আপনার মায়ের সাথে আপনার উক্ত কর্মকাণ্ডে দুটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে। এক. মিথ্যা বলা। দুই. প্রতারণা করা। আর স্বাভাবিক অবস্থায় যার কোনটিই ইসলামে বৈধ নয়। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا.
হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সঠিক কথা বল। -সূরা আহযাব: আয়াত নং ৭০
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেছেন, ...আর যে মিথ্যা তারা বলে তার বিনিময়ে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।-সুরা বাকারা, আয়াত : ১০।
হাদীস শরীফের ভাষ্যানুযায়ী মিথ্যা বলা মুনাফিকী। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি, যখন সে কথা বলে মিথ্যা বলে...। –সহীহ বুখারী: হাদীস-২৬৮২; সহীহ মুসলিম: হাদীস-৫৯। হাদীসটির আরবী পাঠ নিম্নরূপ-
عن أبي هريرة أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال: آية المنافق ثلاث إذا حدث كذب وإذا وعد أخلف وإذا ائتمن خان.
অন্য একটি হাদিসে তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা মিথ্যা থেকে দূরে থাকো, কারণ মিথ্যা ঈমানের পরিপন্থী’।-আলমুসান্নাফ, ইবনে আবি শায়বা, হাদিস-২৬১১৫।
আরো একটি হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিনের মধ্যে স্বভাবগত বিভিন্ন দোষত্রুটি থাকতে পারে। তবে সে মিথ্যুক ও প্রতারক হতে পারে না। -আলমুসান্নাফ, ইবনে আবি শায়বা, হাদিস-৩০৯৭৫।
অন্যদিকে প্রতারণা সম্পর্কে রাসূল সা. ইরশাদ করেন, যে আমাদের ধোঁকা দেয়; সে আমাদের দলভুক্ত নয়। - সহীহ মুসলিম: হাদীস- ১০১; সুনানে ইবনে মাযা: হাদীস-২২২৪।
হাদীসটির আরবী পাঠ নিম্নরূপ-
عن أبي هريرة: أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال...ومن غشنا فليس منا.
উল্লেখ, ইসলামে মিথ্যা বলা ও ধোঁকা দেওয়া যে অনুমদিত ক্ষেত্রগুলো রয়েছে তার কোনটিই আপনার মাঝে পাওয়া যায়নি। হাদীসে এসেছে- উম্মে কুলসুম রাযিআল্লাহু আনহা বলেন, তাঁকে মানুষের কথাবার্তায় মিথ্যা বলার অনুমতি দিতে শুনিনি, তিন ক্ষেত্র ছাড়া: [১] যুদ্ধকালে [২] লোকদের ঝগড়া মিটাবার ক্ষেত্রে ও [৩] স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের [খুশি করার নিমিত্তে] কথোপকথনে। -সহীহ মুসলিম: হাদীস-২৬০৫
অন্য হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যুদ্ধ হলো প্রতারণা (কৌশল)। -আল মাতালিবুল আলিআ: হাদীস-২০৮৯।