর করেনা, গল্প, ফরপ্লে ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। আর একান্তই না পারিলে সেই সময় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ নিবেন। মনে রাখবেন ঐ ঔষধ গুলো ভাল কাজ করে কিন্তু তা কিন্তু আপনাকে সুস্থ্য করে দেয়না, জাস্ট ঐ সময়ে বীর্যপাত বন্ধ রেখে টাইমকে বাড়াই, তাই ভাল হতে আগেই এসব ওষধ খোজা শুরু কইরেন না, এতে হিতে বিপরীত হবে।
সর্বপরী আপনি ইবনে সিনা পরিচালিত হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।